একই ব্যক্তি পর পর দুইবার প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না: জামায়াতে ইসলামী
(last modified Wed, 09 Oct 2024 08:46:10 GMT )
অক্টোবর ০৯, ২০২৪ ১৪:৪৬ Asia/Dhaka
  • একই ব্যক্তি পর পর দুইবার প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না: জামায়াতে ইসলামী

নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, আইনশৃঙ্খলা, শিক্ষা এবং বিনোদনসহ দেশের সমগ্র বিষয়ে রাষ্ট্র সংস্কারে ১০টি প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী। দলটি বলেছে, সংবিধান সংস্কারের ক্ষেত্রে একই ব্যক্তি পর পর দুইবার প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না।

আজ (বুধবার) দুপুর সোয়া ১২টায় রাজধানীর গুলশানে হোটেল ওয়েস্টিনে আয়োজিত 'রাষ্ট্র সংস্কার প্রস্তাবনা' শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এসব প্রস্তাব তুলে ধরেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের। এসময় উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানসহ দলটির জ্যেষ্ঠ নেতারা।

সংবাদ সম্মেলনে ডা. আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, নির্বাচনকে সুষ্ঠু করার জন্য নির্বাচন সেক্টরের অনেক সংস্কার প্রয়োজন। পাশাপাশি বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে আলাদা করতে হবে। প্রয়োজনে আইনের সংশোধন করতে হবে। একইসঙ্গে সংসদে বিরোধী দলের ডেপুটি স্পিকার নিয়োগ দিতে হবে। স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয় প্রভাবমুক্ত রাখতে হবে। আইনশৃঙ্খলা সংস্কারের মধ্যে পুলিশের ব্রিটিশ আইন বাতিল করতে হবে। পুলিশের নিয়োগে দলীয় হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে। পুলিশ ট্রেনিংয়ে ধর্মীয় শিক্ষার ব্যবস্থা রাখতে হবে। পুলিশের কাছে মারণাস্ত্র দেওয়া যাবে না। পাশাপাশি র‍্যাবে যারা গত ১৫ বছর কাজ করেছেন তাদের ফিরিয়ে আনা যাবে না এবং র‍্যাবের প্রতি মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে সংস্কার করতে হবে।  

তিনি আরও বলেন, সরকারি চাকরির আবেদনে কোনো ফি রাখা যাবে না। চাকরির ক্ষেত্রে প্রথমে ৩৫ বছর, পরবর্তীতে ৩৩ বছর আর অবসরের বয়স ৬২ বছর রাখতে হবে। যারা বিগত সরকারের কথায় নিয়োগ পেয়েছে তাদের বাতিল করতে হবে।  

জামায়াতের এই নেতা বলেন, মন্ত্রণালয়ভিত্তিক দুর্নীতি দমন কমিশন থাকতে হবে।  

সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে তিনি বলেন, সংবিধান সংস্কারের ক্ষেত্রে একই ব্যক্তি পর পর দুইবার প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না।  

শিক্ষার সংস্কারের বিষয়ে তিনি বলেন, প্রতি শ্রেণীতে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)- এর পাঠ থাকতে হবে এবং কারিগরি শিক্ষাকে মূলধারায় আনার ব্যবস্থা করতে হবে।  

বিনোদন জগতের সংস্কারের বিষয়ে তিনি বলেন, নাটক, সিনেমায় অশ্লীলতা বাদ দিতে হবে এবং কোনো ধর্মীয় বিষয়ে আঘাত আনে এমন কিছু করা যাবে না।  

পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সঙ্গে পানিবণ্টনের বিষয়ে তিনি বলেন, জাতিসংঘের সহায়তায় ভারত, চীন, নেপাল ও মিয়ানমারের মধ্যে পানিবণ্টন সমঝোতা চুক্তি করতে হবে।

জামায়াতে ইসলামী জানিয়েছে, এই ১০ খাতের প্রস্তাব শুধুমাত্র অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য; নির্বাচিত কোনো সরকারের জন্য নয়। এই সরকারের কাছে আসলে আমাদের মোট ৪১টি প্রস্তাব। তার ১০টি গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার প্রস্তাব আজ গণমাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে।

খাতগুলো হলো- আইন ও বিচার বিষয়ক সংস্কার, সংসদ বিষয়ক সংস্কার, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার, আইনশৃঙ্খলা সংস্কার (পুলিশ বাহিনীর সংস্কার, র‍্যাব বিষয়ক সংস্কার), জনপ্রশাসন সংস্কার, দুর্নীতি, সংবিধান সংস্কার, শিক্ষা ও সংস্কৃতি সংস্কার (বিরাজমান সমস্যার আলোকে শিক্ষা সংস্কার প্রস্তাব, সংস্কৃতি সংস্কার), পররাষ্ট্র বিষয়ক সংস্কার ও ধর্ম মন্ত্রণালয় সংস্কার।

পরে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, মূলত তাঁদের সংস্কার প্রস্তাব ৪১ দফা, সেটা বিস্তারিত। এখন তাঁরা সংক্ষেপে ১০ দফা প্রস্তাব দিয়েছেন। এই মুহূর্তে অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য সেগুলো প্রাধান্য দেওয়া দরকার, সেগুলো দিয়েছেন। পরবর্তী নির্বাচিত সরকার এসে বাকিগুলো দেখবে।

এ প্রসঙ্গে শফিকুর রহমান বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার সব কটি করে দিলে নির্বাচিত সরকার এসে কী করবে। আমরা নির্বাচিত সরকারকেও পরীক্ষা করতে চাই। যখন আমরা বিরোধী দলে থাকি, আমাদের কণ্ঠ-আওয়াজ হয় এক রকমের, আর সরকারে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ১৮০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে ঘুরে যাই। তাই আমিসহ আমাদের সবাইকে পরীক্ষা করতে চাই। আমরা আগের জায়গাতেই আছি, নাকি এত বড় একটা পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে আমাদেরও মানসিকতার কিছু পরিবর্তন হয়েছে, সেটা আমরা একটু দেখতে চাই।’#

পার্সটুডে/এমএআর/৯

ট্যাগ