নিজ গ্রামে সমাহিত আবরার ফাহাদ: বাবার অভিযোগ ‘এটা পরিকল্পিত হত্যা’
বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার রায়ডাঙ্গা গ্রামে দাফন করা হয়েছে। আজ (মঙ্গলবার) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রায়ডাঙ্গা কবরস্থান সহস্রাধিক লোকের অংশগ্রহণে তৃতীয় জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হয়।
সকাল সাড়ে ৫টার দিকে আবরারের মরদেহ ঢাকা থেকে কুষ্টিয়া শহরের পিটিআই রোডের বাসায় পৌঁছালে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে বাতাস। মেধাবী এ শিক্ষার্থীকে এক নজর দেখার জন্য এলাকাবাসীসহ শত শত মানুষ ভিড় জমান। এ সময় অনেকে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি।
সকাল সাড়ে ৬টার দিকে আল ইকরা জামে মসজিদের সামনে আবরারের দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। কয়েক শ মানুষ এতে অংশ নেন। পরে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে আবরারের মরদেহ গ্রামের বাড়ি কুমারখালী উপজেলার রায়ডাঙ্গা গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়।
এদিকে, ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। তারা আবরার হত্যাকারীদের গ্রেফতারসহ ফাঁসির দাবি জানান।
দাফনের আগে ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ বলেন, ‘এটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। যে ছেলেটা বিকেল ৫টায় ঢাকায় গেল, তাকে ৮টার দিকে নির্যাতন করার জন্য ডেকে নিয়ে গেল। ছয় ঘণ্টা ধরে নির্যাতন চালাল, এটা অবশ্যই পরিকল্পিত।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় কোনো নেতার ইন্ধন রয়েছে। কেননা দু–একজন নয়, সেখানে ১৫ জনের বেশি ছেলে এই হত্যায় অংশ নিয়েছে। পরিকল্পনা ছাড়া ১০–১৫ জন ব্যক্তি কাউকে মারতে পারে না। হাইকমান্ডের নির্দেশে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে।’
গত রোববার (০৬ অক্টোবর) দিনগত রাত তিনটার দিকে বুয়েটের শেরে বাংলা হলের একতলা থেকে দোতলায় ওঠার সিঁড়ির মাঝ থেকে ফাহাদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
ফাহাদের সহপাঠীরা অভিযোগ করেছেন, ওই রাতেই হলটির ২০১১ নম্বর কক্ষে ফাহাদকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা পিটিয়ে মেরে ফেলেছেন।
ফাহাদের ময়নাতদন্তকারী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসকেরাও জানান, তার মরদেহে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। মারধরের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে।#
পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/৮
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।