নির্বাহী আদেশে বুধবারই নিষিদ্ধ হচ্ছে জামায়াত-শিবির: আইনমন্ত্রী
(last modified Tue, 30 Jul 2024 09:59:46 GMT )
জুলাই ৩০, ২০২৪ ১৫:৫৯ Asia/Dhaka
  • আনিসুল হক
    আনিসুল হক

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে আগামীকাল বুধবারের মধ্যে নির্বাহী আদেশে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। আজ (মঙ্গলবার) সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা জানান।

আইনমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাকে নির্দেশনা দিয়েছেন আগামীকালকের মধ্যে একটি ব্যবস্থা নিতে। আমি কিছুক্ষণ পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে এ নিয়ে বসব এবং সেখানে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। কোন আইনি প্রক্রিয়ায় হবে, তা যখন আমরা সিদ্ধান্ত নেব তখন বলব। 

বর্তমানে কোটা আন্দোলন চলছে, জামায়াত-শিবিরের মতো একটি শক্তিশালী সংগঠন এ মুহূর্তে নিষিদ্ধ করা হলে সরকার কোনো ঝামেলায় পড়বে কি না- এমন প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, যারা কোটা আন্দোলন করেছে তারা কিন্তু বলেছে, সহিংসতার সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততা নেই। সেক্ষেত্রে আমাদের কাছে তথ্য-উপাত্ত আছে। জামায়াত, শিবির, বিএনপি ও ছাত্রদল যারা জঙ্গি, তারাই এটি করেছে। এ দলকে যদি নিষিদ্ধ করা হয়, তাহলে দেশের আইনশৃঙ্খলা এবং রাজনীতিরও অনেক উন্নতি হবে। 

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে মন্ত্রী আরও বলেন, কোনো দলকে যখন নিষিদ্ধ করা হয়, তখন তা নির্বাহী আদেশেই হয়, বিচার বিভাগীয় আদেশে হয় না। যুদ্ধাপরাধের দায়ে বিচার এক কথা এবং জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা আরেক কথা। 

এর আগে সোমবার গণভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয় ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় জোট। বৈঠকের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধের আইনগত দিক ভালোভাবে দেখে বাস্তবায়ন করবে সরকার। যেন আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে আর কোনো সুযোগ না পায়।

ডা. শফিকুর রহমান

এদিকে, আজ (মঙ্গলবার) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ১৪ দলের সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়ে জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, জামায়াত নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত বেআইনি, এখতিয়ার বহির্ভূত ও সংবিধান পরিপন্থী।

বিবৃতিতে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘২৯ জুলাই ১৪ দলের বৈঠকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধের যে বেআইনি, এখতিয়ার বহির্ভূত ও সংবিধান পরিপন্থী সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ১৪ দলীয় জোট একটি রাজনৈতিক প্লাটফর্ম। একটি রাজনৈতিক দল বা জোট অন্য একটি রাজনৈতিক দলের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। বাংলাদেশের আইন ও সংবিংধান কাউকে এ এখতিয়ার দেয়নি। কোনো দল বা জোট অন্য কোনো দলকে নিষিদ্ধ করার ধারা চালু হলে এক দল অন্য দলকে নিষিদ্ধ করতে থাকবে। তখন রাষ্ট্রের শৃঙ্খলা বলে কিছু থাকবে না।’

কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্রলীগ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে দাবি করে জামায়াতে ইসলামীর আমীর বলেন, “নিজেদের অপকর্মের দায় এড়ানোতে সরকার শুরু থেকেই মিথ্যাচার করছে। রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে জামায়াত ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের ওপর দোষারোপ করে বক্তব্য দিচ্ছে সরকার।”

উচ্চ আদালতের রায়ে ২০১৩ সালে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। জামায়াতের পক্ষ থেকে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়েছিল। তবে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর জামায়াতের পক্ষের আপিল খারিজ করে দেন। ফলে দলটির নিবন্ধন বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল রয়েছে।#

পার্সটুডে/এমএআর/৩০

 

ট্যাগ