'রোজিনা মুক্ত না হলে মুক্ত সাংবাদিকতার অস্তিত্ব হুমকির মধ্যে পড়বে'
রোজিনা ইসলামের প্রতি আচরণ সরকারের ফ্যাসিবাদী চরিত্রের প্রকাশ: ফখরুল
প্রথম আলো পত্রিকার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামের প্রতি আচরণ সরকারের ফ্যাসিবাদী চরিত্রের প্রকাশ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ শুক্রবার (২১ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল আয়োজিত আলোচনাসভায় এই মন্তব্য করেন তিনি। সাংবাদিক রোজিনাসহ সব সাংবাদিক ও রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তির দাবিতে এই আলোচনাসভার আয়োজন করে জাতীয়তাবাদ মহিলা দল।
সভায় বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার রোজিনার প্রতি এমন আচরণ দিয়ে সব সাংবাদিকদের 'শিক্ষা' দিতে চায়। এটাই হলো ফ্যাসিবাদের চরিত্র। তারা মানুষকে ভয় দেখিয়ে স্তব্ধ করে দিতে চায়।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, এই সরকার সবচেয়ে বড় সর্বনাশ করেছে, দেশের সমস্ত গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আজকে রোজিনা ইসলাম,কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এর আগে সাগর-রুনিকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি বলেন, দেশের সব মানুষ আজকে নির্যাতিত, নিপীড়িত। শফিক রেহমানের মতো মানুষকে ২১ দিন ফ্লোরে শুয়ে থাকতে হয়েছে। রুহুল আমীন গাজী কারাগারে। বিএনপি নেত্রী
নিপুণ রায়ের জামিন হয় না। আমাদের এখন একটাই পথ, এই দানবকে সরাতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।
ফখরুল বলেন, হেফাজতে ইসলামের নারায়ণগঞ্জের নেতা মাওলানা ইকবালকে তিন-চারবার রিমান্ডে নিয়েছে। রিমান্ডে অত্যাচার নির্যাতনে বৃহস্পতিবার তিনি মারা গেছেন। এরা মানুষ না? কেউ অন্যায় করলে তার বিচার হবে। কিন্তু পুলিশ কাস্টডিতে রিমান্ডের নামে নির্যাতন করে পিটিয়ে মেরে ফেলবেন? এটা বন্ধ করেন।
আজকেও প্রতিবাদ সমাবেশ
এদিকে, প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক কারাবন্দী রোজিনা ইসলাম মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা। রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে রুজু করা মামলাকে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক উল্লেখ করে সাংবাদিক নেতারা বলেছেন, রোজিনা মুক্ত না হলে মুক্ত সাংবাদিকতার অস্তিত্ব হুমকির মধ্যে পড়বে। ব্যক্তিগত তথ্য, ফোনালাপ সামাজিক যোগাযোগ-মাধ্যমে ছড়িয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করে সাংবাদিকদের ঐক্যে যাতে বিভেদ সৃষ্টি করা না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতেও বলেছেন তাঁরা।
সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে নির্যাতন ও গ্রেপ্তারের ঘটনায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশের তৃতীয় দিন আজ শুক্রবার এসব কথা বলেন সাংবাদিক নেতারা। সমাবেশে তাঁরা আরও বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যেসব দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রোজিনা কলম ধরেছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা সবাই জানতে চায়। দুর্নীতিবাজদের গুণ্ডামিতে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা বন্ধ হবে তা মানা যায় না। রোজিনার জামিন এবং মামলা প্রত্যাহারে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তাঁরা। রোজিনার বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটি প্রত্যাখ্যান করেন তাঁরা।
গত ১৭ মে সচিবালয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় রোজিনা ইসলামকে আটকে রেখে হেনস্তা করেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। রাতে তাঁকে শাহবাগ থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয় এবং অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরদিন আদালত রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। রোজিনা এখন কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারে বন্দী রয়েছেন ।
আগামীকাল শাহবাগে সমাবেশ
আগামীকাল ২২ মে, শনিবার,বেলা ৪ টায় শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে- "মামলা প্রত্যাহার করে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে মুক্তি, তাঁকে
নির্যাতনকারীদের বিচার করার দাবিতে এবং উপনিবেশিক অফিসিয়াল সিক্রেট এক্ট ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে নাগরিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে "। #
ARK-21
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।