ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড: এতে কি ধর্ষণ কমবে প্রশ্ন বিভিন্নমহলে
(last modified Tue, 13 Oct 2020 13:54:23 GMT )
অক্টোবর ১৩, ২০২০ ১৯:৫৪ Asia/Dhaka

বাংলাদেশে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন অধ্যাদেশে সই করেছেন প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ। এ সময় জাতীয় সংসদের অধিবেশনে না থাকায় এই অধ্যাদেশটি এখন আইন হিসেবে কার্যকর হবে। সংসদের পরবর্তী অধিবেশনে এটি চূড়ান্তভাবে আইন আকারে পাস করিয়ে নিতে হবে।

গতকাল  সোমবার ধর্ষণ মামলার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের খসড়া মন্ত্রিসভায় চূড়ান্ত অনুমোদন পায়।

২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন অনুযায়ী, বাংলাদেশে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি এতদিন ছিল যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। আর ধর্ষণের শিকার নারী বা শিশুর মৃত্যু হলে বা দলবেঁধে ধর্ষণের ঘটনায় সর্বোচ্চ শাস্তি নির্ধারিত ছিল মৃত্যুদণ্ড। পাশাপাশি দুই ক্ষেত্রেই অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ তার আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেছেন, নারী নির্যাতনের সমস্যাকে মোকাবেলা করতেই মন্ত্রিসভায়  এ আইনটিতে   অনুমোদন দিয়েছে।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত ১৬ বছরে ধর্ষণের ঘটনায় ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টার থেকে মামলা হয়েছে ৪, ৫৪১টি। এর মধ্যে আসামির শাস্তি হয়েছে মাত্র ৬০টি ঘটনায়। এসব কারণে ধর্ষণের অপরাধে শাস্তির মাত্রা বাড়ানোর দাবি যেমন আছে তেমনি শাস্তি বাড়ালেই এ ধরনের অপরাধ কমবে কিনা- সেই প্রশ্নও আছে অনেকের মধ্যে। তাদের ভাষ্য, সাক্ষ্য আইনের জটিলতা দূর করে বিচার পাওয়ার পথ সহজ করতে হবে। সেই সঙ্গে সামাজিকভাবে বিষয়টি মোকাবিলা করতে হবে।

ধর্ষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার গোটা দেশ

সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনা হঠাৎ করেই বেড়ে যায়। এর মধ্যে সিলেট এমসি কলেজ হোস্টেলে বর্বরোচিত সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এরপর গত ৪ অক্টোবর নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের এক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। ওই ঘটনা জানাজানির পর ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে রাজধানীসহ সারাদেশে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। অধিকাংশ মহল থেকেই ধর্ষণকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখার দাবি জানানো হয়।

এদিকে, সিলেট মুরারিচাঁদ (এমসি) কলেজ ছাত্রাবাসে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি সাইফুর রহমানসহ চারজনের ছাত্রত্ব সাময়িকভাবে বাতিল করেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।

এমসি কলেজের ৪ ধর্ষক

আজ  মঙ্গলবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় গতকাল সোমবার  বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১০তম সিন্ডিকেট সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ছাত্রত্ব বাতিল হওয়া চার শিক্ষার্থী হচ্ছে, বিএসএস ডিগ্রি পাসকোর্সের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের অনিয়মিত ছাত্র সাইফুর রহমান (২৮), ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ইংরেজি মাস্টার্স ফাইনাল বর্ষের নিয়মিত শিক্ষার্থী শাহ মাহবুবুর রহমান ওরফে রনি (২৫),  বিএসএস ডিগ্রি পাসকোর্সের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের নিয়মিত শিক্ষার্থী রবিউল ইসলাম (২৫) এবং  ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্স ফাইনাল বর্ষের নিয়মিত শিক্ষার্থী মাহফুজুর রহমান (২৫)।#

পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/গাজী আবদুর রশীদ/১৩

  • বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

ট্যাগ