মুসলিম সম্প্রদায়ের শিক্ষা দরকার, হিজাব নয় : হিমন্তবিশ্ব শর্মা
ভারতের বিজেপিশাসিত অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা বলেছেন, মুসলিম সম্প্রদায়ের শিক্ষা দরকার, হিজাব নয়। তিনি আজ (শুক্রবার) সংবাদ সংস্থা ‘এএনআই’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওই মন্তব্য করেছেন।
এ ভাবে বিজেপিশাসিত কর্ণাটক থেকে শুরু হওয়া হিজাব বিতর্কের মধ্যে এবার বিজেপি নেতা ও অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা ঢুকে পড়লেন। তিনি ভারতের প্রধান বিরোধীদল কংগ্রেসকে হিজাব ইস্যুতে ইন্ধন দেওয়ার জন্য অভিযুক্ত করেছেন এবং বলেন, এটা দেশ ভাঙার ষড়যন্ত্র।
মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা বলেন, ‘হিজাব ইস্যুতে আদালতে মামলা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট ও কর্ণাটক হাইকোর্ট উভয়ক্ষেত্রেই কংগ্রেসের আইনজীবী দাঁড়াচ্ছেন হিজাবের সমর্থনে। এটা দেশকে ভাঙার ষড়যন্ত্র। বর্তমানে মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বেশি যেটা প্রয়োজন তা হল শিক্ষার প্রয়োজন। তাদের হিজাবের প্রয়োজন নেই।মুসলিম মেয়েদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন চিকিৎসক হওয়া, ইঞ্জিনিয়র হওয়া প্রয়োজন। তাদের জন্য হিজাব জরুরি নয়।’
হিজাব বিতর্ক ইস্যুতে পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার সমাজকর্মী জান্নাতুন ফিরদৌস আজ (শুক্রবার) রেডিও তেহরানকে বলেন, ‘হিজাব হল, নারীর সম্ভ্রম রক্ষা করার একটা পোশাক। সংবিধানে ২৫ থেকে ২৮ নম্বর ধারায় ধর্মীয় স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক ধর্মের সমান ও সমমর্যাদা দেওয়া হয়েছে এবং ২১ নম্বর ধারার একটা অংশে নারীদের মর্যাদা রক্ষার কথা বলা হয়েছে। সব মিলিয়ে আমি বলতে পারি হিজাবের সঙ্গে শিক্ষার কোনও সম্পর্ক নেই। হিজাব একটা ধর্মীয় ঐতিহ্য এবং শিক্ষা আমাদের মৌলিক অধিকার। সংবিধান ও ইসলাম যে অধিকার দিয়েছে, সেই দিক থেকে একজন নারী তাঁর ধর্মীয় ঐতিহ্য বাঁচিয়ে রাখার জন্য হিজাব অবশ্যই পরিধান করতে পারে। কারণ হিজাব তাঁর সম্মান রক্ষার জন্য প্রয়োজন।’
এ প্রসঙ্গে কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী দিলারা ইয়াসমিন রেডিও তেহরানকে বলেন, ‘প্রথমত আমি বলব ইসলাম ধর্মে মেয়েদের হিজাব পরিধান করা ফরজ করা হয়েছে। ভারতবর্ষ ধর্মনিরপেক্ষ দেশ, এবং সংবিধানের ২৮ নম্বর ধারায় স্পষ্ট বলা হয়েছে যে সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত কোনও বিদ্যালয়ে কোনও শিক্ষার্থীকে জাতি-ধর্ম-বর্ণের অজুহাতে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করা যাবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রত্যেক ধর্মের মানুষদের মধ্যে নিজেস্ব একটা স্বাধীনতা আছে, সেই স্বাধীনতা থেকে মুসলিম মেয়েদের বঞ্চিত করার অধিকার কারও নেই। সংবিধান অনুযায়ী মুসলিম মেয়েদের হিজাব পরা কোনও নিয়ম বা শৃঙ্খলাভঙ্গের মধ্যে পড়ে না।’ ‘আমাদের যে সাংবিধানিক অধিকার তা অক্ষুণ্ণ রাখা উচিত। এবং আমাদের কোনোভাবে হয়রানি করা যাবে না’ বলেও মন্তব্য করেন কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী দিলারা ইয়াসমিন।#
পার্সটুডে/এমআরএইচ/আবুসাঈদ/১১
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।