করোনায় অর্থনৈতিক সংকটে দিশেহারা মানুষ: ভুক্তভোগী ও বিশ্লেষক প্রতিক্রিয়া
https://parstoday.ir/bn/news/bangladesh-i81196
মহামারি করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখে উপার্জনহীন বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে কর্মচ্যুত নিম্ন ও মাঝারি আয়ের পরিবারগুলো এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এদিকে রাজধানী ঢাকা শহরে এখন ভীষণভাবে করোনা আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। অসুস্থ হলে চিকিৎসা পাওয়া নিয়েও দেখা দিয়েছে আশঙ্কা।
(last modified 2025-07-09T12:00:31+00:00 )
জুলাই ০৪, ২০২০ ২১:১০ Asia/Dhaka

মহামারি করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখে উপার্জনহীন বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে কর্মচ্যুত নিম্ন ও মাঝারি আয়ের পরিবারগুলো এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এদিকে রাজধানী ঢাকা শহরে এখন ভীষণভাবে করোনা আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। অসুস্থ হলে চিকিৎসা পাওয়া নিয়েও দেখা দিয়েছে আশঙ্কা।

এ অবস্থায় জীবন ও জীবিকার উভয় সংকটে পড়ে হাজার হাজার পরিবার ঢাকা ছেড়ে গ্রামে ফিরে যাচ্ছে। আশা  অন্তত সেখানে আশ্রয় নিয়ে এ দুঃসময়টা পার করা যাবে কোনমতে। অনেকে শহরে থাকার খরচ বাঁচাতে বা  করোনা সংক্রমণ থেকে  বাঁচতে  পরিবার পরিজন পাঠিয়ে দিচ্ছে  গ্রামে।

শহর ছাড়ার কাহিনী একেক জনের একেক রকম হলেও সবার বেলায়ই মূল কারণ হচ্ছে আয় রোজগারের সংকট।

বর্তমান আর্থিক বিপর্যয়ের মুখে কত পরিবার রাজধানী ছেড়ে যাচ্ছে তার কোনো পরিসংখ্যান এখনো জানা যায় নি। তবে  চলতি মাসের শুরুতে প্রতিদিনই শত শত ট্রাক বা পিকআপ ভ্যানে বাসাবাড়ির  মালাপত্র বোঝাই করে শহর ছাড়ছে  নিম্ন–মাঝারি আয়ের পরিবারগুলো।আর রাজধানীর অলিতে গলিতে বা আবাসিক এলাকার ফ্লাট বাড়িতেও  টু-লেট লেখা বোর্ড  বেশি বেশি ঝুলতে দখা যাচ্ছে।

‌উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক একাধিক বেসরকারি জরিপে বলা হয়েছে করোনার কারণে  সারাদেশে আয় কমে গেছে শতকরা ৭০ ভাগ মানুষের। আর কর্মহীন হয়ে পড়েছেন অন্তত  ৩৫ ভাগ মানুষ। তবে সরকারি  গবেষণা সংস্থা বিআইডিএসে'র জরিপে বলা হয়েছে, করোনার প্রভাবে দরিদ্র মানুষের  আয় কমেছে সবচেয়ে বেশি। এছাড়া দেশে আন্তত পৌনে দুকোটি মানুষ নতুন করে দরিদ্র হয়েছে।

বিশ্বব্যাংকের সাবেক লিড ইকোনোমিষ্ট ড. জাহিদ হোসেন

এ প্রসঙ্গে বিশ্বব্যাংকের সাবেক লিড ইকোনোমিষ্ট ড. জাহিদ হোসেন বলেছেন,  অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের শিকার হয়ে কত মানুষ দরিদ্র হয়ে পড়েছে তা এখনই  বলা মুশকিল কারণ করোনার  আর্থিক প্রভাব এখনো  চলমান রয়েছে।

এ অবস্থায়  অর্থনৈতিক সংকটে পড়ে গ্রামে ফিরে যাওয়া মানুষের  জন্য আপদকালীন ব্যবস্থা হিসেবে গ্রামে আয় রোজগারের সূযোগ সৃষ্টির পরামর্শ দিয়েছেন গবেষক ও সমাজতত্ত্ববিদ খন্দকার শাখাওয়াত আলী।

বাংলাদেশের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের

এদিকে সরকারের মন্ত্রী এবং ক্ষমতাসীল দলের মুখপাত্র ওবায়দুল কাদের আজ স্বীকার করেছেন, করোনা সংকটে অনেকের আয় কমেছে, হারিয়েছে চাকরি, আবার কেউ কেউ পরিবার নিয়ে কষ্টে জীবনযাপন করছেন।

 সরকারি বাসভবন থেকে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে ওবায়দুল বলেছেন, ‘ক্ষুদ্র ও মাঝারি ঋণখাতের অধিকাংশ ঋণগ্রহীতা প্রান্তিক ও নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীর জীবনে করোনার আকস্মিক অভিঘাত নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। অনেকেই সঞ্চয় ভেঙ্গে চলছে। অন্যদিকে ঋণের কিস্তি দিতে হিমশিম খাচ্ছে। এমন অবস্থায় তাদের ওপর কিস্তি শোধের বাড়তি চাপ জীবনযুদ্ধ থেকে ছিটকে ফেলতে পারে। ভেঙ্গে দিতে পারে মনোবল।

এমন পরিস্থিতিতে পরস্পরের প্রতি সমব্যথী হবার আহবান জানিয়েছেন ওবায়দুল কাদের। #

পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/গাজী আবদুর রশীদ