ঢামেকে করোনাজয়ীদের প্লাজমা সংগ্রহ শুরু, আশার আলো দেখছেন চিকিৎসকরা
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে প্লাজমা থেরাপি সংগ্রহ কার্যক্রম। এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৪৫ জন গুরুতর অসুস্থ করোনা রোগীর ওপর ‘প্লাজমা থেরাপি’ প্রয়োগ করা হবে।
আজ (শনিবার) বেলা ১১টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) ব্লাড ট্রান্সফিউশন বিভাগে করোনাজয়ী চিকিৎসকের শরীর থেকে বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে রক্ত সংগ্রহের মাধ্যমে এ কার্যক্রম শুরু হয়।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা মেডিকেল কলেজের হেমাটোলজি বিভাগের অধ্যাপক ও বোনম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট ইউনিটের প্রধান অধ্যাপক ডা. এম এ খান বলেছেন, সকাল সোয়া ১১টায় শুরু করা হয়েছে প্লাজমা সংগ্রহ। ঢামেকের (নতুন ভবন) ব্লাড ট্রান্সফিউশন বিভাগে করোনাজয়ীদের প্লাজমা সংগ্রহ হচ্ছে। করোনাজয়ী সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের ও মিটফোর্ড হাসপাতালের তিন চিকিৎসকের দেহ থেকে বিশেষ যন্ত্রের মাধ্যমে নেওয়া হবে এই প্লাজমা। যে তিনজন চিকিৎসক প্লাজমা দিতে রাজি হয়েছেন, তাঁরা হলেন ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক দিলদার হোসেন বাদল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালের চিকিৎসক পিয়াস এবং কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালের আতিয়ার রহমান।
তিনি আরও জানান, সংগ্রহ করা প্লাজমা পরীক্ষা করে দেখা হবে এন্টিবডি কতটুকু আছে। পরে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসার কাজে ব্যবহার করা হবে এ প্লাজমা।
ডা. এম এ খান আরও বলেন, এটি একটি পরীক্ষিত চিকিৎসা পদ্ধতি, বিশেষ করে যখন কোনো রোগের নির্দিষ্ট কোনো ওষুধ নেই এবং সুস্পষ্ট কোনো চিকিৎসা ব্যবস্থাও নেই। সে ক্ষেত্রে এটি একটি কার্যকর ও পরীক্ষিত চিকিৎসা পদ্ধতি।
এর পদ্ধতি সম্পর্কে তিনি বলেন, করোনা আক্রান্ত হয়ে সুস্থ রোগীর শরীর থেকে হলুদ রঙের প্লাজমা সংগ্রহ করা হবে। সেক্ষেত্রে করোনা থেকে যেসব ব্যক্তি সুস্থ হচ্ছেন তাদের এগিয়ে আসতে হবে। সারা বিশ্বে এই চিকিৎসায় সুস্থতার হার বেশি হওয়ায় বাংলাদেশের চিকিৎসকরাও প্লাজমা থেরাপিতে আশার আলো দেখছেন।
অধ্যাপক ডা. এম এ খান বলেন, চীনে এই থেরাপি ব্যবহারের প্রথমদিকে ১০ জন অসুস্থ ব্যক্তির শরীরে এটি প্রয়োগ করে দেখা গেছে তারা সবাই দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন। অপরদিকে একই সময় অন্য দশজন অসুস্থ ব্যক্তির শরীরে প্লাজমা না দিয়ে প্রথাগত চিকিৎসা দেয়ায় তাদের মধ্যে ৩ জনের মৃত্যু ঘটে। তাই করোনা চিকিৎসায় এর সফলতা প্রমাণিত।
করোনা রোগীদের চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত চিকিৎসকরা জানান, করোনায় সংক্রমিত হওয়ার পর যারা পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠেন, তাদের প্রত্যেকের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। অর্থাৎ রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে। করোনাজয়ী ব্যক্তির দেহে তৈরি অ্যান্টিবডি যদি করোনায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়া ব্যক্তির শরীরে প্রয়োগ করা হয়, তাহলে তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন।#
পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/১৬