বুয়েটে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন সমাপ্ত, ঢাকা ছাড়লেন আবরারের ভাই ফাইয়াজ
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার বিচারসহ ১০ দফা দাবিতে চলমান আন্দোলনের সমাপ্তি টেনেছেন তার সহপাঠীরা। আজ (মঙ্গলবার) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বুয়েট শহীদ মিনারে এক ছাত্র সমাবেশে এ ঘোষণা দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তবে আগামীকাল (বুধবার) তারা সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িক শক্তিকে রুখে দিতে গণশপথে অংশ নেবেন।
পাশাপাশি আবরার হত্যার ঘটনায় জড়িত হিসেবে যাদের নাম চার্জশিটে আসবে, তাদের স্থায়ী বহিষ্কারের আগ পর্যন্ত একাডেমিক কোনো কার্যক্রমে অংশ না নেয়ার জন্য সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
এসময় শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা লক্ষ্য করেছি, অন্তরাল থেকে একটি স্বার্থান্বেষী মহল নিজেদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে। আমরা সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই, এ ধরনের কোনো স্বার্থান্বেষী মহলের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আমরা দেশবাসীর প্রতিও আহ্বান জানাই, এসব স্বার্থান্বেষী মহলের এজেন্ডা দেখে বিভ্রান্ত হবেন না। আমরা মাঠ পর্যায়ে আমাদের আন্দোলন দীর্ঘায়িত করে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার সুযোগ দিতে চাই না। সে কারণে আগামীকাল থেকেই আমরা মাঠ পর্যায়ের আন্দোলনের ইতি টানার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
ঢাকা কলেজ ছেড়েছে ফাহাদের ছোট ভাই ফাইয়াজ
ওদিকে, আবরার ফাহাদের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ আজ দুপুর তার কয়েকজন স্বজনকে নিয়ে ঢাকা কলেজে আসেন এবং বিশেষ ব্যবস্থায় ছাড়পত্র সংগ্রহ করেন। এসময় আবরার ফাইয়াজ সাংবাদিকদের বলেন, বড় ভাইয়ের এমন মৃত্যুতে পুরো পরিবার মুষড়ে পড়েছে। বাবা-মা চান না আমি তাদের ছেড়ে থাকি। তাই ঢাকা কলেজ ছাড়লাম। যদিও প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
ফাইয়াজ ঢাকা কলেজের একাদশ শ্রেণিতে পড়তেন। এখান থেকে ছাড়পত্র নিয়ে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হবেন।
এর আগে গতকাল (সোমবার) বিকেলে আবরারের বাবা-মা ও পরিবারের সদস্যরা গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে আবরার হত্যার সঙ্গে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের আশ্বাস দেন প্রধানমন্ত্রী।
গত ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
আরো একজন গ্রেফতার
এদিকে, আজ ভোর রাতে দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার সীমান্ত এলাকা থেকে আবরার হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি এসএম নাজমুস সাদাতকে (২০) গ্রেফতার করা হয়েছে। সাদাতের বাড়ি জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায়। তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) যন্ত্র কৌশল বিভাগের ১৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। এজাহারে ১৫ নম্বরে তার নাম রয়েছে।
ক্ষতিপূরণের রিট শুনানিতে হাইকোর্টের অপারগতা
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যায় তার পরিবারকে ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশনা চেয়ে দায়ের করা রিটের শুনানিতে অপরাগতা প্রকাশ করেছে হাইকোর্ট। পরে রিটটি সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের (কজলিস্ট) কার্যতালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়।#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/১৫
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।