কোমলমতি শিক্ষার্থীদের প্রাণহানির ঘটনা খুবই বেদনাদায়ক ও দুঃখজনক: প্রধানমন্ত্রী
(last modified Wed, 17 Jul 2024 14:20:11 GMT )
জুলাই ১৭, ২০২৪ ২০:২০ Asia/Dhaka
  • জাতির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
    জাতির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সংঘর্ষে সারা দেশে যেসব প্রাণহানি ঘটেছে প্রতিটি ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ (বুধবার) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, "যারা হত্যাকাণ্ড, লুটপাট ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছে এরা যেই হোক না কেন, তারা যেন উপযুক্ত শাস্তি পায় সে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমি আরও ঘোষণা করছি, হত্যাকাণ্ডসহ যে সকল অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেছে, সুষ্ঠু বিচারের ও ন্যায় বিচারের স্বার্থে সে সকল বিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত করা হবে।"

আজ (বুধবার) সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, কাদের উস্কানিতে সংঘর্ষের সূত্রপাত হলো, কারা কোন উদ্দেশ্যে দেশকে একটি অরাজক পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিল, তা তদন্ত করে বের করা হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, "কিছু মহল কোটা আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছে। এর ফলে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে, তা খুবই বেদনাদায়ক ও দুঃখজনক।"

তিনি আরও বলেন, "একটি আন্দোলন ঘিরে অহেতুক কতগুলো মূল্যবান জীবন ঝরে গেল। আপনজন হারানোর বেদনা যে কত কষ্ট, তা আমার চেয়ে আর কেউ বেশি জানে না।"

কোটা সংস্কারের বিষয়ে ছাত্রসমাজ উচ্চ আদালত থেকে ন্যায়বিচারই পাবে- মন্তব্য করেপ্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, "২০১৮ সালে ছাত্রসমাজের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথা বাতিল করে একটা পরিপত্র জারি করে। পরবর্তীতে মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে কোটা বহাল রাখার পক্ষে উচ্চ আদালত ২০১৮ সালের জারি করা সরকারের পরিপত্র বাতিল করে দেয়। সরকারের পক্ষ থেকে পরিপত্র বহাল রাখার জন্য সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করা হয় এবং মহামান্য আদালত শুনানির দিন ধার্য করেন। এই সময় ছাত্ররা কোটা সংস্কারের দাবি নিয়ে আবারও আন্দোলন শুরু করে। এই আন্দোলনের শুরু থেকেই সরকার যথেষ্ট ধৈর্য্য ও সহনশীলতা প্রদর্শন করেছে। বরং আন্দোলনকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে পুলিশ সহযোগিতা করে। মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে যখন আন্দোলনকারীরা সারকলিপি দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে, সেক্ষেত্রে তাদের সুযোগটা দেওয়া হয় এবং নিরাপত্তারও ব্যবস্থা নেওয়া হয়।"

তিনি আরও বলেন, "অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হলো কিছু মহল এই আন্দোলনের সুযোগটা নিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত উচ্চাভিলাস চরিতার্থ করার সুযোগ নিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়। এর ফলে এই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ঘিরে যে ঘটনা ঘটেছে, তা খুবই বেদনাদায়ক ও দুঃখজনক। অহেতুক কতগুলো মূল্যবান জীবন ঝরে গেল। আপনজন হারাবার বেদনা যে কী কষ্টের, তা আমার থেকে বেশি আর কে জানে। যারা মৃত্যুবরণ করেছে তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। আমি প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানাই।"

প্রসঙ্গত, চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলন গতকাল মঙ্গলবার বেশ সহিংস রূপ নেয়। এদিন ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষে ৬ জন নিহত হন। আহত হন কয়েকশ আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মী। এ অবস্থায় মঙ্গলবারই সারা দেশের স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আজ বুধবার বন্ধ ঘোষণা করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা হল ও ক্যাম্পাস ত্যাগ না করার ঘোষণা দিয়েছেন। সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজধানী ঢাকাসহ ৬ জেলায় মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।#

পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/১৭

ট্যাগ