'হাসপাতালে পানি, স্যানিটেশন ও পরিচ্ছন্নতায় পিছিয়ে বাংলাদেশ'
বাংলাদেশের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে সুপেয় পানি, স্যানিটেশন এবং পরিচ্ছন্নতার মান সন্তোষজনক নয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ও জাতিসংঘ শিশু তহবিলের (ইউনিসেফ)-এর যৌথ পরিবীক্ষণ কর্মসূচির (জেএমপি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ পেয়েছে।
আজ (বুধবার) প্রকাশিত জেএমপির এবারের প্রতিবেদনের মূল বিষয় হাসপাতালে পানি-স্যানিটেশন ও পরিচ্ছন্নতার অবস্থা। তবে প্রতিবেদন তৈরির সময়ে বেশির ভাগ দেশ পর্যাপ্ত তথ্য সরবরাহ করেনি। প্রতিবেদনের অনেক সূচক তৈরিতে বাংলাদেশের কাছেও পর্যাপ্ত তথ্য মেলেনি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হাসপাতালে সুপেয় পানি সরবরাহের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বৈশ্বিক, এমনকি দক্ষিণ এশিয়ার গড় মানের চেয়ে পিছিয়ে। আর স্যানিটেশনে কিছু অগ্রগতি থাকলেও হাসপাতাল ও কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে স্যানিটেশনের অবস্থা আশানুরূপ নয়। হাসপাতালে পরিচ্ছন্নতাও বাংলাদেশে একটি বড় উদ্বেগের বিষয়। এসব প্রতিষ্ঠানের বর্জ্য ব্যবস্থাপনাও সঠিকভাবে করা হয় না।
সরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিকের তুলনায় বেসরকারি হাসপাতালে সুপেয় পানির সুবিধা বেশি। ১২ শতাংশ সরকারি হাসপাতাল ও সেবাকেন্দ্রে সুপেয় পানির সরবরাহ নেই। বেসরকারি খাতে এর পরিমাণ অর্ধেক।
পানিতে পিছিয়ে থাকলেও বাংলাদেশের হাসপাতালগুলো স্যানিটেশনে বৈশ্বিক মানদণ্ডের চেয়ে এগিয়ে। বিশ্বে ২১ শতাংশ হাসপাতালে পর্যাপ্ত স্যানিটেশন সুবিধা নেই। বাংলাদেশে এই হার ৭ শতাংশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ৯৯ শতাংশ কমিউনিটি ক্লিনিকে শৌচাগার আছে। তবে এর মধ্যে ২৮ শতাংশই ব্যবহার উপযোগী নয়। আবার হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসক ও কর্মীদের শৌচাগার পরিচ্ছন্ন থাকলেও সাধারণের ব্যবহারকারীদের শৌচাগার বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অপরিচ্ছন্ন থাকে।
আবার বৈশ্বিকভাবে ১৪ শতাংশ হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সীমিত আকারে পানির সুবিধা আছে। বাংলাদেশে এই সুবিধা আছে ১৩ শতাংশ কেন্দ্রে। বৈশ্বিকভাবে ৭৪ শতাংশ হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মধ্যেই নিরাপদ পানির সংস্থান আছে। বাংলাদেশে এই সুবিধা ৭০ শতাংশ। আর দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ৮৭ শতাংশ হাসপাতালে এ সুবিধা আছে।
এ প্রসঙ্গে জনস্বাস্থ্য আন্দেলনের-এর চেয়ারম্যান জাকির হোসেন রেডিও তেহরানকে বলেন, সরকার স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে হাসপাতাল এবং ক্লিনিক নির্মাণ করছে; দামী দামী যন্ত্রপাতি কিনছে, লোকবল নিয়োগ দিচ্ছে। কিন্তু সেখানে কাজ ঠিকঠাক মতো হচ্ছ কীনা তা দেখার জন্য মনিটরিং করা এবং ব্যবস্থাপনা যথাযথ হওয়া দরকার।
ওদিকে, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের হাসপাতালগুলোর অবস্থা করুণ বলে বর্ণনা করেছে জেএমপি প্রতিবেদন। বাংলাদেশের হাসপাতালগুলোর মধ্যে ১১ শতাংশের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সুবিধা আছে। ভারতের ৭৬ শতাংশ, ভুটানে ৮৬ ও শ্রীলঙ্কার ২৭ শতাংশ হাসপাতালে এ সুবিধা আছে।#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/৩