জুলাই আন্দোলনে আমাকে কখনোই মাস্টারমাইন্ড হিসেবে দেখি না: তারেক রহমান
https://parstoday.ir/bn/news/event-i152694-জুলাই_আন্দোলনে_আমাকে_কখনোই_মাস্টারমাইন্ড_হিসেবে_দেখি_না_তারেক_রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ২০২৪ সালে জুলাই আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায়ে লন্ডন থেকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করলেও নিজেকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ‘মাস্টারমাইন্ড’ মনে করেন না।
(last modified 2025-10-08T09:10:00+00:00 )
অক্টোবর ০৬, ২০২৫ ১৯:১৫ Asia/Dhaka
  • তারেক রহমান
    তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ২০২৪ সালে জুলাই আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায়ে লন্ডন থেকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করলেও নিজেকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ‘মাস্টারমাইন্ড’ মনে করেন না।

২০০৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ব্রিটেনের লন্ডনে নির্বাসনে থাকা তারেক রহমান বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, ‘কোনো দল বা ব্যক্তি নন, জুলাই আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী জনগণ।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর গত এক বছরে বিএনপির কোনো কোনো কেন্দ্রীয় নেতা তারেক রহমানকে এই আন্দোলনের ‘একমাত্র মাস্টারমাইন্ড’ হিসেবে উল্লেখ করে বক্তব্য দিয়েছেন। বিষয়টি উল্লেখ করে তারেক রহমানের কাছে বিবিসি বাংলার প্রশ্ন ছিল, তিনি নিজেকে এই আন্দোলনের ‘মাস্টারমাইন্ড’ হিসেবে দেখেন কি না?

উত্তরে তারেক রহমান বলেছেন, ‘না, আমি অবশ্যই এই জুলাই আন্দোলনে আমাকে কখনোই মাস্টারমাইন্ড হিসেবে দেখি না। এই আন্দোলন সফল হয়েছে জুলাই মাসে, কিন্তু এর প্রেক্ষাপট শুরু হয়েছে কিন্তু বহু বছর আগে থেকে। এই আন্দোলনে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর নেতা-কর্মীরা, সেটি বিএনপি হোক বা অন্য রাজনৈতিক দলগুলো হোক, যারা গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল বিভিন্নভাবে অবদান রেখেছে। বিভিন্নভাবে তাদের নেতা-কর্মীরা নির্যাতিত হয়েছে। আমি মনে করি, জুলাই-আগস্ট মাসে (২০২৪ সাল) এসে জনগণ সব গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অংশগ্রহণ করেছে।

শুধু রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা নন, আরও নানা পর্যায়ের মানুষ জুলাই অভ্যুত্থানে অংশ নিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি, সেদিন মাদ্রাসার ছাত্ররা, তাঁরা ছিলেন এই আন্দোলনের মাঠে। আমরা দেখেছি, গৃহিণীরা পর্যন্ত রাস্তায় নেমে এসেছেন সন্তানের পেছনে। আমরা দেখেছি, কৃষক, শ্রমিক, সিএনজিচালক, ছোট দোকান কর্মচারী বা দোকানমালিক থেকে আরম্ভ করে গার্মেন্টসকর্মী—তাঁরা নেমে এসেছিলেন। আমরা দেখেছিলাম, সামরিক বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নেমে এসেছিলেন এই আন্দোলনে। এমন অনেক সাংবাদিক, যাঁরা স্বৈরাচারের অত্যাচারে নির্যাতিত হয়ে দেশ থেকে বাইরে চলে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন, তাঁরা সম্পৃক্ত হয়েছিলেন এই আন্দোলনে। কাজেই কারও ভূমিকাকে আমরা ছোট করে দেখতে চাই না, খাটো করে দেখতে চাই না।

তারেক রহমান বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন দৃঢ়ভাবে, সমাজের দল–মতনির্বিশেষে, শ্রেণিবিন্যাস–নির্বিশেষে প্রত্যেকটি মানুষের এই আন্দোলনে অবদান আছে। এই আন্দোলন ছিল বাংলাদেশের জনগণের আন্দোলন। যাঁরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন, তাঁরা এই আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড। কোনো দল, কোনো ব্যক্তি নয়, এই আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী জনগণ।

এ ব্যাপারে বিএনপির অবস্থান সম্পর্কে তারেক রহমান বলেন, ‘আমি বা আমার দলের অবস্থান হচ্ছে, আন্দোলন হয়ে গিয়েছে, আন্দোলনে জনগণ সফলতা লাভ করেছেন। আন্দোলনে স্বাভাবিকভাবেই দুটো পক্ষ আছে। একটি পক্ষ হচ্ছে মানুষ শহীদ হয়েছে। দুই হাজারের মতো মানুষকে হত্যা করা হয়েছে আন্দোলনে। আবার আরেকটি পক্ষ হচ্ছে প্রায় ৩০ হাজারের মতো মানুষ বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন, অন্ধ হয়ে গিয়েছেন। আমার মনে হয়, আমাদের উচিত হবে, এখন আমাদের সকলের উচিত হবে, রাষ্ট্রসহ, সরকারসহ রাজনৈতিক দলগুলোর যার যতটুকু সম্ভব, সেই পরিবারগুলোর পাশে গিয়ে দাঁড়ানো। যতটুকু সহযোগিতা তাদের করা যায়, যতটুকু সম্ভব তাদের পাশে দাঁড়ানো। তাদের এই আত্মত্যাগের প্রতি সম্মান জানানো।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর গত এক বছরে তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে বারবার আলোচনা হয়েছে। তাঁর কাছে বিবিসি বাংলার প্রশ্ন ছিল, কেন তিনি এখনো দেশে ফেরেননি?

এর জবাবে তারেক রহমান বলেন, ‘কিছু সংগত কারণে হয়তো ফেরাটা হয়ে ওঠেনি এখনো। তবে সময় তো চলে এসেছে মনে হয়। ইনশা আল্লাহ, দ্রুতই ফিরে আসব।’

কবে ফিরতে পারেন, জানতে চাইলে তারেক রহমান বলেন, ‘দ্রুতই মনে হয়। দ্রুতই, ইনশা আল্লাহ।’

আগামী নির্বাচনের আগে দেশে ফিরবেন, এমন সম্ভাবনার কথা বলা যায় কি না—বিবিসি বাংলার এমন প্রশ্ন করে।

তারেক রহমান উত্তরে বলেন, ‘রাজনীতি যখন করি, আমি একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে নির্বাচনের সঙ্গে রাজনৈতিক দল বা রাজনৈতিক কর্মীর একটি ওতপ্রোত সম্পর্ক। কাজেই যেখানে জনগণের প্রত্যাশিত একটি নির্বাচন হবে, সেই নির্বাচনের সময় কেমন করে দূরে থাকব? আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে, ইচ্ছা থাকবে, আগ্রহ থাকবে সেই প্রত্যাশিত নির্বাচন যখন অনুষ্ঠিত হবে, জনগণের সঙ্গে জনগণের মধ্যেই থাকব, ইনশা আল্লাহ।’#

পার্সটুডে/এমএআর/৬