আইসিজে'র রায় প্রত্যাখ্যান নেতানিয়াহু'র
ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরাইলের উপস্থিতি অবৈধ: জাতিসংঘের শীর্ষ আদালতের রায়
১৯৬৭ সালে অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইহুদিবাদী ইসরাইলের উপস্থিতিকে আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী বলে রায় দিয়েছে জাতিসংঘের শীর্ষ আদালত।
গতকাল (শুক্রবার) ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অফ জাস্টিস বা আইসিজে'র সভাপতি নওয়াফ সালাম ৮৩ পৃষ্ঠার রায়ে বলেছেন, "অধিকৃত পশ্চিম তীর এবং পূর্ব জেরুজালেমে ইসরাইলের বসতি স্থাপনের কার্যক্রম বন্ধ করা উচিত এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এসব অঞ্চল ও গাজা উপত্যকায় তেল আবিব তার 'অবৈধ' উপস্থিতির অবসান ঘটাতে বাধ্য।"
রায়ে অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরাইলের বেআইনি উপস্থিতিকে আইনি স্বীকৃতি না দেওয়ার জন্য জাতিসংঘসহ সকল রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অনুরোধে নেদারল্যান্ডসের হেগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক বিচার আদালত গত বছরের শুরু থেকে গাজা, পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে দখলদারিত্ব বিষয়ক তদন্ত করে আসছিল।আদালতকে বিশেষভাবে ফিলিস্তিনিদের প্রতি ইসরাইলের আচরণ এবং দখলদারিত্বের আইনি অবস্থা সম্পর্কে মতামত দিতে বলা হয়েছিল।
ইসরাইল ১৯৬৭ সাল থেকে পশ্চিম তীর এবং পূর্ব জেরুজালেমে প্রায় সাত লাখ ইহুদির জন্য প্রায় ১৬০টি বসতি নির্মাণ করেছে। আদালত বলেছে, বসতিগুলো অবৈধ।
হেগের আদালত আরও বলেছে যে, ইসরাইল ফিলিস্তিনিদের প্রাকৃতিক সম্পদ অবৈধভাবে শোষণ করেছে এবং তাদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার লঙ্ঘন করেছে।
এদিকে, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আইসিজে'র রায় প্রত্যাখ্যান করে এক বিবৃতিতে বলেছেন, “ইহুদি জনগণ তাদের নিজেদের ভূমিতে দখলদার নয়, আমাদের চিরন্তন রাজধানী জেরুজালেমে নয়, আমাদের পৈতৃক ঐতিহ্য জুডিয়া ও সামরিয়াতেও (পশ্চিম তীর) নয়। হেগের সিদ্ধান্ত এই ঐতিহাসিক সত্যকে বিকৃত করবে না এবং একইভাবে, আমাদের জন্মভূমির সমস্ত অংশে ইসরাইলি বসতি স্থাপনের বৈধতা নিয়ে বিতর্ক করা যাবে না।”
১৯৬৭ সালে মধ্যপ্রাচ্যের আল-আকসা অঞ্চলে ইসরাইল এবং ফিলিস্তিনের সীমানা নির্ধারণ করে দিয়েছিল আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। কিন্তু মৌখিকভাবে তাতে স্বীকৃতি দিলেও ইসরাইল প্রকৃতপক্ষে সেই সীমানা লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে দেশটির বিরুদ্ধে।
আইসিজের তদন্তে উঠে এসেছে, ১৯৬৭ সাল থেকেই বিভিন্নভাবে পশ্চিম তীর এবং পূর্ব জেরুজালেমের সীমানাভুক্ত এলাকা দখল করছে ইসরাইল। আবাসন নির্মাণের মাধ্যমে সেখানে ইহুদি বসতকারীদেরও নিয়ে আসা হচ্ছে। সেই সঙ্গে নানা বৈষম্যমূলক নীতি গ্রহণের মাধ্যমে এই দুই অঞ্চলের ফিলিস্তিনিদের চাপে রাখার কৌশলও বজায় রেখেছে অবৈধ এই দেশটি।#
পার্সটুডে/এমএআর/২০