ভারতে সালমান রুশদির 'স্যাটানিক ভার্সেস' বিক্রি শুরু, মুসলমানদের প্রবল আপত্তি
-
সালমান রুশদি
ইসলামবিদ্বেষী ব্রিটিশ লেখক সালমান রুশদির লেখা বিতর্কিত উপন্যাস 'দ্য স্যাটানিক ভার্সেস' বিক্রিতে প্রবল আপত্তি জানিয়েছে ভারতের বিভিন্ন মুসলিম সংগঠন। দিল্লি হাইকোর্টে গত নভেম্বরে নিষেধাজ্ঞা বাতিলের নির্দেশ দেওয়ার পর সম্প্রতি দিল্লিতে বইটির বিক্রি শুরু হয়েছে।
প্রকাশনা সংস্থার পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে বই বিক্রির কথা জানানো হয়েছে। এর প্রতিক্রিয়ায় অল ইন্ডিয়া শিয়া পার্সোনাল ল বোর্ডের সচিব মাওলানা ইয়াসুফ আব্বাস বলেছেন, ‘ভারত সরকারের কাছে নিষেধাজ্ঞা সঠিকভাবে প্রয়োগ করার দাবি জানাচ্ছি। জমিয়তে উলেমায়ে হিন্দের আইনি পরামর্শদাতা মাওলানা কাব রশিদি রুশদির বইয়ের পুনরায় বিক্রি শুরু হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘বাকস্বাধীনতা যদি কারো ভাবাবেগে আঘাত কর তবে তার আইনত অপরাধ।’ তাই স্যাটানিক ভার্সেস বইয়ের বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি জানিয়েছেন ভারত সরকারের কাছে।
১৯৮৮ সালের সেপ্টেম্বরে তার বিতর্কিত স্যাটানিক ভার্সেস অর্থাৎ 'শয়তানের পদাবলী' বইটি বিশ্বজুড়ে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছিল। তার এ লেখার প্রতিবাদে সমগ্র মুসলিম বিশ্বে তীব্র সমালোচনার ঝড় ওঠে। মুসলমানদের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে বিশ্ব সাম্রাজ্যবাদী শয়তানি চক্রের অর্থ সহায়তা ও তাদের উস্কানিতে এ বইটি লেখা হয়েছিল। ১৯৮৮ সালে রাজীব গান্ধী প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন সালমান রুশদির লেখা এই বইটিকে ভারত সরকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল।
ইসলামবিদ্বেষী বই লেখার কারণে ইরানের ইসলামী বিপ্লবের নেতা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনি (রহ.) ১৯৮৯ সালে এক ফতোয়ার মাধ্যমে রুশদিকে মৃত্যুদণ্ড দেন এবং তাকে হত্যা করার জন্য সারা বিশ্বের মুসলমানদের প্রতি আহ্বান জানান। রুশদির মাথার জন্য ২৮ লাখ মার্কিন ডলারের পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়। এই ঘোষণার পর ব্রিটেন সরকার তাকে সার্বক্ষণিক পুলিশি প্রহরায় রাখে। রুশদি নিজের প্রাণ বাঁচানোর জন্য প্রথম ছয় মাসে অন্তত ৫৬ বার নিজের বাসভবন ও ঠিকানা পরিবর্তন করে এবং ২০০২ সাল অর্থাৎ ১৩ বছর পর্যন্ত লোকচক্ষুর অন্তরালে গা ঢাকা দিয়ে ছিলেন।
২০২২ সালের আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে একটি মঞ্চে বক্তব্য রাখার সময় হামলার শিকার হন রুশদি। এই হামলায় তিনি একটি চোখে দৃষ্টিশক্তি হারান।#
পার্সটুডে/এমএআর/২৬