তেহরানে বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে 'জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস' পালিত
-
বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মঞ্জুরুল করিম খান চৌধুরী
ইরানের রাজধানী তেহরানে বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে 'জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস ২০২৫' উপলক্ষে আলোচনা সভা ও প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ (মঙ্গলবার) সকাল ১১টায় দূতাবাসের সম্মেলন কক্ষে প্রথম সচিব ও দূতালয় প্রধান ওয়ালিদ ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠান শুরু হয়। বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত ও পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার বাণী পাঠ করা হয়। রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের বাণী পড়ে শোনান মিনিস্টার (বাণিজ্য) ড. জুলিয়া মঈন, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বাণী পাঠ করেন ওয়ালিদ ইসলাম।
এরপর 'জুলাই বিষাদ সিন্ধু' ও 'জুলাই অনির্বাণ' শিরোনামে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ওপর নির্মিত দুটি প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়। প্রামাণ্য চিত্রে শহীদ আবু সাঈদ, শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ, শহীদ মাহমুদুর রহমান সৈকত, শাহরিয়ার খান আনাস, শহীদ তাহির জামান, শহীদ সুমাইয়া আক্তার, ফারহান ফাইয়াজ, আমিনুল ইসলাম আমিন, শহীদ ওয়াসিম আকরাম, শহীদ মিরাজ হোসেন, শহীদ লিজা, শহীদ শেখ ফাহমিন জাফর, শহীদ খুবাইব, শহীদ নাফিসা, দীপ্ত দে ও ফয়সাল আহমেদ শান্ত'র বীরত্বগাঁথা ও তাঁদের স্বজনদের মর্মস্পর্শী স্মৃতিচারণ তুলে ধরা হয়েছে।
প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন শেষে জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে উন্মুক্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে জুলাই আন্দোলনের প্রেক্ষাপট, ১৯৭১ সাল থেকে ২০২৪ পর্যন্ত বাংলাদেশের বিভিন্ন দলের শাসনকাল বিশেষ করে পতিত স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার সময়ের নানা অনিয়ম, অন্যায়-অবিচার, জুলুম-নির্যাতন, বিভিন্ন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস, লুটপাট, ঘুষ-দুর্নীতি, অর্থপাচারসহ নানা বিষয় ওঠে আসে। আলোচনায় অংশ নেন রেডিও তেহরানের সাংবাদিক আশরাফুর রহমান, গাজী আবদুর রশীদ, মুহাম্মদ আমির হোসেন ও নাসির মাহমুদ। আরও বক্তব্য রাখেন তেহরান প্রবাসী মিজানুর রহমান ও দূতাবাস কর্মকর্তা ড. জুলিয়া মঈন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মঞ্জুরুল করিম খান চৌধুরী তাঁর সমাপনী বক্তব্যে জুলাই আন্দোলনে শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
তিনি বলেন, "গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জুলাই আন্দোলন ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক। আন্দোলনে জনগণের ঐক্যবদ্ধ অংশগ্রহণই স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে বিজয় নিশ্চিত করেছিল। এই অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী সবাই নিজেদেরকে অংশীদার হিসেবে মনে করেছে।"
রাষ্ট্রদূত সতর্ক করে দিয়ে বলেন, "আমাদের আশপাশে অনেকেই অপেক্ষা করে আছে, একটু লাইনচ্যূত হলেই তারা ঝাঁপিয়ে পড়েবে।" দেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, সুশাসন এবং সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা অপরিহার্য বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
অনুষ্ঠানে তেহরানস্থ বাংলাদেশি কমিউনিটি, স্থানীয় সাংবাদিক ও দূতাবাস কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।#
পার্সটুডে/এমএআর/৫
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।