পেট্রোল পাম্প ও ট্যাংক লরি ধর্মঘট প্রত্যাহার: কাল পাটকল শ্রমিকদের ধর্মঘট
বাংলাদেশে পেট্রোল পাম্প ও ট্যাংক লরি মলিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ধর্মঘট ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। আজ (সোমবার) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীতে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি)-এর কর্মকর্তাদের সঙ্গে পেট্রোল পাম্প মালিকদের বৈঠকে সমঝোতা শেষে এ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়।
গতকাল (রোববার) থেকে তেল বিক্রির কমিশন বাড়ানোসহ ১৫ দফা দাবিতে পেট্রোল পাম্প ধর্মঘটে রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা বিভাগে জ্বালানি তেল বিক্রি বন্ধ রাখা হয়।
বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ও ট্যাংক লরি মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ ও জ্বালানি তেল পরিবেশক সমিতির ডাকে ২৬ জেলায় অনির্দিষ্টকালের এই কর্মবিরতির কারণে তেলে চালিত যানবাহন চলাচল কার্যত: বন্ধ হয়ে যায়। ফলে দারুণ বিপাকে পড়েন যাত্রী সাধারণ।
আগামীকাল পাটশ্রমিকদের ২৪ ঘণ্টার ধর্মঘট
ওদিকে, পাটখাতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ, শ্রমিক-কর্মচারীদের বকেয়া পাওনা পরিশোধ ও মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন করাসহ ১১ দফা দাবিতে আগামীকাল (মঙ্গলবার) ভোর ৬টা থেকে ২৪ ঘণ্টার ধর্মঘট পালনের ডাক দিয়েছে খুলনা অঞ্চলের পাটকল শ্রমিকরা। এ ধর্মঘটের সমর্থনে আজ সকালে শ্রমিকরা মিলগুলোতে পৃথক গেট সভা ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে।
রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ- নন সিবিএ সংগ্রম পরিষদের ডাকে ছয়দিনের কর্মসূচির তৃতীয় দিন আজ সকাল ৯টা থেকে খুলনা-যশোরের ৯টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল গেট সভায় অংশ নিয়ে শ্রমিক-কর্মচারীরা তাদের দাবির সমর্থনে বিক্ষোভ বরে।
খালিশপুরের ৪টি মিলের শ্রমিকরা মিছিল নিয়ে বের হয়ে নতুন রাস্তা মোড়ে এসে এক হয়ে যায়। এরপর মিছিলটি দৌলতপুর ঘুরে নতুন রাস্তা হয়ে আবার স্ব স্ব মিলে গিয়ে শেষ। এ সময়ে নতুন রাস্তা থেকে দৌলতপুর পর্যন্ত এলাকায় যান চলাচল বিঘ্নিত হয়।
আটরা শিল্প এলাকায় আলিম জুট মিলের সামনে ও নওযাপাড়া শিল্প এলাকায় রাজঘাট এলাকায় খুলনা যশোর মহাসড়কেও শ্রমিক বিক্ষোভ চলাকালে যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়।
উল্লেখ্য, তিন ডিসেম্বর ভোর ৬টা থেকে ৪ ডিসেম্বর ভোর ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টা মিলে ধর্মঘট ও বিকাল ৪টায় স্ব স্ব মিল গেটে শ্রমিক সমাবেশ, ৮ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৯টায় গেট সভা, ১০ ডিসেম্বর সকাল ৮টা থেকে অমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করবে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকরা।
গুদামে পড়ে আছে ২৭০ কোটি টাকার পণ্য
মাসের পর মাস বেতন-ভাতা না পাওয়া শ্রমিক-কর্মচারীরা যখন আন্দোলন করছেন, তখন খুলনা-যশোরের রাষ্ট্রায়ত্ত ৯টি পাটকলের গুদামে মজুদ পড়ে আছে ৩০ হাজার ৪৬২ টন পাটপণ্য, যার বাজারমূল্য ২৭০ কোটি টাকা।
অর্থ সংস্থান করতে ব্যর্থ বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনকে (বিজেএমসি) অবশেষে ১০০ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এ অর্থ দিয়ে আগস্ট-নভেম্বর পর্যন্ত বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধে ব্যয় করা হবে।
উল্লেখ্র, কেবল খুলনা অঞ্চলেই রাষ্ট্রায়ত্ত ৯টি পাটকল শ্রমিকের ১০ থেকে ১১ সপ্তাহের মজুরি, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের চার মাসের বেতন বাবদ ৫৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা বকেয়া রয়েছে।
বিজেএমসি কর্মকর্তারা বলছেন, কার্যকরী মূলধন না থাকায় কাঁচা পাটের মজুদ নেই। ফলে উৎপাদনও কমেছে। বর্তমানে মিলগুলোয় উৎপাদন সক্ষমতার মাত্র ২০ শতাংশ ব্যবহার করা হচ্ছে।#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/২
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।