আবরার হত্যার দায় স্বীকার করেছে আটক ছাত্রলীগ নেতারা, বুয়েট ভিসি অবরুদ্ধ
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে আটক ছাত্রলীগ নেতারা। এ ঘটনায় ১৪ জন জড়িত ছিল বলে জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়।
বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (১৭তম ব্যাচ) ছাত্র ফাহাদ শেরে বাংলা হলের আবাসিক ছাত্র ছিলেন। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সাম্প্রতিক কিছু চুক্তির সমালোচনা করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ার জেরে রোববার রাতে ফাহাদকে ডেকে নিয়ে অন্য একটি কক্ষে পিটিয়ে হত্যা করে বুয়েট ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা।
এ ঘটনায় সোমবার (৭ অক্টোবর) রাতে আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে ১৯ জনের নামে চকবাজার থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল এবং দ্বিতীয় আসামি করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদকে।
পুলিশের গোয়েন্দা শাখার একজন উর্দতন কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, আটক ছাত্রলীগ নেতারা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাদের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। এর আগে পুলিশ জানিয়েছে, ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার প্রমাণ পাওয়া গেছে। হলের ভিডিও ফুটেজ থেকে চিহ্নিতদের দশজনকে গতকালই আটক করা হয়েছে। মামলা তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে পুলিশের গোয়েন্দা শাখাকে।
এদিকে, আজ দুপুরে গ্রেফতারকৃত ১০ জন ছাত্রলীগের নেতাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম সাদবীর ইয়াসির আহসান চৌধুরী প্রত্যেককে ৫ দিন করে পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এদিকে, আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডে চলমান আন্দোলন পরিস্থিতি নিয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম। এদিকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় না বসায় বৈঠক চলাকালীন ভিসির কার্যালয়ের গেটে তালা লাগিয়ে দেয় আন্দোলনকারীরা।
মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টায় বুয়েটের ভিসির কার্যালয়ে এ বৈঠক শুরু হয় বলে নিশ্চিত করেছেন ভিসির পিএস (একান্ত সচিব) কামরুল ইসলাম।
বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরারের হত্যাকারীদের ফাঁসিসহ আট দফা দাবিতে আজ দ্বিতীয় দিনের মতো আন্দোলন করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। কিন্তু হত্যাকাণ্ডের দুই দিন হতে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসির অনুপস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তারা ভিসিকে বিকেল ৫টার মধ্যে ক্যাম্পাসে এসে জবাবদিহিতাসহ আট দফা দাবি জানান। পরে ভিসি উপস্থিত না হলে তারা কার্যালয় ঘেরাও করেন।#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/ আশরাফুর রহমান/৮
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।