ভারত থেকে ঢলের পানি আসছে বাংলাদেশে, আরেক দফা বন্যার আশঙ্কা
(last modified Mon, 30 Sep 2019 10:14:16 GMT )
সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১৯ ১৬:১৪ Asia/Dhaka
  • বাংলাদেশের সাম্প্রতিক বন্যা
    বাংলাদেশের সাম্প্রতিক বন্যা

সীমান্তের ওপারে ভারতে অতিবৃষ্টি ও প্রবল বন্যার কারণে বাংলাদেশের গঙ্গা-পদ্মা নদীঅঞ্চল আর এক দফা বন্যার মুখোমুখি এসে দাঁড়িয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের অন্তবর্তী পূর্বাভাসে এ আশঙ্কার কথা জানানো হয়েছে।

আবহাওয়ার সর্বশেষ পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি চলবে আগামী কয়েকদিন। চলতি মাসের শেষ এবং আগামী মাসের শুরুর পুরো সপ্তাহ জুড়েই থেমে থেমে বৃষ্টি হবে। কোথাও ভারী আবার কোথাও হালকা পরিমাণে বৃষ্টি হবে।

ওদিকে, গঙ্গা-পদ্মা নদ-নদী অববাহিকায় উজানে ভারতে অতিবৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। উজান থেকে অবিরাম ঢলের পানি নেমে আসছে বাংলাদশে। এ কারণে আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই বৃহত্তর রাজশাহী, কুষ্টিয়া, পাবনা, ফরিদপুর ও এর আশপাশ অঞ্চল বন্যা কবলিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পদ্মার ভাটিতে মধ্যাঞ্চলেও রয়েছে বন্যায় প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা। তবে এ বন্যা হতে পারে স্বল্প থেকে মধ্যমেয়াদি।

ভারতের উত্তর প্রদেশ, বিহার, মধ্য প্রদেশ, উত্তরাখন্ড ও সংলগ্ন কয়েকটি প্রদেশে এবং নেপালে গত দুই সপ্তাহ ধরে মাঝারি থেকে ভারী ও অতিভারী বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। এর ফলে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যায় গতকাল পর্যন্ত উত্তর প্রদেশে ও বিহারে মারা গেছে ৯০ জনের বেশী মানুষ।  ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে আরো জানা যায়, বর্তমানে উত্তর প্রদেশের পূর্বাঞ্চলীয় জেলাগুলোতে ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করা হয়েছে। শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া অতিভারী বর্ষণে তলিয়ে গেছে বিহার রাজ্যও। গতকাল  ২৪ ঘণ্টায় বিহারের রাজধানী পাটনায় ১৫২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বের্ডের তথ্য অনুযায়ী, গঙ্গার উৎস বা উজানের অববাহিকায় বিশেষত উত্তর প্রদেশ, বিহার ও নেপালে টানা ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে ঢল-বানের পানিতে গঙ্গা নদী ফুলে-ফুঁসে উঠেছে। আর সেই ঢল গড়িয়ে আসছে গঙ্গা-পদ্মায় বাংলাদেশের ভাটির দিকে। এ অবস্থায় অক্টোবরের শুরুতেই গঙ্গা-পদ্মা পাড়ে বন্যার আশঙ্কা এ মুহূর্তে বেড়ে গেছে। তাছাড়া ভারত উজানে বানের পানির চাপ সামাল দিতে গিয়ে নিজের স্বার্থেই যদি গঙ্গায় ফারাক্কা বাঁধের গেইট-স্পিলওয়েগুলো খুলে দেয় তখন ভাটিতে বাংলাদেশের দিকে তীব্রবেগে নামবে ঢল-বানের পানি।

এরফলে চলতি সপ্তাহে গঙ্গা নদী সংলগ্ন দেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর, পাবনা, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী ও মাগুরা জেলার কতিপয় স্থানে মাঝারি মাত্রার স্বল্প থেকে মধ্যমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।

গঙ্গা নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে পদ্মা নদী গোয়ালন্দ ও ভাগ্যকুল পয়েন্টে এবং পদ্মা সংলগ্ন যমুনার আরিচা পয়েন্টে বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। এরফলে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে পদ্মা নদী সংলগ্ন দেশের মধ্যাঞ্চলের মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ী ও শরীয়তপুর জেলাসমূহের নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।

অন্যদিকে ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদ-নদীসমূহের পানির সমতল বর্তমানে হ্রাস পাচ্ছে। মৌসুমী বৃষ্টিপাতের কারণে চলতি সপ্তাহের শেষে এ অববাহিকার নদীগুলোর পানির সমতল বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে বিপদসীমা অতিক্রম বা বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা নেই।

দেশের নদ-নদীসমূহের ৯৩টি পানির সমতল পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে বিগত ২৪ ঘণ্টায় ৪৭টিতে পানি বৃদ্ধি, ৪৩টিতে হ্রাস পায় এবং ৩টি স্থানে অপরিবর্তিত দেখা গেছে।#

পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/৩০

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

 

ট্যাগ