৭৫’র পর রাতের অন্ধকারে ক্ষমতা দখলকারীরা মানুষকে দুর্নীতি শিখিয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ জাতীয় সংসদে বলেছেন, ১৯৭৫’র পর যারা রাতের অন্ধকারে অস্ত্রহাতে নিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল তারাই মানুষকে দুর্নীতি শিখিয়েছে, কালো টাকা শিখিয়েছে, ঋণ খেলাপী শিখিয়েছে।
আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুরে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে একাদশ সংসদের ৮ম অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে সংসদ নেতা এ মন্তব্য করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ একটা আদর্শ নিয়ে চলত নীতি নিয়ে চলত। দীর্ঘ দিন এই দেশে মিলিটারি ডিকটেটরশিপ এদেশের মানুষের চরিত্র হনন করেছে; দুর্নীতির বীজ বপন করেছে। এটা এখন মহিরুহ হয়ে গেছে, যতই কাটা হয় আবার কোথা থেকে গজিয়ে ওঠে। কারণ, মানুষের চরিত্রটাই নষ্ট করে দিয়ে গেছে। সেই ক্ষেত্রে এই চরিত্রহীণ্যতা একেবারে ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত ছিল। সেখানে থেকে যতই চেষ্টা করেন এটা মূলউৎপাটন করা যথেষ্ট কঠিন।’
সংসদ নেতা বলেন, "যে খবরগুলো পাচ্ছেন, বলছেন এটা কারা করছে? আওয়ামী লীগ সরকার আসার পর কে কোন দলের সেটা বড় কথা নয়। কে এ ধরনের দুর্নীতির সাথে জড়িত, অনিয়মের সাথে জড়িত, আমরা যাকেই পাচ্ছি, যেখানেই পাচ্ছি আমরা ধরছি। আবার ধরছি বলেই চোর হয়ে যাচ্ছি। আমরাই ধরি আবার আমাদেরকেই দোষারোপ করা হয়। এটাই হচ্ছে দুর্ভাগ্য।"
শেখ হাসিনা বলেন, "এর আগে তো দুর্নীতিটাই নীতি ছিল; অনিয়মটাই নিয়ম ছিল -সেভাবেই রাষ্ট্র চলেছে। আওয়ামী লীগ আসার পর সেগুলো মোকাবেলার করার চেষ্টা করছি; যতটুক পারি সেগুলো শুদ্ধ করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। আগেই বলেছি আমরা এই অনিয়মগুলো নিশ্চই মানব না। যেই হোক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি এবং নেব, এটা অব্যাহত থাকবে।"
ওদিকে, আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন স্বাস্থ্যখাতে নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা সরকারের শুদ্ধি অভিযান শুরু হয়েছে।স্বাস্থ্যখাতে অনিয়মের বিরুদ্ধে চলমান অভিযান অব্যাহত থাকবে ।
আজ (বৃহস্পতিবার) সরকারি বাসভবন থেকে দলীয় সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে যুক্ত হয়ে ভিডিও কনফারেন্সে সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, অপরাধীর কোনো দলীয় পরিচয় নেই, যতই ক্ষমতাধর হোক তাকে আইনের আওতায় আসতে হবে। তিনি হুঁশিয়ার করেন, যারা জনগণের অসহায়ত্ব নিয়ে অবৈধ ব্যবসা করছে, প্রতারণা করছে, তাদের বিরুদ্ধে সরকার জিরো টলারেন্স নীতিতে অটল।
তিনি বলেন, করোনা সংকটের পাশাপাশি বন্যাদুর্গত অসহায় মানুষের সুরক্ষা সরকারের জন্য নতুন আরেকটি চ্যালেঞ্জ। তবে সংকটের সাহসী ও মানবিক নেতৃত্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারণে প্রতিবছর নানা ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশের সক্ষমতা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে। দুর্যোগকালে মানবিকতার আধার ও আস্থার ঠিকানা শেখ হাসিনা সব সময় অসহায় মানুষের পাশে রয়েছেন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, করোনা মোকাবিলায় সরকারের নানামুখী উদ্যোগের অংশ হিসেবে ৫০ লাখ মানুষের মধ্যে ২ হাজার ৫০০ টাকা করে প্রদান করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে কিছু কিছু অসামঞ্জস্য ধরা পড়ায় সরকার নিজ উদ্যোগেই তদন্ত ও যাচাই-বাছাই করে প্রকৃত অসহায়দের নিকট সহায়তার টাকা দিচ্ছে।#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/বাবুল আখতার/৯
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।