‘সাহিত্য হচ্ছে জীবনের প্রতিচ্ছবি, কবিতায় রয়েছে প্রচণ্ড শক্তি ও হিকমাহ’
(last modified Sat, 18 May 2019 06:27:49 GMT )
মে ১৮, ২০১৯ ১২:২৭ Asia/Dhaka
  • প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন ড. কাজেম কাহদুয়ী
    প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন ড. কাজেম কাহদুয়ী

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্সি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ইরানী ভিজিটিং প্রফেসর এবং ফার্সি ভাষায় নজরুল গবেষক ড. কাজেম কাহদুয়ী বলেছেন, ‘সাহিত্য হচ্ছে জীবনের প্রতিচ্ছবি আর কবিতার মধ্যে রয়েছে প্রচণ্ড এক শক্তি ও হিকমাহ।' গতকাল লালকুঠি সাহিত্য পরিষদ-এর উদ্যেগে ‘সাহিত্য সংস্কৃতিতে রোজা ও ঈদ’ শীর্ষক আলোচনা ও কবিতা পাঠের আসরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

ড. কাজেম কাহদুয়ী আরো বলেন, “রোজা আত্মশুদ্ধির মাস, পঙ্কিলতাকে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে পরিশুদ্ধ করার মাস। আমাদের চোখ, মুখ, হাত, পা, শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে ভ্রষ্টতা থেকে পরিশুদ্ধ করার মাস। শুদ্ধাচরণের প্রশিক্ষণের মাস। শয়তানকে বন্দি করে রাখা হয় এ মাসে। ফলে শয়তান প্ররোচনা দিয়ে ক্ষতি করতে পারে না মানুষের শুদ্ধাচরণের প্রশিক্ষণে। এই মাস দোজখের আগুন থেকে মানুষকে রক্ষা করে থাকে।”

তিনি বলেন, “আমি আপনাদের জাতীয় কবি নজরুলের গবেষক। নজরুল ইসলামের আধ্যত্মিক চেতনার সাথে ইরানের কবি রুমী ও সাদীর সামঞ্জস্য রয়েছে। মাহে রমজান ও ঈদ ফার্সি সাহিত্যকেও প্রভাবিত করে। কেননা আমাদের বিশ্বাসী আত্মাগুলো ধর্মবিশ্বাস দ্বারাই আলোকিত হয়ে থাকে। আর বিশ্বাসী রচয়িতা মানেই তিনি সেই বিশ্বাসের আলো দ্বারা প্রভাবিত হন।”

বক্তব্য রাখেন সাইয়েদ মাহদী হোসাইনী ফায়েক

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকাস্থ ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কালচারাল কাউন্সিলর সাইয়েদ মাহদী হোসাইনী ফায়েক বলেন, “কবিতার অনুষ্ঠানে মানুষের চিন্তার বিকাশ ঘটে। সাহিত্যের অনুষ্ঠান মানেই এখানে সমবেত হন সমাজের কিছু নির্বাচিত জ্ঞানী মানুষ। এই ধরনের অনুষ্ঠানের মহত্ব, বড়ত্ব ও গুরুত্ব অনেক। কবিতা রুখতে পারে অনাচার। অত্যাচার শোষণ নির্যাতন। কবিতা ও সাহিত্য চর্চা মানুষের চিন্তার জগতকে পরিশুদ্ধ করে। যেমনিভাবে রোজা আমাদের ঈমানকে পরিশুদ্ধ করে। বিশুদ্ধ সাহিত্য চিন্তার জগতকে পরিশুদ্ধ করে। আপনাদের এ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পেরে আমি আনন্দিত।”

মুনাজাত পরিচালনা করেন আহসানুল হাদী

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্সি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও লালকুঠি সাহিত্য পরিষদ সভাপতি আহসানুল হাদীর সভাপতিত্বে এবং পরিষদের সেক্রেটারী জেনারেল কবি আমিন আল আসাদের সঞ্চালনায় উক্ত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, বাংলা কবিতায় বৈজ্ঞানিক উপমা উৎপ্রেক্ষার সফল রূপকার রসায়নবিদ কবি হাসান আলীম, শেকড় সন্ধানী ইতিহাসবিদ ও বাংলার ঐতিহ্যবাহী পুঁথি পাঠের নবপ্রচলনকারী লেখক গবেষক আশরাফুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্সি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও কবি ড. আবু মুসা মুহাম্মদ আরিফ বিল্লাহ, সামাজিক সংগঠন ইউথ ডেভেলপমেন্ট ফোরাম-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি জনাব আশিকুল ইসলাম চপল, কণ্ঠশিল্পী ক্বারী মাওলানা হাবিবুর রহমান।

কবি হাসান আলীম

কবিতা পাঠে অংশ নেন কবি তাজ ইসলাম, কবি হাসনাইন ইকবাল, কবি আমিন আল আসাদ, কবি রহমান মাজিদ, কবি ও মর্সিয়া লেখক শাহনওয়াজ তাবিব, কবি প্রহরী মনিরুজ্জামান, কবি সাকিনা খান, মুক্তিযোদ্ধা কবি মোহাম্মদ রফিক মিয়া, কবি হুমায়ুন কবির, কবি আলমগীর হোসেন জোয়ার্দার, কবি মুহাম্মদ মাসুদ এবং কবি জয়নাল আবেদিন।

বক্তব্য রাখেন আশরাফুল ইসলাম

ইফতারের পূর্বে সভাপতির দুয়া ও মুনাজাতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ হয়। ইফতার ও মাগরিবের নামাজের পর আমন্ত্রিত বিদেশি মেহমানদের সাথে কবি সাহিত্যিকদের এক জমপেশ আড্ডা জমে উঠে। সে আড্ডায় উঠে আসে শিল্প-সাহিত্য সংস্কৃতি, ধর্ম, সমাজবাস্তবতা, ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি, বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিতে ফার্সি ভাষার প্রভাব, রবীন্দ্র, নজরুল, ফররুখ, সাদী, হাফিজ প্রভৃতি প্রসঙ্গ ওঠে। এছাড়া ইরান বাংলাদেশের মানুষের জীবন ও সংস্কৃতির মিল অমিলগুলোও উঠে আসে।

সঞ্চালক আমিন আল আসাদ

ইতিহাসবিদ আশরাফুল ইসলাম বাংলা ভাষায় ব্যাবহৃত ফার্সি শব্দগুলো একে একে তুলে ধরেন এবং ড. কাজেম কাহদুয়ী ও ইরান কালচারাল কাউন্সিলর এ বিষয়ে সম্মতিসূচক বক্তব্য তুলে ধরেন। #

পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/১৮

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ