রাজস্থানে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা, বন্ধ ইন্টারনেট, মুখ্যমন্ত্রীর শান্তির আবেদন
ভারতে কংগ্রেসশাসিত রাজস্থানের যোধপুরে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে কারফিউ জারি করা হয়েছে। আজ (মঙ্গলবার) এনডিটিভি হিন্দি ওয়েবসাইট সূত্রে প্রকাশ, গতকাল (সোমবার) রাতেও যোধপুরের জালৌরি গেট এলাকায় পতাকা নিয়ে বিবাদের জেরে সংঘর্ষ হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।
এনডিটিভি সূত্রে প্রকাশ, আজ পাঁচটি স্থানে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এলাকায় উত্তেজনা রয়েছে। সংবেদনশীল পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে, পুলিশ কমিশনারেট যোধপুর কমিশনারেট এলাকায় ফৌজদারি কার্যবিধি ১৯৭৩-এর ১৪৪ ধারার অধীনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। যোধপুরের দশটি থানা এলাকায় কারফিউ জারি করা হয়েছে। যা আগামী ৪ মে মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। গুজব ছড়ানো ঠেকাতে যোধপুরে ইন্টারনেট পরিসেবা স্থগিত করা হয়েছে এবং পুলিশের নিরাপত্তায় ঈদের নামাজ আদায় করা হয়েছে।
গণমাধ্যমে প্রকাশ, যোধপুরে তিন দিনের পরশুরাম জয়ন্তী উৎসবও চলছে। এখানে ধর্মীয় পতাকা নিয়ে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয় এবং পরবর্তীতে যা সহিংসতায় পরিণত হয়েছে। জানা গেছে, জালৌরি গেট এলাকা থেকে এই বিরোধের সূত্রপাত। সোমবার মধ্যরাতে ঈদ উপলক্ষে জালৌরি গেটের কাছে একটি মোড়ে সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের কিছু মানুষ ধর্মীয় পতাকা লাগাচ্ছিলেন, ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিবাদের সূচনা হয়। এ সময়ে কিছু মানুষ রাস্তার মোড়ে স্থাপিত মুক্তিযোদ্ধা বালমুকুন্দ বিসসার ভাস্কর্যের ওপর পতাকা স্থাপন করে বলে অভিযোগ। যার বিরোধিতা করেছিল হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন। তাদের অভিযোগ, পরশুরাম জয়ন্তীতে লাগানো ‘গেরুয়া পতাকা’ সরিয়ে ‘ইসলামী পতাকা’ লাগানো হয়েছে। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয় সম্প্রদায়ের মানুষজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সোমবার রাতে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে এবং লাঠিচার্জও করতে হয়। এ সময়ে স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িতেও হামলা চালানো হয়।
গণমাধ্যম সূত্রে প্রকাশ, মঙ্গলবার ভোররাতে পাথর নিক্ষেপের ঘটনায় কমপক্ষে চার পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পুলিশ কন্ট্রোল রুমের একজন কর্মকর্তা সংবাদ সংস্থাকে বলেন, ‘পাথর নিক্ষেপে চার পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এলাকায় ভারী পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।’
রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট যোধপুরবাসীকে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে তিনি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক ডেকেছেন। আজ (মঙ্গলবার) সকালে এক বার্তায় মুখ্যমন্ত্রী গেহলট বলেন, যোধপুরের জালৌরি গেটের কাছে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের কারণে উত্তেজনা সৃষ্টি হওয়া দুর্ভাগ্যজনক। যে কোনো মূল্যে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বেশ কিছুদিন ধরেই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সংঘর্ষের খবর আসছে। যার জেরে ইতোমধ্যেই কয়েকটি রাজ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। গত কয়েক সপ্তাহে দিল্লি, গুজরাট, মধ্য প্রদেশসহ কমপক্ষে পাঁচটি রাজ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। রামনবমী, হনুমান জয়ন্তী ও রমযানের সময় এ সব সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে।#
পার্সটুডে/এমএএইচ/আবুসাঈদ/০৩
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।