ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর হামলায় আমেরিকান অস্ত্রের ব্যবহার
https://parstoday.ir/bn/news/event-i138172-ফিলিস্তিনি_জনগণের_ওপর_হামলায়_আমেরিকান_অস্ত্রের_ব্যবহার
আমেরিকার সিএনএন নিউজ চ্যানেল এক প্রতিবেদনে স্বীকার করেছে যে রাফা শরণার্থী শিবিরে ইসরাইলি সেনাদের হামলা সম্পর্কিত ভিডিও বিশ্লেষণ এবং বিস্ফোরক অস্ত্র বিশেষজ্ঞদের সাক্ষাৎকার থেকে বোঝা যায় যে ফিলিস্তিনিদের তাঁবুতে সাম্প্রতিক মারাত্মক ইসরাইলি হামলায় আমেরিকার তৈরি গোলাবারুদ ব্যবহার করা হয়েছিল।
(last modified 2025-07-29T12:16:04+00:00 )
মে ৩১, ২০২৪ ১৭:৩৮ Asia/Dhaka
  • ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর হামলায় আমেরিকান অস্ত্রের ব্যবহার

আমেরিকার সিএনএন নিউজ চ্যানেল এক প্রতিবেদনে স্বীকার করেছে যে রাফা শরণার্থী শিবিরে ইসরাইলি সেনাদের হামলা সম্পর্কিত ভিডিও বিশ্লেষণ এবং বিস্ফোরক অস্ত্র বিশেষজ্ঞদের সাক্ষাৎকার থেকে বোঝা যায় যে ফিলিস্তিনিদের তাঁবুতে সাম্প্রতিক মারাত্মক ইসরাইলি হামলায় আমেরিকার তৈরি গোলাবারুদ ব্যবহার করা হয়েছিল।

সিএনএন জানিয়েছে, প্রাপ্ত একটি ভিডিওতে দেখা গেছে যে রাফাহ শরণার্থী শিবিরে ইসরাইলি হামলার সময় তাঁবুর কিছু অংশে আগুন লেগে যায় এবং এরপর এই রাতেই বিপুল সংখ্যক নারী, পুরুষ ও শিশু নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে এদিক ওদিক ছোটাছুটি করতে থাকে। উদ্ধারকারীরা ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে যে শিশুদের বের করার চেষ্টা করেছিল তাদের মৃতদেহসহ অনেক পোড়া মৃতদেহও দেখা গেছে।

যদিও পশ্চিমা সংবাদ মাধ্যমগুলো এই ধরনের অপরাধযজ্ঞ যেখানে আমেরিকার মদদ রয়েছে তা লুকালোর চেষ্টা করছে কিন্তু তারপরও এটি আমেরিকার জন্য বড় কলঙ্ক থাকবে। আমেরিকার পূর্ণ সমর্থন নিয়ে এবং তাদের অস্ত্র নিয়ে ইসরাইল ফিলিস্তিনিদের ওপর গণহত্যা চালাচ্ছে তাদের বাড়িঘর থেকে বের করে দিচ্ছে এবং গৃহহীন মানুষদের উপর আক্রমণ চালাচ্ছে। রাফাহ আক্রমণে ইসরাইলের প্রতি আমেরিকার সমর্থনের ফলে সাধারণ ফিলিস্তিনিরা যে অসহায় অবস্থায় পড়েছে তাকে ইসরাইল যুদ্ধ জয় হিসাবে দেখছে। অথচ এটা কোনো বিজয় না বরং কাপুরুষতা। আর এ পরিস্থিতি বাইডেন সরকারের জন্য আরেকটি কলঙ্ক। এ বিষয়ে ইরানের বিশ্লেষক মোহসেন রুইয়ে সেফাত  আমেরিকান সরকারের জন্য আরেকটি কলঙ্ক, বিশেষ করে এই দেশের রাষ্ট্রপতি বলেছেন, রাফাহতে আমেরিকান অস্ত্র নিয়ে ইহুদিবাদীদের অপরাধযজ্ঞ অব্যাহত থাকলেও আমেরিকা নির্লজ্জভাবে দাবি করেছে যে ইসরাইল এখনও রাফাতে বড় ধরনের অভিযান চালায়নি। মার্কিন কর্তৃপক্ষের এমন অমানবিক অবস্থানের অর্থ হলো চলমান নৃশংস অপরাধে আমেরিকা চোখ বন্ধ করে ইসরাইল নামক দানবকে ক্ষিপ্ত কুকুরের মতো রাফাহ ও গাজায় ছেড়ে দিয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং ফিলিস্তিনি চিকিৎসকদের দেয়া তথ্য অনুসারে, দক্ষিণ গাজার শরণার্থী শিবিরে ইসরাইলি হামলায় কমপক্ষে ৪৫ জন নিহত এবং ২০০ জন আহত হয়েছে। ইসরাইলি সেনারা রাফার শরণার্থী শিবিরে ওই নৃশংস হামলা চালায়। ইসরাইলি আগ্রাসনে এ পর্যন্ত ১৩ লাখ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছে। জাতিসংঘ ও ত্রাণসংস্থাসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা এবং বহু দেশের সরকার ইসরাইলের নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে হামলা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে। ইসরাইল শুধু যে কেবল যুদ্ধে বেসামরিক নাগরিকদের ক্ষতি না করা সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন করছে তাই নয় একই সাথে তারা রাফাহ ও গাজা যুদ্ধ বন্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ এবং আন্তর্জাতিক বিচারিক সংস্থাগুলোর প্রস্তাবও উপেক্ষা করেছে। সিএনএনের মতে, গত মঙ্গলবার হামাসের বিরুদ্ধে সাত মাসের যুদ্ধে প্রথমবারের মতো, ইসরাইলি ট্যাঙ্কগুলোকে রাফাহর দিকে অগ্রসর হতে দেখা গেছে, যা কিনা ইসরাইলের বড় ধরণের ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ডের আলামত।

যাইহোক, জো বাইডেন প্রশাসন ইসরাইলের ব্যাপারে তাদের নীতি পরিবর্তন করেনি এবং বিশ্বাস করে যে রাফাহ হামলা এখনও লাল রেখা অতিক্রম করেনি। আসলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইসরাইলের ব্যাপারে জো বাইডেন প্রশাসনের জন্য এ ধরনের অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ এবং নির্বাচনে তিনি ইহুদিবাদী ও ইহুদি লবিদের সমর্থন হারাতে চান না। আর এ কারণে তিনি গণহত্যা চালাতে ইসরাইলকে অস্ত্র দিয়ে যাচ্ছেন। 

অস্ত্র বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, রাফা শরনার্থী শিবিরে সম্প্রতি ইসরাইলি হামলায় GBU-39 নামে পরিচিত একটি ছোট আমেরিকার বোমা দেখাা গেছে যা মার্কিনীরা লুকিয়ে রাখতে পারেনি। স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে,  মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের কাছে বিপুল পরিমাণে অস্ত্র সরবরাহ করছে। 
পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/৩১

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।