বুয়েট ছাত্রলীগ সভাপতি-সম্পাদকের কক্ষ সিলগালা, স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি অনিকের
(last modified Sat, 12 Oct 2019 12:14:02 GMT )
অক্টোবর ১২, ২০১৯ ১৮:১৪ Asia/Dhaka
  • বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি জামী উস সানীর ব্যবহৃত আহসানউল্লাহ হলের ৩২১ নম্বর রুমটি সিলগালা করা হয়
    বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি জামী উস সানীর ব্যবহৃত আহসানউল্লাহ হলের ৩২১ নম্বর রুমটি সিলগালা করা হয়

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি জামী-উস সানি এবং সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেলের কক্ষ সিলগালা করে দিয়েছে প্রশাসন। আজ (শনিবার) বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংগঠনিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরই এ পদক্ষেপ নেয়া হয়।

আজ (শনিবার) বুয়েট ছাত্র কল্যাণ উপদেষ্টা (ডিএসডব্লিউ) অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমানের নেত্বত্বে প্রশাসন অভিযান পরিচালনা করে আহসান উল্লাহ হলের ৩২১ নম্বর রুম সিলগালা করে দেন। ওই রুমে থাকতেন বুয়েট ছাত্রলীগের সভাপতি জামী-উস সানি। পরে শেরেবাংলা হলের ৩০১২ নম্বর রুমটিও সিলগালা করে দেওয়া হয়। ওই রুমে থাকতেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও আবরার হত্যা মামলার ১ নম্বর আসামি মেহেদী হাসান রাসেল। এ ছাড়া আহসান উল্লাহ হলের ১২১ নম্বর কক্ষে হল ছাত্রলীগের অফিস ছিল। সেটাও সিলগালা করা হয়েছে।

ড. মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, এসব কক্ষ রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার করা হতো। অন্যান্য হলের ছাত্রলীগের ব্যবহৃত কক্ষগুলোও আগামীকালের মধ্যে সিলগালা করা হবে।

রুম সিলগালা করা প্রসঙ্গে বুয়েট শাখা জামি-উস সানি সাংবাদিকদের বলেন, আজকে সকালে আমি রুমেই ছিলাম। স্যাররা এসে সিলগালা করে দেন। আর আহসান উল্লাহ হলের ১২১ নম্বর কক্ষে হল ছাত্রলীগের অফিস ছিল। সেটাও সিলগালা করা হয়েছে।

সানি আরো বলেন, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক সব অছাত্রকে হল থেকে উচ্ছেদ চলছে। এ কাজে আমরা সহযোগিতা করব।

বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার বিচারসহ ১০ দফা দাবি আদায়ে বেশ কয়েকদিন ধরে বুয়েটের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করে আসছেন। আন্দোলনের একপর্যায়ে শুক্রবার (১১ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং দাবি পূরণের আশ্বাস দেন। শনিবার দাবিগুলোর বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। শনিবার সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিলেও ১৪ অক্টোবর ভর্তি পরীক্ষাকে সামনে রেখে আন্দোলন দুই দিনের জন্য শিথিল করেন। এর পরই ছাত্রলীগের তিনটি কক্ষ সিলগালা করে কর্তৃপক্ষ।

ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত চত্বরে অনিক সরকার (গোল চিহ্নিত)

আবরারকে হত্যার কথা স্বীকার করলেন অনিক সরকার

এদিকে, আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার (২২)। আজ ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুল ইসলামের আদালতে তিনি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

আবরাব হত্যা মামলার ৩ নম্বর আসামি অনিক সরকার রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার বড়ইকুড়ি গ্রামের মো. আনোয়ার হোসেন ও শাহিদা বেগমের ছেলে। তিনি বুয়েটের শেরেবাংলা হলের ছাত্র। পড়েন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষে। আবরার ফাহাদ হত্যার পরের দিন ৭ অক্টোবর তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরের দিন ৮ অক্টোবর তাঁকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠান আদালত। সেই রিমান্ড শেষ হওয়ার এক দিন আগেই আজ তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেন। আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় আজ শনিবার পর্যন্ত মোট ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর  পুলিশ (ডিএমপি)। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার এ ঘটনায় প্রথম ঢাকা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন মামলার ৫ নম্বর আসামি বুয়েটের বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র এবং বুয়েট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত উপসমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল।

গতকাল শুক্রবার জবানবন্দি দিয়েছেন মামলার ৭ নম্বর আসামি বুয়েট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত ক্রীড়া সম্পাদক মো. মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন।

পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/১২

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ