কর্ণাটকে সরকারি কলেজে হিজাব পরার দাবিতে মুসলিম ছাত্রীদের বিক্ষোভ
(last modified Thu, 20 Jan 2022 15:06:49 GMT )
জানুয়ারি ২০, ২০২২ ২১:০৬ Asia/Dhaka
  • কর্ণাটকে সরকারি কলেজে হিজাব পরার দাবিতে মুসলিম ছাত্রীদের বিক্ষোভ

ভারতের বিজেপিশাসিত কর্ণাটকের উডুপি জেলার একটি সরকারি কলেজে, মুসলিম মেয়েরা হিজাব পরার দাবিতে গত তিন সপ্তাহ ধরে বিক্ষোভ করছে। এখানকার ছয় মুসলিম ছাত্রীকে হিজাব পরার কারণে ক্লাসে আসতে নিষেধ করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। এদিকে, কর্ণাটকের শিক্ষামন্ত্রী বিসি নাগেশ ওই বিষয়ে বিবৃতিতে বলেছেন, এ ধরণের পোশাক পরা শৃঙ্খলাভঙ্গ।

এ প্রসঙ্গে আজ (বৃহস্পতিবার) গার্লস ইসলামিক অর্গানাইজেশনের (জিআইও) পশ্চিমবঙ্গের সাবেক সভানেত্রী ও বিশিষ্ট শিক্ষিকা সফিউন নিসা রেডিও তেহরানকে বলেন, ‘এটা সাংবিধানিক মৌলিক অধিকার। সংবিধান অনুযায়ী হিজাব পরার অনুমতি আছে, ফলে সেটা কেন পরতে দেওয়া হবে না? হিজাব পরা মানে তো শৃঙ্খলাভঙ্গ নয়। এটা তাদের বিশ্বাসের একটা অঙ্গ। বিশ্বাসের সঙ্গে সংবিধানের কোনও দ্বন্দ্ব নেই। যেহেতু গভর্নমেন্ট কলেজ  এবং শিক্ষার্থীদের বক্তব্য অনুযায়ী তারা তো বলছেই নারী টিচারদের সামনে হিজাব ছাড়া বসতে অসুবিধা নেই। কিন্তু পুরুষ শিক্ষকদের সামনে হিজাব ছাড়া তারা বসতে অস্বস্তি বোধ করে, সেজন্য অসুবিধা কোথায়? এটা শৃঙ্খলাভঙ্গ নয়। এটা একটা অজুহাত মাত্র।’         

সফিউন নিসা

আজ (বৃহস্পতিবার) হিন্দি গণমাধ্যম ‘জনসত্তা’য় প্রকাশ, আন্দোলনরত ছাত্রীদের অভিযোগ, হিজাব পরার কারণে তাদের ২০ দিন ধরে ক্লাসে যেতে দেওয়া হচ্ছে না।  তাদের বাবা-মায়েরাও তাদেরকে হিজাব পরার অনুমতি দেওয়ার জন্য কলেজ ম্যানেজমেন্টকে অনুরোধ করেছিলেন কিন্তু তাতে কোনও ফল হয়নি। আসলে, কলেজ কর্তৃপক্ষ, নিয়মের বরাত দিয়ে বলেছে, ক্লাস চলাকালীন হিজাব পরার অনুমতি নেই।  

আন্দোলনরত ছাত্রীদের সাফাই, এটি একটি সরকারি কলেজ যেখানে পুরুষ শিক্ষকও  রয়েছেন। হিজাব ছাড়া পুরুষ শিক্ষকের সামনে বসে থাকতে তারা অস্বস্তি বোধ করে। 

একইসঙ্গে তারা আরও বলেন, নারী প্রভাষকের সামনে বসতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। বিক্ষোভকারী ছাত্রীদের অভিযোগ, তাদের সিনিয়রদের হিজাব পরতে দেওয়া হয়েছিল কিন্তু তা করার জন্য তাদের মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছিল। এর পাশাপাশি তারা আরও বলেন, সংবিধানে হিজাব পরার অধিকার থাকলেও কলেজ প্রশাসন তা নিষেধ করছে।  

এ প্রসঙ্গে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী বিসি নাগেশ একটি টিভি চ্যানেলের সাথে কথা বলার সময় বলেন, এ ধরণের পোশাক পরা শৃঙ্খলাহীনতা এবং স্কুল-কলেজ ধর্ম পালনের  জায়গা নয়। এই বিক্ষোভের জন্য ‘পিএফআই’ সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছাত্র সংগঠনকে দায়ী করেন শিক্ষামন্ত্রী। 

বিসি নাগেশ বলেন, তারা বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিষয়টিকে রাজনীতিকরণ করতে চান এবং তারা এখন কেন তাদের সাংবিধানিক অধিকার প্রয়োগ করতে চান তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। ছাত্রীরা অবশ্য ‘পিএফআই’-এর সঙ্গে কোনও সম্পর্ক থাকার কথা অস্বীকার করেছে।  

‘সত্য হিন্দি ডটকম’ সূত্রে প্রকাশ, ২০২১ সালে কর্ণাটকে মুসলিম বিরোধী ঘটনা   বেড়েছে। বজরং দল, ভিএইচপি’র মতো সংগঠনগুলোও মুসলিমদের মৌলিক অধিকার নিষিদ্ধ করার দাবিতে বিক্ষোভ করেছে। সম্প্রতি বড়দিনের সময় অনেক সংখ্যালঘু খ্রিস্টান পরিবারও হামলার শিকার হয়।#

পার্সটুডে/এমএএইচ/এমআরএইচ/২০   

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ