বাংলাদেশের পাসপোর্ট থেকে 'একসেপ্ট ইসরাইল' বাদ: বিভিন্ন মহলের প্রতিক্রিয়া
(last modified Mon, 24 May 2021 15:03:56 GMT )
মে ২৪, ২০২১ ২১:০৩ Asia/Dhaka

ইহুদিবাদী ইসরাইলের সাথে বাংলাদেশের কোনোরকম কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। বাংলাদেশ সৃষ্টির পর থেকেই বাংলাদেশি নাগরিকদের পাসপোর্টে ইসরাইল ভ্রমণের বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা ছিল।

বাংলাদেশের পুরোনো পাসপোর্টে ‘‘দিস পাসপোর্ট ইজ ভ্যালিড ফর অল কান্ট্রিজ একসেপ্ট ইসরায়েল ’ছাপা থাকত। ছয় মাস আগে বাংলাদেশের নতুন পাসপোর্ট ইস্যু করার পর ‘‘দিস পাসপোর্ট ইজ ভ্যালিড ফর অল কান্ট্রিজ একসেপ্ট ইসরাইল’বাক্যাটি  থেকে ‘একসেপ্ট ইসরাইল’অংশটি বাদ দেওয়া হয়েছে। আর এ নিয়ে দেশের ভেভরে এবং  বাইরে  নতুন করে  আলোচনা  শুরু হয়েছে। পাসপোর্ট অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, সরকারের সিদ্ধান্তেই নতুন ই পাসপোর্ট থেকে ইসরাইল প্রসঙ্গটি বাদ দেওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, পাসপোর্টের‘আন্তর্জাতিক মান’রাখতে গিয়ে এই পরিবর্তন  আনা হয়েছে।

ওদিকে,  বাংলাদেশ ইসরাইলের ওপর থেকে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার খবরকে স্বাগত জানিয়েছেন ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল গিলাদ কোহেন। তবে এ বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান পরিষ্কার করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন রোববার সকালে গণমাধ্যমকে বলেছেন,  নতুন ই–পাসপোর্ট থেকে ইসরাইলের নাম বাদ দেওয়া হলেও দেশটির সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নীতিগত কোনো পরিবর্তন হয়নি, পররাষ্ট্রনীতির কোনো পরিবর্তন হয়নি। কারণ, বাংলাদেশ এখনো ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেয় না।

একই বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকাল (রোববার) এক বিবৃতিতে জানায়, বাংলাদেশের নাগরিকদের ওপর ইসরাইল ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রেখেছে সরকার।

ইসরাইল ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা বলবৎ আছে এবং ইসরাইলের প্রতি বাংলাদেশের অবস্থান বিন্দুমাত্র পরিবর্তন করেনি। ফিলিস্তিনের ওপর ইসরাইলের সাম্প্রতিক হামলার নিন্দা করছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘের প্রস্তাব অনুযায়ী, দুই রাষ্ট্র নীতির প্রতি বাংলাদেশের সমর্থন অব্যাহত থাকবে।

এর আগে আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল, বাংলাদেশ ইসরাইলের তৈরি টেলিফোনে আড়িপাতার যন্ত্র কিনেছে। জবাবে বাংলাদেশ জানিয়েছিল জাতিসংঘ মিশনের জন্য হাঙ্গেরি থেকে এ যন্ত্র কিনেছে। তবে জাতিসংঘের একজন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা  তাৎক্ষণিক  প্রতিবাদ জানিয়ে  বাংলাদেশের কাছে ব্যখ্যা  জানতে চায়। উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশকে একেবারে শুরুর দিকে যে কয়েকটি দেশ স্বীকৃতি দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল, তাদের মধ্যে অন্যতম ছিল ইসরাইল। ১৯৭২ সালের ৪ঠা ফেব্রুয়ারি ইসরাইল বাংলাদেশকে ওই প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু তৎকালীন সরকার লিখিতভাবে ইসরাইলের ওই স্বীকৃতি প্রত্যাখ্যান করেছিল। সেদিন  সরকারের ওই দৃঢ় অবস্থানের পেছনে মূল কারণ ছিল ফিলিস্তিনিদের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের সমর্থন।

কূটনীতিকরা মনে করছে, দীর্ঘ পঞ্চাশ বচর পর এসে বাংলাদেশের পাসপোর্ট থেকে  ইসরাইল ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞা তুলে দেয়ায় পর এবার  ইসরাইলের সাথে সুসম্পর্ক গড়ার জন্য তাগিদ জোরদার হবে। এবং সে লক্ষ্যে কাজ করার জন্য সরকারের ওপর  মনস্তাত্ত্বিক  চাপও  বাড়বে।#

পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/বাবুল আখতার/২৪

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ