পাঞ্জাবের ভাতিন্ডায় নিহত আরও এক সেনা জওয়ান, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫
ভারতের পাঞ্জাবের ভাতিন্ডায় আরও এক সেনা জওয়ান নিহত হয়েছেন। এরফলে সেখানে নিহত জওয়ানের সংখ্যা বেড়ে ৫ জনে পৌঁছেছে।
গতকাল (বুধবার) ভাতিন্ডা সেনা ছাউনিতে ভোর সাড়ে ৪টে নাগাদ এক হামলার ঘটনায় ৪ জওয়ান নিহত হয়েছেন। হামলাকারীদের পরিচয় নিয়ে অবশ্য ধোঁয়াশা কাটেনি। কঠোর নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে কীভাবে ওই হামলার ঘটনা ঘটল তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে। হামলাকারী কারা? তাদের পরিচয় কী? তারা কী ভিতরেই ছিল? নাকি বাইরে থেকে ঢুকেছে? বাইরে থেকে ঢুকলে হাই সিকিউরিটি জোনে কীভাবে ঢুকল? হামলার পর তারা কোথায় গেল? কীভাবে তারা পালাতে সমর্থ হল? এসব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
সেই ঘটনার জের না মিটতেই এবার আরও এক জওয়ানের মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে এল। সেনাবাহিনী এটিকে ‘দুর্ঘটনা’ বলে অভিহিত করেছে। অস্ত্র রক্ষণাবেক্ষণের সময়ে ওই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে বলা হচ্ছে।
আজ (বৃহস্পতিবার) ভাতিন্ডা ক্যান্ট থানার কর্মকর্তা গুরদীপ সিং বলেছেন, গত রাতে পাঞ্জাবের ভাতিন্ডায় এক সেনা জওয়ান গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান, কারণ তার সার্ভিস অস্ত্র থেকে দুর্ঘটনাক্রমে গুলি চলে যায়। নিহত জওয়ানের নাম লঘু রাজ শঙ্কর।
সেনাবাহিনী বলেছে, ওই সেনা জওয়ান গত ১১ এপ্রিল ছুটি থেকে ফিরেছিলেন। প্রাথমিকভাবে এটি একটি কথিত আত্মহত্যার চেষ্টা বলে মনে হচ্ছে। কর্মকর্তারা অবশ্য স্পষ্ট করেছেন গতকাল বুধবার ভাতিন্ডা সামরিক ছাউনির ঘটনার সাথে এই ঘটনার কোনও সম্পর্ক নেই।
এদিকে, বুধবারের হামলার ঘটনায় মৃত জওয়ানরা হলেন সাগর বানে (২৫), কমলেশ আর (২৪), যোগেশ কুমার জে (২৪) এবং সন্তোষ এম নাগারাল (২৫)। মৃত চার জওয়ান ৮০ মিডিয়াম রেজিমেন্ট ইউনিটের সদস্য ছিলেন। ওই ঘটনায় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। বলা হচ্ছে, ডিউটি শেষ হয়ে যাওয়ায় ওই চার জওয়ান ব্যারাকে ঘুমোচ্ছিলেন। সে সময়ে মুখোশে মুখ ঢেকে সাদা কুর্তা-পাজামা পরা দুই ব্যক্তি তাদের উপর রাইফেল ও ধারালো কুঠার নিয়ে হামলা চালায়। বিষয়টি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংকে বিস্তারিত জানিয়েছেন সেনাপ্রধান মনোজ পান্ডে।
বুধবার রাত ৯টা পর্যন্ত সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে হামলাকারীদের পরিচয় নিয়ে কিছু জানানো হয়নি। তবে, হামলার সঙ্গে জঙ্গি নাশকতার যোগ নেই বলে জানিয়েছেন ভাতিন্ডার সিনিয়র পুলিশ সুপার গুলনীত সিং খুরানা। ঘটনাস্থল থেকে একটি ইনসাস এবং ১৯ রাউন্ড গুলির খোল উদ্ধার হয়েছে। গত (মঙ্গলবার) থেকে একটি ইনসাস এবং ২৮ রাউন্ড গুলির হদিশ পাওয়া যাচ্ছিল না। এদিনের হামলায় সেই হাতিয়ার ব্যবহার করা হয়েছে কী না, তা খতিয়ে দেখছেন সেনা ও পুলিসের তদন্তকারী কর্মকর্তারা। ফরেন্সিক পরীক্ষাও করা হবে।
পুলিশ বলছে, সেনাবাহিনীর মেজর আশুতোষ শুক্লার অভিযোগের ভিত্তিতে ভাতিন্ডা ক্যান্ট থানায় একটি এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছে। এতে দুই অজ্ঞাত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারা এবং অস্ত্র আইনের ধারা আরোপ করা হয়েছে। পাঞ্জাব পুলিশ জানিয়েছে তারা সেনা কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ রেখেছে। একই সঙ্গে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে যৌথ তদন্তের কথা বলা হয়েছে।
এদিকে, এফআইআরে গুলি চালানোর ঘটনা ভোর সাড়ে ৪টা নাগাদ বলা হলেও সেনা ছাউনি থেকে থেকে মাত্র ২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত পুলিশ স্টেশনে ১০ ঘণ্টা পেরনোর পর দুপুর ৩টে নাগাদ অভিযোগ জানানোয় বিষয়টি নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে বলে জানা গেছে। বিষয়টি নিয়ে একাধিক অসঙ্গতির কথাও উঠে আসছে।#
পার্সটুডে/এমএএইচ/এনএম/১৩
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।