শ্রীলঙ্কার দশম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন বামপন্থি নেতা অনূঢ়া দিশানায়েকে
শ্রীলঙ্কার দশম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার (এনপিপি) জোটের নেতা অনূঢ়া কুমারা দিশানায়েকে। শপথ নিয়ে তিনি রাজনীতিবিদদের প্রতি জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস পুনরুদ্ধারের অঙ্গীকার করেছেন।
আজ (সোমবার) রাজধানী কলম্বোর ঔপনিবেশিক যুগের প্রেসিডেনশিয়াল সচিবালয়ে শপথ নেন মার্ক্সবাদী পার্টির নেতা অনূঢ়া। ৫৫ বছর বয়সী অনূঢ়াকে শপথ পড়ান দেশটির প্রধান বিচারপতি। শপথ অনুষ্ঠানে আইনপ্রণেতা, বৌদ্ধ ধর্মযাজক, সামরিক বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
শপথ নেওয়ার পর অনূঢ়া বলেন, ‘রাজনীতিবিদদের প্রতি জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধার করার জন্য আমি আমার যথাসাধ্য চেষ্টা করব।’
এনপিপি জোটভুক্ত দল জনতা বিমুক্তি পেরামুনার (জেভিপি) প্রধান অনূঢ়া বলেন, ‘আমি বাজিকর নই, আমি জাদুকর নই। কিছু জিনিস আছে, যা আমি জানি। কিছু জিনিস আছে, যা আমি জানি না। তবে আমি সর্বোত্তম পরামর্শ চাইব। আমি আমার সেরাটাই করব। এর জন্য আমার সবার সমর্থন প্রয়োজন।’
শ্রীলঙ্কায় গত শনিবার অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিপুল বিজয় অর্জন করেন বামপন্থী মার্কসবাদী পার্টির নেতা দিশানায়েকে। স্থানীয় সময় গতকাল (রোববার) রাত ৮টার দিকে দেশটির নির্বাচন কমিশন তাঁকে জয়ী হিসেবে ঘোষণা করে।
নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী, অনূঢ়া কুমারা দিশানায়েকে ৪২ দশমিক ৩১ শতাংশ ভোট পেয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিরোধী দল জন বালাওয়াগার (এসজেবি) নেতা সাজিথ প্রেমাদাসা পেয়েছেন ৩২ দশমিক ৭৬ শতাংশ ভোট। মাত্র ১৭ শতাংশ ভোট পেয়েছেন ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে।
শ্রীলংকার ইতিহাসে এই প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রথম ধাপে কোনও প্রার্থীই প্রয়োজনীয় ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পাননি। তাই নিয়ম অনুযায়ী বিজয়ী নির্ধারণের জন্য দ্বিতীয় দফায় ভোট গণনা করা হয়।
তবে প্রথম দফার ভোট গণনায় এগিয়ে ছিলেন এই ৫৫ বছর বয়সী বামপন্থি রাজনীতিবিদ দিশানায়েকে। দ্বিতীয় দফার ভোট গণনা শেষে ভোটে এগিয়ে থাকা দিশানায়েকেকেই বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
খাদ্য, জ্বালানি, ওষুধসহ নিত্যপণ্যের তীব্র সংকটের প্রতিবাদে ২০২২ সালে রাজপথে নামেন শ্রীলঙ্কার সাধারণ মানুষ। প্রবল অসন্তোষের মুখে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ গণ-আন্দোলনে রূপ নেয়। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ হাজারো মানুষ ঢুকে পড়েন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের বাসভবনে। গোতাবায়া দেশ ছেড়ে পালান।
রনিল বিক্রমাসিংহেকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করে দেশটির পার্লামেন্ট। এখন নির্বাচনে জয়ী হয়ে শপথ নেওয়ার মধ্য দিয়ে অনূঢ়া দেশটির বিদায়ী প্রেসিডেন্ট রনিলের স্থলাভিষিক্ত হলেন।#
পার্সটুডে/এমএআর/২৩