সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২১ ১৮:৫৪ Asia/Dhaka

বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণে মৃত্যুর সংখ্যা কমে দৈনিক পঞ্চাশের নিচে চলে এলেও সংক্রমণ শনাক্ত এখনো দৈনিক দু’হাজারের কাছাকাছি থাকছে।

আজ (শুক্রবার) বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো সর্বশেষ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর এসময় সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ৯০৭ জনের।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত বছরের ৮ মার্চ। প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ বছর ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ায় জুন থেকে রোগীর সংখ্যা হু-হু করে বাড়তে থাকে। ২৮ জুলাই একদিনে সর্বোচ্চ ১৬ হাজার ২৩০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল।

গত ৭ জুলাই প্রথমবারের মতো দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে ৫ ও ১০ আগস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যু হয়, যা মহামারির মধ্যে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু। বেশকিছু দিন দুই শতাধিক মৃত্যু হয়। এরপর গত ১৩ আগস্ট মৃত্যুর সংখ্যা ২০০ এর নিচে নামা শুরু করে। দীর্ঘদিন শতাধিক থাকার পর গত ২৮ আগস্ট মৃত্যু ১০০ এর নিচে নেমে আসে।

ইতোমধ্যে দেশের স্বাস্থ্যসেবা ও অর্থনীতিতে মহামারীর অভিঘাত স্পষ্ট। কাজের সুযোগ ও আয় কমায় ক্রয়ক্ষমতা কমেছে অনেক পরিবারের। ক্রয়ক্ষমতা কমায় এসব পরিবারকে পুষ্টির বদলে খাদ্যনিরাপত্তার দিকেই মনোযোগী হতে হয়েছে বেশি।

এসবের নেতিবাচক প্রভাবে প্রকট হয়ে উঠেছে শিশুদের পুষ্টিহীনতাজনিত নানা সমস্যা। বিশেষ করে শিশুদের ওজনস্বল্পতার সমস্যা এ সময় আগের চেয়ে আরো বেড়েছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এক প্রাথমিক জরিপের তথ্য অনুযায়ী, দেশে স্বল্প ওজনের শিশুর (০-৫ বছর বয়স পর্যন্ত) সংখ্যা বেড়েছে ৬ শতাংশীয় পয়েন্টেরও বেশি।

এছাড়া, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৪ সালেও দেশের পাঁচ বছর পর্যন্ত বয়সী শিশুদের ৩৩ শতাংশের ওজন ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে কম। সেখান থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে তা নেমে আসে ২২ দশমিক ৬ শতাংশে। অন্যদিকে গত বছর কভিডকালে স্বল্প ওজনের শিশুর হার ৬ দশমিক ৪ শতাংশ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৯ শতাংশে।

এদিকে, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মহামারীর মধ্যে মানুষের আয় কমেছে। পাশাপাশি নতুন দরিদ্র্য তৈরি হয়েছে। ফলে এসব পরিবারকে অবশ্যই খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনতে হয়েছে।

এ অবস্থায় কোভিড-১৯-এর অভিঘাত থেকে পুনরুদ্ধারসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিটি ক্ষেত্রেই পুষ্টি নিশ্চিতে সুচিন্তিত পরিকল্পনা ও পদক্ষেপ প্রয়োজন বলে মনে করছেন তারা।

অবশ্যই স্বল্প ওজনের শিশুর হার কমাতে অপুষ্টিজনিত ঝুঁকিতে থাকা মা ও শিশুর প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে। অপুষ্টিরোধে পুষ্টিসমৃদ্ধ খাদ্য সরবরাহ যেমন বাড়াতে হবে; এ ক্ষেত্রে আরো বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।#

পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/১৭

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। 

ট্যাগ