লোকসভা নির্বাচন: বিজেপি জোট ২৯৩, কংগ্রেস জোট ২৩৩
পদত্যাগ করলেন মোদি, জোট ঠিক থাকলে প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ ৮ জুন!
টানা তৃতীয়বারের মতো ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছেন বিজেপি নেতা নরেন্দ্র মোদি। আগামী শনিবার (৮ জুন) এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান আয়োজিত হতে পারে বলে রাজনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতের গণমাধ্যম জানিয়েছে।
আজ (বুধবার) দিল্লিতে রাষ্ট্রপতি ভবনে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন মোদী ও তার মন্ত্রিসভার সদস্যরা। রাষ্ট্রপতি পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে শপথগ্রহণ পর্যন্ত মোদীকে দায়িত্ব পালনের অনুরোধ করেছেন
সাত ধাপের লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদির ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ২৪০ আসনে জয়লাভ করেছে। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে দলটির ২৭২ আসন প্রয়োজন ছিল। তবে দলটি তাদের ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ) জোটের জেতা ৫৩ আসনের ওপর নির্ভর করে টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা প্রকাশ করেছেন।
অপরদিকে, ভারতের বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার ও অন্ধ্র প্রদেশের তেলেগু দেশম পার্টির (টিডিপি) প্রধান চন্দ্রবাবু নাইডু বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের বৈঠকে যোগ দেবেন। আজ নয়াদিল্লিতে এই বৈঠক আয়োজনের কথা রয়েছে। কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন বিরোধী 'ইন্ডিয়া' জোটের নেতারাও পরবর্তী করণীয় নির্ধারণে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন।
নির্বাচন কমিশনের হিসাব অনুসারে, কংগ্রেস এককভাবে ৯৯টি আসনে জয়ী হয়েছে। ২০০৯ সালের পর এটি দলটির সবচেয়ে ভালো ফলাফল। আর দলটির নেতৃত্বাধীন জোট ২৩৪ আসনে জয়ী হয়েছে। তারাও নীতীশ-নাইডুকে কাছে টানার চেষ্টা করতে পারে। এই দুই দলের সম্মিলিত আসন ২৮টি। নীতীশ-নাইডু যেন এনডিএ জোট থেকে সরে আসেন, তা তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করা হতে পারে।
নীতীশের বারবার পক্ষ বদলের ইতিহাস আছে। অন্যদিকে, ২০১৮ সালে এনডিএ জোট থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন নাইডু। এবারের লোকসভা নির্বাচনের আগে তিনি আবার বিজেপির সঙ্গে হাত মেলান। বিশ্লেষকদের ধারণা, আজকে দিন শেষেই জানা যাবে বিজেপি সরকার গঠন করতে যাচ্ছে না কী ভারতবাসীদের জন্য অন্য কোনো চমক অপেক্ষা করছে।
সরকার গড়লেও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদিকে এখন থেকে হতে হবে পরমুখাপেক্ষী। তাঁর ঘাড়ে প্রতিনিয়ত শ্বাস ফেলবে বিরোধী জোট 'ইন্ডিয়া'।
এই ফলে কংগ্রেস স্বভাবতই উৎফুল্ল। গতকাল বিকেলে দলীয় দপ্তরে সোনিয়া গান্ধী, রাহুল ও প্রিয়াঙ্কাকে পাশে নিয়ে সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এই ফল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রাজনৈতিক ও নৈতিক পরাজয়। গোটা নির্বাচনটাই বিজেপি লড়েছিল মোদির নামে। যাবতীয় গ্যারান্টিও দিয়েছিলেন মোদি। এটা ছিল তাঁর পক্ষে অথবা বিপক্ষের গণভোট। জনতা তাঁর বিরুদ্ধেই মত দিয়েছে।
খাড়গে ও রাহুল দুজনেই জানিয়েছেন, ইন্ডিয়া জোটের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হবে বুধবার (আজ)। সবার সঙ্গে আলোচনা করে সেখানে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে। ওয়েনাড ও রায়বেরিলি, দুই জেতা আসনের কোনটি রাখবেন কোনটি ছাড়বেন—সেই সিদ্ধান্তও সবার সঙ্গে আলোচনার পর নেবেন বলে রাহুল জানান। দুই নেতাই বলেন, এই জয় জনতার জয়।#
পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/৫