বর্ষীয়ান আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের ইন্তেকাল: প্রেসিডেন্ট-প্রধানমন্ত্রীর শোক
(last modified Sat, 24 Oct 2020 05:43:22 GMT )
অক্টোবর ২৪, ২০২০ ১১:৪৩ Asia/Dhaka
  • ব্যারিস্টার রফিক-উল হক
    ব্যারিস্টার রফিক-উল হক

বাংলাদেশের সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ও সুপ্রিম কোর্টের প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হক ইন্তেকাল করেছেন আজ (শনিবার) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে রাজধানীর মগবাজারের আদ্-দ্বীন হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। 

ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের মৃত্যুতে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন শোক প্রকাশ করেছেন। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিও তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে।

প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

ইউরিন ও কিডনি ইনফেকশনসহ বার্ধক্যজনিত নানা শারীরিক জটিলতার কারণে কয়েক দিন ধরে আদ্-দ্বীন হাসপাতালে আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন ব্যারিস্টার রফিক-উল হক। তাঁর চিকিৎসার জন্য একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছিল। চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে আজ সকালে না ফেরার দেশে চলে যান এই প্রাজ্ঞ আইনজ্ঞ।

আজ সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে আদ-দ্বীন হাসপাতাল প্রাঙ্গণে রফিক-উল হকের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে মরদেহ পল্টনের বাসায় নেয়া হয়। বাদ জোহর বায়তুল মোকাররম মসজিদ প্রাঙ্গণে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। বেলা দুইটার দিকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি প্রাঙ্গণে রফিক-উল হকের তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে তাঁর মরদেহ বনানী কবরস্থানে নেওয়া হয়। সেখানেই বিকেল ৩টার দিকে তাঁকে স্ত্রীর পাশে দাফন করা হয়।  

ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের জন্ম ১৯৩৫ সালের ২ নভেম্বর দক্ষিণ কলকাতার চেতলা গ্রামে। গ্রামের হাই স্কুলে পড়াশোনা শেষ করে চলে যান কলকাতার ইসলামিয়া কলেজে। ওই কলেজের বেকার হোস্টেলে যে কক্ষে বঙ্গবন্ধু থাকতেন তার পাশের কক্ষেই থাকতেন তিনি। ১৯৫৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক, ১৯৫৭ সালে দর্শন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। ১৯৫৮ সালে এলএলবি পাস করেন। ১৯৬২ সালে ব্রিটেন থেকে বার অ্যাট ল সম্পন্ন করেন। ১৯৬৫ সালে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে এবং ১৯৭৩ সালে আপিল বিভাগে আইনজীবী হিসেবে আইন পেশা শুরু করেন। বর্ণাঢ্য জীবনে আইন পেশায় দীর্ঘ প্রায় ৬০ বছর পার করেছেন।

সপরিবারে ব্যারিস্টার রফিক-উল হক

বিগত সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে মুক্ত করতে আইনি লড়াই করেন তিনি। দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও ভাবমূর্তি রক্ষায় বরাবরই সোচ্চার ছিলেন রফিক-উল হক। দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক ও আইনি বিষয় নিয়ে সরকারকে সহযোগিতা করেছেন বর্ষীয়ান এই আইনজীবী।

১৯৯০ সালের ৭ এপ্রিল থেকে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন রফিক-উল হক। কিন্তু কোনো বেতন নেননি তিনি। ব্যারিস্টার রফিক-উল হক তাঁর জীবনের উপার্জিত অর্থের প্রায় সবই ব্যয় করেছেন মানুষের কল্যাণ ও সমাজসেবায়। 

২০১১ সালে ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের চিকিৎসক স্ত্রী ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তার একমাত্র ছেলে ব্যারিস্টার ফাহিমুল হকও আইন পেশায় রয়েছেন। পুত্রবধূ রোকেয়া হকও যুক্ত রয়েছেন একই পেশায়।#

পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/২৪

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ