‘বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে, তবে আমরা চিন্তিত নই’
বাংলাদেশের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে, তবে এতে শঙ্কার কিছু নেই বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান। আজ (মঙ্গলবার) সকালে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি একথা জানান।
দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘টানা বর্ষণ অব্যাহত থাকায় পনেরটি নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। বৃষ্টি আরও বাড়বে, ব্রহ্মপুত্রের ভয়ানক অবস্থা। তাই বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। তবে এ নিয়ে আমরা চিন্তিত নই। পর্যাপ্ত খাবার মজুদ আছে। প্রত্যেক জেলায় পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী দেওয়া আছে। আশ্রয়ের জন্য ৫০০টি করে তাঁবু পাঠানো হয়েছে। এছাড়া ৬৪টি জেলায় খাদ্য গুদাম নির্মাণের প্রক্রিয়া চলছে।’
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বজ্রপাতে মৃত্যুর ঘটনা বাড়ছে। তাই বজ্রপাতপ্রবণ এলাকায় বজ্রপাতনিরোধক টাওয়ার বসানো হবে। যাতে হতাহতের সংখ্যা কমিয়ে আনা যায়।’
জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) সঙ্গে বৈঠক শেষে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, ‘বন্যা পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, যেকোনে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে আমরা প্রস্তুত। সারাদেশে পর্যাপ্ত খাদ্য মজুদ আছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘বন্যায় ফসলের ক্ষতি হওয়ার শঙ্কা নেই। এখন ধান লাগানোর সময়। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পরে কৃষকরা ধান রোপণ করবেন। তাই ক্ষতি হওয়ার কোনো শঙ্কা নেই।’
প্রত্যেক জেলায় নিরাপদ খাদ্য অধিদফতরের অফিস করা হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘জনগণ যেন নিরাপদ খাদ্য পায় সে ব্যাপারে সরকার সচেষ্ট। এজন্য জেলা প্রশাসকদের কঠোর হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, এখন পর্যন্ত দেশের ১৬টি জেলায় বন্যার পানি ঢুকেছে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। বন্যায় ডুবে যাওয়া জেলাগুলোর মধ্যে কুড়িগ্রাম, জামালপুর, গাইবান্ধা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ জেলার বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অপরদিকে নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ ও সিলেট জেলার বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকলেও লালমনিরহাট, চট্টগ্রাম, বান্দরবান জেলায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে, বন্যা কবলিত এলাকায় কয়েক লাখ মানুষ বিশুদ্ধ পানি, জ্বালানি ও খাদ্যসংকটে রয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকার সড়কগুলো পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় মানুষকে কলাগাছের ভেলা ও ছোট নৌকায় চলাচল করতে হচ্ছে। ফলে এসব এলাকায় খাদ্যসংকট আরও তীব্র হচ্ছে। বন্যা কবলিত জেলাগুলোতে ঘরবাড়ী ও ফসলের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। খামারিরা বিপাকে পড়েছেন তাদের পোষা গবাদি পশু হাঁস-মুরগির নিয়ে। পুকুর ও জলাশয়গুলো ডুবে যাওয়ায় মৎস্যচাষীরা বড় অংকের লোকসানের মুখে পড়েছেন।#
পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/১৬
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।