ভোটাধিকার প্রয়োগ করে স্বৈরাচারের পতন করতে হবে: ড. কামাল
বাংলাদেশের জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, সরকার জনগণের ভোটাধিকার ছিনিয়ে নেয়ার সকল আয়োজন করছে। তবে জনগণ ঐক্যবদ্ধ হলে সব বাধা উপেক্ষা করে অধিকার আদায় করা সম্ভব। যেমনটা একাত্তরে আমরা করেছি। তাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভোট কেন্দ্রে যেতে হবে। ভোট দিতে হবে। নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে এই স্বৈরাচারকে পতন করতে হবে।
আজ (সোমবার) বিকেলে পল্টনে ঐক্যফ্রন্টের অস্থায়ী কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। ড.কামাল হোসেন বলেন, জনগণ আজকে পরিবর্তনের জন্য ঐক্যবদ্ধ। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, সেনাবাহিনী অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কার্যকর ভূমিকা রাখবে। জনগণ নির্ভয়ে যাতে ভোট দিতে পারে সে পরিবেশ তারা সৃষ্টি করবে।
ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘যেসব জায়গায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে, সেসব জায়গাতে আবার নতুন প্রার্থীদের সুযোগ দেওয়া উচিত যাতে নির্বাচনে অংশ নিতে পারে।’ এ ছাড়া সেনাবাহিনী মোতায়েনের পরও হামলার ঘটনা অপ্রত্যাশিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইনশাআল্লাহ শেষ পর্যন্ত আমরা নির্বাচনের মাঠে থাকব।
এ সময় বিএনপির মহাসচিব ও ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, 'সরকার ও নির্বাচন কমিশন ক্রমশই নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করছে। এখনো আমাদের প্রার্থীদের ওপর হামলা করছে।’
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মাহমুদুর রহমান মান্না। এতে সারাদেশে ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপির প্রার্থী এবং নেতাকর্মীদের উপর হামলা ও গ্রেফতারের চিত্র তুলে ধরা হয়।
এ আগে আজ সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ আয়োজিত ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও পেশাজীবীদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ‘আজকে যারা আমরা ভোট দেওয়ার জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। আমাদের যারা সেই ভোট অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে চায়। এরা স্বাধীনতার শত্রু নাকি। এরা হলো ইয়াহিয়া খানের উত্তরসূরি।’
ঐক্যফ্রন্টের এই নেতা বলেন, ‘আমাদের ভোট দেওয়ার ব্যাপারে স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরেও আন্দোলন করে যেতে হবে- এর চেয়ে লজ্জার বিষয় কী হতে পারে। গণতান্ত্রিক পরিবেশে সবাই মিলে আমরা হাসতে হাসতে গিয়ে ভোটটা দেব। কিন্তু সেখানে আজকে এই ভোটকে কেন্দ্র করে পদে পদে বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে। তাই ভোট দিয়ে স্বাধীনতাকে রক্ষা করতে হবে।
মুক্তিযোদ্ধাদের অনুসারী হিসেবে পুলিশকে নিরীহ মানুষের ওপর হয়রানি না করার আহ্বান জানিয়ে ড. কামাল ভোটারদের প্রতি অনুরোধ করেন, ৩০ তারিখ সবাই শক্ত মনোবল নিয়ে ভোট দিতে যাবেন।
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘যারা পুলিশের ওপর নির্ভর করে তারা কখনো রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী না। একটা দল কতটা রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হলে সিনেমার নায়ক-নায়িকাদের প্রচারে নামায়।’
ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, জনগণ এ স্বৈরাচারের পতন দেখতে চায়। এবারে ভোটের লড়াইয়ে জিততে হবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন সেনাবাহিনী নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবে।
ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপে দেওয়া একটি প্রতিশ্রুতিও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রক্ষা করেননি বলে মন্তব্য করেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেন, নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্ট জয়ী হবেই। জনগণ বসে আছে, ভোটের দিন ফাইনাল খেলা হবে। বাংলার মানুষ গত ১০ বছরের দুঃশাসনের উত্তর দেওয়ার অপেক্ষায় আছে। এবার নৌকার ভরাডুবি হয়ে যাবে।#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/২৪
খবরসহ আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সব লেখা ফেসবুকে পেতে এখানে ক্লিক করুন এবং নোটিফিকেশনের জন্য লাইক দিন