ক্ষোভ বামফ্রন্টেই
বিজেপি ও মোদিকে 'ফ্যাসিস্ট’ বলা যাবে না: কর্মীদের প্রতি সিপিএমের ‘নির্দেশ’
ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে 'ফ্যাসিবাদী' বলা যাবে না বলে মন্তব্য করেছে বামপন্থি দল সিপিএম। দলটির ২৪তম পার্টি কংগ্রেসের প্রাক্কালে দলের পক্ষে রাজনৈতিক প্রস্তাবে একথা বলা হয়েছে।
প্রস্তাবে বলা হয়েছে, মোদি সরকারের ১১ বছরের কাজকর্মে নব্য ফ্যাসিস্ট বৈশিষ্ট্যের বিচ্ছুরণ ঘটলেও সরকারকে ফ্যাসিস্ট আখ্যা দেওয়া হচ্ছে না। প্রস্তাব অনুযায়ী, বিরোধীদের দমানো ও গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধে কর্তৃত্ববাদী মোদি সরকারের চাপ ও প্রতিক্রিয়াশীল হিন্দুত্ববাদের প্রসারের মধ্য দিয়ে নব্য ফ্যাসিবাদী বৈশিষ্ট্যগুলোর বিচ্ছুরণ দেখা দিচ্ছে।
সিপিএমের আদর্শগত মুখপত্র বলে পরিচিত চিন্তা সাপ্তাহিকে প্রস্তাবের ব্যাখ্যা করে বলা হয়েছে, বিজেপি ও আরএসএসের কাজকর্মে নব্য ফ্যাসিবাদী লক্ষণ থাকলেও মোদি সরকারকে ফ্যাসিস্ট বা নব্য ফ্যাসিস্ট বলা হচ্ছে না। ভারত সরকারকে ওভাবে চিত্রায়িতও করা হচ্ছে না।
এপ্রিলে কেরলে সিপিএমের 'পার্টি কংগ্রেস' অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। তার আগে দলের অবস্থান স্পষ্ট করতে বিভিন্ন রাজ্যের কর্মীদের উদ্দেশে একটি ‘নোট’ পাঠিয়েছে বামপন্থী দলটি।
সিপিএমের ওই নোটে বলা হয়েছে, “বিজেপি-আরএসএস যদি নিয়ন্ত্রণে না থাকে, তাহলে ‘হিন্দুত্ববাদী কর্পোরেট কর্তৃত্ববাদ’ প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। আগামী দিনে যা নব্য-ফ্যাসিবাদে পরিণত হতে পারে। দলের নোটে বিজেপিকে ‘ফ্যাসিবাদী আরএসএসের রাজনৈতিক ফ্রন্ট’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। তবে ভারতীয় রাষ্ট্র বা সরকারকে ফ্যাসিবাদী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়নি।
সিপিএমের এই এই নোট নিয়ে বামফ্রন্টের ভেতরেই বিতর্ক চলছে। সিপিআই এবং লিবারেশনের মতো দলগুলো বরাবর বলে আসছে মোদি সরকার ফ্যাসিবাদী। লিবারেশনের বক্তব্য, ১০ বছরের মোদি শাসনে দেশে ইতিমধ্যেই ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠিত। সিপিআইয়ের বক্তব্যও অনেকটা একইরকম। সিপিআই বলছে, “অবিলম্বে সিপিএমের এই অবস্থান থেকে সরে আসা উচিত।”
কংগ্রেস আবার সরাসরি আক্রমণ করছে সিপিএমকে। কেরল কংগ্রেসের এক নেতা বলছেন, “সিপিএমের এই বোধোদয় থেকেই বোঝা যাচ্ছে সিপিএম এবার সরাসরি মোদির সঙ্গে জোট করে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে।” বস্তুত এ রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছে, রাজ্যে বিজেপি এবং বামেদের একটি অঘোষিত আঁতাঁত রয়েছে। মোদি সরকারের প্রতি সিপিএমের এই নরম মনোভাব সেই আঁতাঁত তত্ত্বকেই নতুন করে জাগিয়ে তুলবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।#
পার্সটুডে/এমএআর/২৫