ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত ব্যক্তির পরিবার পাবে ১ লাখ টাকা: প্রতিক্রিয়া বিশ্লেষকের
গত রোববার রাতে সিলেট থেকে ঢাকাগামী উপবন এক্সপ্রেস কুলাউড়ায় দুর্ঘটনাকবলিত হবার তিনদিন পর আজ দুপুরে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন দুর্ঘটনায় আহতদের দেখতে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে ঘোষণা দিয়েছেন, তদন্তে কারও গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ সময় তিনি নিহত ব্যক্তিদের প্রত্যেকের পরিবারকে ১ লাখ টাকা করে এবং আহত ব্যক্তিদের ১০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেবারও প্রতিশ্রুতি দেন।
উল্লেখ্য, ১৮৯০ সালে ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক প্রবর্তিত এবং ১৯৪৩ সালে পাকিস্তান সরকার কর্তৃক সংশোধিত রেলওয়ে আইনে বলা হয়েছে, রেল কর্তৃপক্ষের কারণে ট্রেন দুর্ঘটনায় কোনো যাত্রীর প্রাণহানি কিংবা আহত হলে অথবা যাত্রীর কর্মক্ষমতা নষ্ট হলে এর জন্য ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। এমনকি যাত্রীর সঙ্গে থাকা ব্যক্তি এবং মালামালের জন্যও ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আইনে সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ ১০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক রেডিও তেহরানকে বলেন, বর্তমান অবস্থা বিবেচনা করে দুর্ঘটনায় পূরণের পরিমাণ এখন দশ লক্ষ টাকাও কম হয়ে যায়। এ সময় তিনি দূর্ঘটনারোধে রেল পরিচালনায় আরো দায়িত্বশীল হওয়া এবং রেলকে আধুনিকায়নের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
গত রোববার রাত পৌনে ১২টার দিকে সিলেট থেকে ঢাকাগামী উপবন এক্সপ্রেস বরমচালের বড়ছড়া সেতু এলাকা পার হওয়ার সময় বগি লাইনচ্যুত হয়। ট্রেনের ১৭টি বগির মধ্যে পাঁচটি বগি ছিটকে বড়ছড়ায় গিয়ে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলে চারজন নিহত ও শতাধিক যাত্রী আহত হন।
এদিকে, রেলমন্ত্রীর আজ হাসপাতাল ও দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেছন, দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত ছিল এই রেল বিভাগ। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর রেলপথের উন্নয়নে হাত দিয়েছে। তবে ভালো সেবা দিতে রেল বিভাগের সময় লাগবে।
তিনি জানান, ঢাকা-সিলেট রেলপথ আখাউড়া পর্যন্ত ডুয়েল গেজে রূপান্তরিত হচ্ছে। আখাউড়া থেকে সিলেট পর্যন্ত ডুয়েল গেজে রূপান্তরিত করতে ইতিমধ্যেই ১৬ হাজার ১৪৪ লাখ টাকার একটি প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (একনেক) নির্বাহী কমিটি অনুমোদন করেছে। দ্রুত তা বাস্তবায়নের কাজ চলছে।
গতকাল রাজধানীতে একনেক সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের জানান, ২৩ জুন রাতে উপবন এক্সপ্রেসটি দুর্ঘটনাকবলিত হবার পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী দেশের রেল ও সড়কপথের সব সেতু জরিপ করার নির্দেশ দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সরকারী বিভাগকে। ঝুঁকিপূর্ণ সেতু চিহ্নিত করে বর্ষার আগেই যেন মেরামত করা যায়, সে নির্দেশও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান/আশরাফুর রহমান/২৭