স্ন্যাপব্যাক মেকানিজম কার্যকর হলে ইরান কঠোর প্রতিক্রিয়া দেখাবে: স্পিকার
-
মোহাম্মদ বাকের কলিবফ
ইরানের সংসদের স্পিকার মোহাম্মদ বাকের কলিবফ সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, কোনো দেশ তথাকথিত স্ন্যাপব্যাক মেকানিজমের অধীনে ইসলামী প্রজাতন্ত্রের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার চেষ্টা করলে তেহরানের পক্ষ থেকে তার জবাবে শক্তিশালী ও সমপরিমাণ প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখি হবে।
আজ (রোববার) সংসদ অধিবেশনে তিনি বলেন, "আমরা ঘোষণা করছি যে, যদি কোনো দেশ এই অবৈধ [স্ন্যাপব্যাক পুনর্বহাল করা] প্রস্তাবের ভিত্তিতে ইরানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়, তবে ইরানের পক্ষ থেকে সমপরিমাণ প্রতিক্রিয়া জানানো হবে। এছাড়া এই বেআইনি পদক্ষেপের পেছনে থাকা তিনটি ইউরোপীয় দেশও আমাদের প্রতিক্রিয়া দেখবে।”
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও ফ্রান্স ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তির অধীনে উঠে যাওয়া ইরানবিরোধী জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের (UNSC) রেজ্যুলেশন এবং সংশ্লিষ্ট নিষেধাজ্ঞাগুলো পুনর্বহাল করার ঘোষণা দেওয়ার পরই এসব কথা বলেন তিনি।
কলিবফ বলেন, ইসলামী প্রজাতন্ত্র স্ন্যাপব্যাক মেকানিজম এবং পূর্ববর্তী বাতিলকৃত জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের নিষেধাজ্ঞাগুলোর পুনর্বহালকে অবৈধ বলে মনে করে।
রাশিয়া ও চীনের অবস্থানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, নিরাপত্তা পরিষদের এই দুই স্থায়ী সদস্যই আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে স্পষ্টভাবে ঘোষণা করেছে যে, এই রেজ্যুলেশনগুলোর কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। সেই অনুযায়ী ইরানও এগুলো মানতে বাধ্য নয়, যার মধ্যে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ স্থগিত রাখার প্রশ্নও অন্তর্ভুক্ত।
তিনি আরও যোগ করেন, "আমরা বিশ্বাস করি যে আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে আমাদের সমৃদ্ধিকরণের অধিকার এখনও স্বীকৃত।"
তিনি এ-ও বলেন যে, প্রস্তাবগুলোতে তালিকাভুক্ত নিষেধাজ্ঞাগুলো যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার তুলনায় অনেক কম গুরুত্বপূর্ণ, যেগুলো আগেই যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা JCPOA (Joint Comprehensive Plan of Action) থেকে সরে দাঁড়ানোর পর থেকেই কার্যকর রয়েছে।
সংসদ স্পিকার যুক্তি দেখান যে, জাতিসংঘে এই নিষেধাজ্ঞাগুলো বাস্তবায়ন 'গুরুতর আইনি বাধার' সম্মুখীন হচ্ছে।
গত মাসে, ইউরোপীয় ত্রয়ী (ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি) তথাকথিত স্ন্যাপব্যাক মেকানিজম কার্যকর করে, যা সমস্ত ইরানবিরোধী নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করার একটি ৩০ দিনের প্রক্রিয়া।
জেসিপিওএ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা প্রস্থান এবং তাদের জেসিপিওএ দায়িত্ব পূরণ না করে অবৈধ নিষেধাজ্ঞার সাথে একাত্মতা প্রকাশের ইউরোপীয় ত্রয়ীর সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করে ইরান এই পদক্ষেপটিকে অবৈধ বলে প্রত্যাখ্যান করে।
আজ (রোববার) গ্রিনিচমান সময় ০০:০০-এ জাতিসংঘ (নিরাপত্তা পরিষদ) নিষেধাজ্ঞাগুলো পুনর্বহাল করে। এর ফলে ইরানের বিদেশে থাকা সম্পদ পুনরায় জব্দ হবে, ইসলামি প্রজাতন্ত্রের সঙ্গে অস্ত্র বাণিজ্য বন্ধ হবে এবং দেশটির প্রতিরক্ষামূলক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিকে টার্গেট করা হবে।#
পার্সটুডে/এমএআর/২৮