এসআইআর নিয়ে ফের বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ অভিষেকের
পশ্চিম বাংলায় এসআইআর হচ্ছেই! রাজ্যের পক্ষে আইনজীবীর সময় চেয়ে দাবি
-
ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন বা এসআইআর বিতর্ক
ভারতের বিহারের পর এবার বাংলাতেও ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন বা এসআইআর হচ্ছে। একথা জানিয়েছে গত ৮ আগস্ট রাজ্যকে চিঠি দেয় নির্বাচন কমিশন।
আজ(বুধবার) সুপ্রিম কোর্টের শুনানিতে রাজ্যের আইনজীবী গোপালশংকর নারায়ণের প্রশ্ন করেন 'রাজ্যের অনুমতি ছাড়া কি ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন বা এসআইআর করা যায়? তিনি এ বিষয়ে আরও কিছুটা সময় প্রয়োজন বলেও দাবি করেন।
বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চে বিহারের এসআইআর'র শুনানি চলছে। ওই শুনানির একেবারে শুরুতে আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি সরাসরি নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
তিনি বলেন, গত চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে যাদের নাম ছিল, তাদের নাম কীভাবে বিহারের এসআইআর-এ বাদ যায়? নাগরিকত্ব প্রমাণে কমিশনের চাওয়া নথি নিয়েও প্রশ্ন করেন সিংভি। তিনি বলেন, 'আধার কার্ড গ্রহণ করা হচ্ছে না। পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস সংযোগ প্রায় সকলের বাড়িতে রয়েছে। কিন্তু সেগুলি বিবেচনা করা হয়নি। পাসপোর্টের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু পাসপোর্ট দুই শতাংশের কম ভারতীয়ের রয়েছে। বাকি যা নথি চাওয়া হচ্ছে তা-ও সকলের কাছে নেই।
কেন বেছে বেছে ভোটের আগে এসআইআর হচ্ছে, কেন পরে সারাবছর ধরে করা গেল না, সে প্রশ্ন তোলেন সিংভি।
এরপর রাজ্যের আইনজীবী গোপাল শংকর নারায়ণ বলেন, 'গত ৮ আগস্ট কমিশনের তরফে নোটিস পাঠানো হয়। রাজ্যের সঙ্গে কোনও আলোচনা ছাড়াই এসআইআর শুরু হতে পারে? তিনি আরও বলেন, “কমিশনে গণহারে বিহারে নাম বাদ দিয়েছে। ভোট দেওয়া আমার অধিকার। কমিশন কীভাবে ছেলেখেলা করতে পারে? পালটা বিচারপতি বাগচী বলেন, 'এসআইআর প্রথমবার করা হচ্ছে। সে হিসাবে সমস্ত ভোটারকে বাদ দিতে পারে কমিশন। তবে কমিশন তা করেনি।' এরপর রাজ্যের আইনজীবী বাংলায় এসআইআর প্রক্রিয়া স্থগিত রাখার আর্জি জানান।
‘নৈতিকতা থাকলে লোকসভা ভেঙে দিন’, এসআইআর নিয়ে ফের বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ অভিষেকের

এদিকে, নির্বাচন কমিশনকে 'ক্রোনোলজি' বোঝালেন তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন নিয়ে ফের কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়লেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেক বলেন, কেন্দ্র যদি নির্বাচন কমিশন প্রস্তাবিত এসআইআরকে কে সমর্থন করে, তাহলে নৈতিকতার দায়ে লোকসভা ভেঙে দিয়ে নতুন করে নির্বাচনে যাওয়া উচিত।
এসআইআর এবং ভোটার তালিকায় ত্রুটি নিয়ে সম্মিলিতভাবে আন্দোলন করছে ইন্ডিয়া জোট। দিন দুই আগে নির্বাচন কমিশনের সদর দপ্তর অভিযানে রীতিমতো নিগ্রহের শিকার হতে হয়েছে বিরোধী সাংসদদের। তারপর মঙ্গলবারই অভিষেক কেন্দ্রকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছিলেন, নৈতিকতা থাকলে লোকসভা ভেঙে দেশজুড়ে এসআইআর করান। বুধবার সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করে ফের একই চ্যালেঞ্জ তিনি ছুড়লেন বিজেপির উদ্দেশে।
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্য, “নির্বাচন কমিশন বলছে ভোটার লিস্ট ভুল এবং বেনিয়মে ভরা। প্রশ্ন হল, এক বছর আগে তো এই ভোটার তালিকাতেই লোকসভা নির্বাচন হয়েছে। সত্যিই যদি ভারত সরকার নির্বাচন কমিশনের এই বক্তব্যকে সমর্থন করে থাকে তাহলে সরকারও এগিয়ে আসুক। নৈতিকতার খাতিরে সবার আগে লোকসভা ভেঙে দেওয়া হোক। যদি সত্যিই কেউ এসআইআরকে-কে সমর্থন করেন, তাহলে তো বলতে হবে এই দেশের জনতার সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে।”
শুধু সরকারকে নয়, নির্বাচন কমিশনকেও একাধিক চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছেন অভিষেক। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'বর্তমান নির্বাচন কমিশনার যদি সত্যিই নিজেকে নিরপেক্ষ বলে মনে করেন, তাহলে শুধু ভোটমুখী রাজ্যগুলিতে সংশোধন না করিয়ে গোটা দেশে এসআইআর করুন। যদি সত্যিই নিরপেক্ষ হন, তাহলে ক্রোনোলজিটা বুঝুন। প্রথমে লোকসভা ভেঙে দিন। গোটা দেশে এসআইআর করুন তারপর নির্বাচনে যান। মানুষের মুখোমুখি হন।#
পার্সটুডে/জিএআর/১৩