বাংলাদেশে বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা; পরিস্থিতি মোকাবেলা প্রস্তুত সরকার
(last modified Fri, 12 Jul 2019 13:18:01 GMT )
জুলাই ১২, ২০১৯ ১৯:১৮ Asia/Dhaka

কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা ঢলে বাংলাদেশে বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এরইমধ্যে অন্তত ১০ জেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে দ্রুতই পরিস্থিতির অবনতি ঘটবে বলে মনে করছে বাংলাদেশের পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রাণালয়।

আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল, দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল; এসব এলাকা সংলগ্ন ভারতের বিভিন্ন এলাকা ও নেপালে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে- যা আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকবে। এতে লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, নেত্রকোনা, সিলেট, বান্দরবান, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, শেরপুরসহ অন্তত ১০ জেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। আগামী ৭২ ঘণ্টায় দেশের সব প্রধান নদনদীর পানি বেড়ে পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটাতে পারে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান জানান, সুরমা, সাঙ্গু, তিস্তাসহ কয়েকটি নদীর অন্তত ১২টি পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বাড়ছে যমুনা নদীর পানিও। ভারত থেকে পানি নামতে শুরু করলে পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটবে। কারণ, বাংলাদেশে বন্যা নির্ভর করে ভারতে বৃষ্টিপাতের ওপর; বাংলাদেশের নদনদীর পানির ৯৩ শতাংশই আসে ভারত থেকে। দেশটিতে বেশি বৃষ্টিপাত হলে তার প্রভাব পড়বে বাংলাদেশে। এ প্রেক্ষাপটে ৬২৮টি পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে, যারমধ্যে ২৬টি পয়েন্ট খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। আর ৫২১টি পয়েন্টকে ঝুঁকিমুক্ত করতে দ্রুত কাজ চলছে।

আন্তঃমন্ত্রণালয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির বৈঠকে তিমন্ত্রী ডাক্তার এনামুর রহমান

সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুতি নিয়েছে সরকার। ভাঙনরোধ ও ক্ষতিগ্রস্তদের খাদ্য সহায়তা দিতে প্রয়োজনীয় অর্থ ও খাদ্য বরাদ্দ দেয়ার কথা জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডাক্তার এনামুর রহমান। আজ (শুক্রবার) দুপুরে সচিবালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির বৈঠকে সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়। পরে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বেড়ে ১০ জেলায় বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে, যা আরও অবনতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে নদীভাঙন। বন্যা কবলিত জেলাগুলোতে প্রথমে ২০০ মেট্রিক টন এবং পরে ৩০০ মেট্রিক টন খাদ্য পাঠানো হয়েছে। প্রত্যেক জেলায় ২ হাজার প্যাকেট উন্নতমানের শুকনো খাবার পাঠানো হয়েছে। প্রতিটি প্যাকেটে একটি পরিবারের অন্তত সাতদিনের খাদ্য থাকবে। এছাড়া প্রত্যেক জেলায় প্রথমে এক কোটি ২০ লাখ টাকা ও পরে আরও এক কোটি ৮০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্রগুলো। যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে, সেগুলো প্রস্তুত রাখতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয়া হয়েছে। পাঠানো হচ্ছে বড় বড় তাঁবু।

বন্যা আক্রান্ত মানুষকে উদ্ধারে ৬৭টি ওয়াটার রেসকিউ টিম প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া ফায়ার সার্ভিস, স্কাউট, ভলান্টিয়ারদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বন্যা কবলিত মানুষের জন্য মেডিকেল টিম গঠন করে কাজ করছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করা হচ্ছে বলেও জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী।#

 

পার্সটুডে/শামস মণ্ডল/আশরাফুর রহমান/১২

 

ট্যাগ