কবি নজরুল অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার বার্তা দিয়েছেন: হানিফ
(last modified Sat, 25 May 2019 06:44:45 GMT )
মে ২৫, ২০১৯ ১২:৪৪ Asia/Dhaka
  • মাহবুব উল আলম হানিফ
    মাহবুব উল আলম হানিফ

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২০তম জন্মবার্ষিকী পালিত হচ্ছে। এবার জন্মবার্ষিকী উদযাপনের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘নজরুল-চেতনায় বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’।

আজ (শনিবার) সকাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে কবির মাজারে ফুল দিয়ে সম্মান জানান সর্বস্তরের মানুষ। এছাড়া মাজার জিয়ারতের আয়োজন করেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন।

কবির মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘কবি কাজী নজরুল ইসলাম সব সময় তার লেখনির মধ্যদিয়ে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার বার্তা দিয়েছেন। তিনি সব সময় কুসংস্কার এবং ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। কাজী নজরুল ইসলামের চেতনাকে ধারণ করেই আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে এগিয়ে নিয়েছি।’

কবি নজরুল ইসলামের মাজারে আওয়ামী লীগের শ্রদ্ধা

তিনি বলেন, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর অনেক মিল। দু’জনেই বাঙালির মুক্তির জন্য সারা জীবন সংগ্রাম করে গেছেন।

হানিফ বলেন, কাজী নজরুল ইসলাম ও বঙ্গবন্ধু দুজনেই ছিলেন পরম আশাবাদী মানুষ। বাঙালির মুক্তি সংগ্রাম ও স্বাধীনতা নিয়ে এদের মত করে আর কেউ স্বপ্ন দেখেনি। সেই স্বপ্নকে কালি ও কলমের মাধ্যমে কবিতায় রূপ দিয়েছে নজরুল, আর বঙ্গবন্ধু করেছেন বাস্তব।

নজরুলকে অসাম্প্রদায়িক চেতনার কবি আখ্যা দিয়ে হানিফ বলেন, নজরুল সাম্যের কবি। তিনি অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলা চেয়েছিলেন, যে কারণে তার পাঠ এখনো প্রাসঙ্গিক। এই দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে নজরুলের চিন্তাকে কাজে লাগাতে হবে।

বিএনপি নেতাদের শ্রদ্ধা

কবির সমাধিস্থলে শ্রদ্ধা জানাতে এসে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম বলেন, “সত্যিকার অর্থে দেশের এখন যে অবস্থা, তাতে যেমনিভাবে কাজী নজরুল ইসলাম ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের সময় ক্ষেপে উঠেছিলেন,  যেমনিভাবে ৭১ সালে ২৬শে মার্চ শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ক্ষেপে উঠেছিলেন, আজকেও ঠিক তেমনিভাবে ক্ষেপে ওঠার একটা সময় এসেছে। সারাদেশ ও জাতি অপেক্ষা করছে। কারণ আজকে অত্যাচার-নিপীড়ন যে পর্যায়ে গেছে, প্রতিটা মুহূর্তেই আমাদের কাজী নজরুল ইসলামকে মনে হয়। কাজী নজরুল ইসলাম শুধুমাত্র দেশের কবি না, সারাবিশ্বের কবি। যেখানেই নিপীড়ন-নির্যাতন হবে, সেখানেই মানুষ কাজী নজরুল ইসলামকে খুঁজবে। আজকে আমার মনে হয় অনেকটা বন্দি কারাগারে অবস্থান করছি। এই অবস্থায় আমাদের আবার কবির গান-কবিতা নিয়ে জনগণের পাশে যেতে হবে। আজকের দিনে এটাই হোক আমাদের কাম্য।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি আখতারুজ্জামান বলেন, নজরুল স্বদেশের মুক্তি প্রত্যাশা করতেন। লেখনীর মাধ্যমে তিনি ঔপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে সমগ্র ভারতের জনগোষ্ঠীকে জাগ্রত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি সচেতনভাবে হিন্দু-মুসলিমের মধ্যে সম্প্রদায় নিরপেক্ষ সম্প্রীতিও প্রত্যাশা করেছেন।

কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর সমাধিস্থলে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছে- বাংলা একাডেমি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থী, জাতীয় কবিতা পরিষদ, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, গণগ্রন্থাগার অধিদফতর, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, জাসাস, বাসদ, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি ও শিল্পকলা অ্যাকাডেমিসহ বিভিন্ন স্তরের সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন।

কবি নজরুল ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোলের জামুরিয়া থানার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মেছিলেন। তার ডাক নাম ‘দুখু মিয়া’। পিতার নাম কাজী ফকির আহমেদ ও মাতা জাহেদা খাতুন। মুলত বিদ্রোহী হলেও নজরুল ছিলেন চির তারুণ্য ও প্রেমের কবি। তার মধ্যে একই সঙ্গে দ্রোহ ও প্রেমের এক অপূর্ব সমন্বয় ঘটেছিল।#

পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/২৫

ট্যাগ