করোনার দিনে কেমন আছেন বাংলাদেশের ফুলচাষী ও দোকানীরা?
-
ফুলের বাগান ও দোকান
বিশ্ব মহামারি করোনা সংক্রমণ রোধে বাংলাদেশেও চলছে ঘরে থাকার নির্দেশ। চলছে সাধারণ ছুটি। বন্ধ রয়েছে দেশব্যাপী পরিবহন ব্যবস্থা। খাদ্য, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য এবং ওষুধপত্র ছাড়া সবরকম দোকানপাটও বন্ধ। কেনাকাটাও বন্ধ। পারিবারিক, সামাজিক বা ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদিসহ সবরকম উৎসব-আনন্দ থেমে গেছে। জনজীবন বলতে গেলে স্থবির হয়ে পড়েছে।
এমন প্রাণান্তকর অবস্থায় কে কিনবে ফুল? কেনইবা কিনবে? কিন্তু গ্রামীণ অর্থনীতিতে ফুলের চাষ করে যারা জীবিকা অর্জন করত তারা কী অবস্থায় আছে? ফুলের বাজার বা শহরে ফুলের দোকানীদের কীভাবে দিন চলছে?
এসব প্রশ্নের জবাব খুঁজতে আজকের এ প্রতিবেদনের অবতারণা।
‘ফুলের রাজধানী’ খ্যাত যশোরের গদখালির ফুলচাষী রফিকুল ইসলাম জানালেন, দেশজুড়ে লকডাউনের কারণে ফুলের বাজার বন্ধ। ক্ষেত থেকে প্রতিদিন পাঁচ-ছয় হাজার টাকার ফুল কেটে ফেলে দিতে হচ্ছে। গাছগুলি পরিচর্চা করতে কৃষাণ-মজুরদের মজুরি দিতে হচ্ছে। যেসব পাইকারী দোকানে ফুল সরবরাহ করত সেগুলি বন্ধ থাকায় বকেয়া টাকাও আটকা পড়েছে। এখন দুরবস্থার কথা বলে বুঝানো যাবে না।

রাজধানী ঢাকার শাহবাগের ফুল দোকানি লোকমান হোসেন জানালেন পহেলা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবসের মতো বড় উৎসবগুলিতে বড় বিক্রি ছাড়ও সামাজিক, ধর্মীয় বা পারিবারিক আনুষ্ঠান উপলণক্ষে যে ফুল বিক্রি হতো তা সম্পূর্ণ বন্ধ থাকার তারা দারুণ ক্ষতির মুখে পড়েছেন। দোকানপাট বন্ধ থাকায় কঠিন দুরবস্থার মধ্যে দিন কাটছে দোকান-মালিক ও কর্মচারীরা।

এ অবস্থায় ‘বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটি’র সভাপতি আবদুর রহিম রেডিও তেহরানকে বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ফুলচাষী, ফুল ব্যবসায়ী ও খুচরা বিক্রেতা মিলে প্রায় অর্ধলক্ষ মানুষদের জন্য আপদকালীন খাদ্য সাহায্য দিতে হবে এবং পরবর্তীতে ক্ষতিগ্রস্ত চাষীদের পুনর্বাসনের জন্য আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা করতে হবে।
এ প্রসঙ্গে কৃষি অধিদপ্তরের যশোরের আঞ্চলিক উপ-পরিচালক আখতারুজ্জামান রেডিও তেহরানকে জানান, করোনার প্রভাবে ফুল চাষীদের কার কী পরিমাণ ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে তা নির্ধারণের কাজ চলছে।

ইতোমধ্যে চাষীদের সমিতির পক্ষ থেকে আর্থিক প্রণোদনা চেয়ে কৃষিমন্ত্রীর বরাবরে আবেদনও করা হয়েছে। যেকোনো দুর্যোগ মোকাবেলায় কৃষকদের সহায়তা করার নীতি চালু রয়েছে। তাছাড়া এবার করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্রণোদনা পাকেজে কৃষিকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এ অবস্থায় ফুল চাষীরাও আশা করছেন, কৃষি বিভাগের মাধ্যমে তাদের জন্যও সহায়তা আসবে।#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/১১
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।