শেখ হাসিনা ভারতে থাকলেও বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট হবে না: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
(last modified Mon, 12 Aug 2024 12:11:10 GMT )
আগস্ট ১২, ২০২৪ ১৮:১১ Asia/Dhaka
  • মো. তৌহিদ হোসেন
    মো. তৌহিদ হোসেন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে থাকলেও বাংলাদেশের সঙ্গে নয়াদিল্লির সম্পর্ক নষ্ট হবে না বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

আজ (সোমবার) বিকেলে বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এমন মন্তব্য করেন। ব্রিফিংয়ে ভারত, আমেরিকা, ব্রিটেন, চীন, রাশিয়া, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ প্রায় ৬০টি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা যোগ দেন।

ব্রিফিং শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, 'উনি (শেখ হাসিনা) সেখানে থাকলে বা কেউ কোনো দেশে থাকলে সেই দেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক নষ্ট হবে কেন, নষ্ট হওয়ার কোনো কারণ নেই। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক অনেক বড় বিষয়, এটা স্বার্থের সম্পর্ক। বন্ধুত্ব স্বার্থের জন্য। বাংলাদেশে ভারতের স্বার্থ আছে, ভারতে আমাদের স্বার্থ আছে। আমরা সেই স্বার্থকে ফলো করব এবং আমাদের সুসম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করব।'

তিনি বলেন, 'যেই কাউন্সিল এখন দায়িত্বে আছে, ক্ষমতা শব্দ ব্যবহার করতে চাই না, যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সেটা পালন করে সরে যাব। আমি নিশ্চয়তা দিতে পাই এই কাউন্সিল অন্য কারও জন্য কাজ করছে না, শুধু বাংলাদেশের জন্য কাজ করছে। আমার নিজের ব্যাপারে তো আমি নিশ্চয়তা দিতে পারিই, বাকিদের যা দেখেছি তাতে কেউই অন্য কোনো দেশের জন্য কাজ করছে না।

তিনি দাবি করেন, দেশের পরিস্থিতি বাইরের কারও নিয়ন্ত্রণে নেই, উপদেষ্টা পরিষদে দায়িত্বপ্রাপ্তরাই দেশের জন্য কাজ করছেন।

ইউরোপ-আমেরিকা-চীন-ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, 'আমরা কোনো কিছু অ্যাবানডনড করছি না। যাদের সঙ্গে যে ধরনের চুক্তি বা কমিটমেন্ট আছে সেগুলো অবশ্যই আমাদের রক্ষা করতে হবে। আমরা চেষ্টা করব আমাদের স্বার্থ যেন সব ক্ষেত্রে এগিয়ে যায়। যেখানে আমাদের স্বার্থ বিঘ্নিত হয়েছে, সেখানে আমরা অবশ্যই চেষ্টা করব...এমন নয় যে থেমে আছে।'

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে ভারতে চালানো প্রপাগান্ডা সম্পর্কে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, 'যে প্রপাগান্ডাগুলো চলছে সেগুলোর কাউন্টার দিতে হবে। সমাজের যারা রিপ্রেজেন্টেটিভ তাদের কাছ থেকে আমরা এটা প্রত্যাশা করি। আপনারা যা দেখছেন সেটা মিডিয়াতে প্রচার করুন। তারা একটা পজিশন নিয়েছে ভুল তথ্য দেওয়া হচ্ছে...এই কাউন্সিল বলেছে যে কোনো ধরনের ভায়োলেন্স, মানুষের ক্ষতি করা, আগুন দেওয়া...কোনো কিছুকেই টলারেট করা হবে না। প্রতিটা ক্ষেত্রে ইনভেস্টিগেট করা হবে এবং দোষীদের শাস্তি দেওয়া হবে। আমাদের ঐকান্তিক চেষ্টা থাকবে কেউ যেন ছাড় না পায়।'

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'বিদেশি কূটনৈতিকদের কাছে স্পষ্ট করেছি যে এই সরকারের আলটিমেট লক্ষ্য একটা নির্বাচন অনুষ্ঠান করে ক্ষমতা অর্পণ করা। এ নিয়ে কোনো সন্দেহ করার সুযোগ নেই। তবে আমরা সময়ের বিষয়ে বলছি না। এখন যে সিচুয়েশন তাতে দেশটাকে লাইনে নিয়ে আসা যেমন, নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, স্বাভাবিক জীবনযাপন নিশ্চিত করা, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড যেন শুরু হয়, এগুলো আগামী এক মাসের কাজ। আরও প্রশ্ন আছে। যারা এ পরিবর্তন এনেছে তাদের কিছু পয়েন্ট আছে। এতগুলো জীবন তারা দিয়েছে পূর্বের অবস্থায় ফিরে যাওয়ার জন্য না। কাজেই কিছু রিফর্মের প্রয়োজন হবে। সেই রিফর্মের প্রয়োজনে ঠিক যেটুকু সময় থাকা দরকার, ততটুকু সময়ই থাকব, বেশিও থাকব না কমও থাকব না। যেটুকু সময় প্রয়োজন, সেটুকুই থাকব। ইয়াং জেনারেশনের মৌলিক দাবিগুলো পূরণ করে দিতে হবে।'

এ সময় বিদেশি কূটনীতিকরা নির্বাচিত সরকারেও যুবকদের প্রতিনিধিত্ব আশা করেছেন বলে জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। 

পার্সটুডে/এমএআর/১২

ট্যাগ