মূতি ভাঙার হোতা হরিশ পুলিশি জালে
ভারতের উত্তর প্রদেশের মন্দিরে মূর্তি ভাঙার মূল পাণ্ডা হরিশ শর্মাসহ গ্রেফতার ৪
ভারতে বিজেপিশাসিত উত্তর প্রদেশের বুলন্দশহর জেলার বড়াল গ্রামে ৪টি মন্দিরে মূর্তি ভাঙচুরকারীদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গত ৩১ মে রাতে মন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটে। চাঞ্চল্যকর ওই ঘটনার পর পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজসহ অনেক বিষয় খতিয়ে দেখে পুলিশ ভাঙচুরকারীদের পাকড়াও করতে সমর্থ হয়েছে। গতকাল (বৃহস্পতিবার) এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, ওই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হরিশ শর্মা, শিবম, কেশব ও অজয়কে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশের এসএসপি শ্লোক কুমার বলেন, অভিযুক্তরা বড়াল গ্রামের হরিশ শর্মার বাড়িতে ষড়যন্ত্র করেছিল। ওই ঘটনার আগে অভিযুক্তরা মদ খেয়েছিল। পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, এর পাশাপাশি ঘটনায় ব্যবহৃত শাবল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। আসলে, ওই ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিরোনামে ছিল। এ নিয়ে ব্যবহারকারীরা বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন। পুলিশ অবশ্য তদন্ত দল গঠন করে বিষয়টি ফাঁস করেছে।
ওই ঘটনার পর গ্রামে উত্তেজনা ছড়ায়। স্থানীয় লোকেদের অভিযোগ- শিবালয়ে শুধু ১৩০ বছরের পুরনো শিবলিঙ্গই ভাঙা হয়নি, ভাঙা হয়েছে হনুমানের মূর্তিও। অভিযুক্তরা শনি মন্দিরের মূর্তিও নিশানা করেছে। বাইরের ছোট প্রতিমাতেও হামলা হয়েছে। শুধু তাই নয়, গ্রামের বেসরকারি স্কুলের ঠিক সামনে নির্মিত দুর্গা মন্দিরেও প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে। এখানে ভগবান হনুমানের মূর্তি ভাঙা হয়েছে। মন্দিরে ভগবান সাঁইয়ের মূর্তিও হাতুড়ি দিয়ে ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। গ্রামের গোরক্ষনাথ মন্দিরেও ভাঙচুর করা হয় এবং কিছু মূর্তি মাঠে ফেলে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
এসএসপি শ্লোক কুমার বলেন, বড়াল গ্রামের ৪ জন যুবককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে, তারপর তারা ঘটনাটি প্রকাশ করেছে এবং তাদের কাছ থেকে আলামত উদ্ধার করা হয়েছে। যার ফরেনসিক তদন্ত করা হবে যাতে প্রমাণ মিলে যায়।
পুলিশের এসপি সিটি সুরেন্দ্র নাথ তিওয়ারি বলেন, বড়াল গ্রামে ৪টি মন্দিরের প্রায় এক ডজন মূর্তি ভাঙচুর করা হয়েছিল। এ নিয়ে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো অবিলম্বে অভিযুক্তদের গ্রেফতার ও মন্দিরের নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবি জানায়। ওই ঘটনার পর এসএসপি শ্লোক কুমার এবং ডিএম সিপি সিং ঘটনাস্থলে গিয়ে লোকজনকে শান্ত করেন এবং গ্রামবাসীদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেন। গ্রামে উত্তেজনা এড়াতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। মন্দিরে মূর্তি ভাঙার খবর পাওয়ার পর অভিযুক্তদের খোঁজ করা হচ্ছিল।
এদিকে, ওই ঘটনার পর ‘হিন্দু অ্যাকশন আর্মি’র সভাপতি অমিত তোমর বলেন, গ্রামে ১০০ বছরের বেশি পুরনো মন্দিরও রয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে ভক্তরা পুজো দিতে গেলে চারটি মন্দিরে ভাঙা প্রতিমা দেখে হতবাক হয়ে যান। এরপরই ঘটনাস্থলে ভিড় জমায় গ্রামবাসী ও হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের কর্মীরা।
ক্ষুব্ধ হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের কর্মীরা মন্দিরে মূর্তি পুনঃস্থাপন এবং সমাজবিরোধীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবিতে তোলপাড় সৃষ্টি করে। পুলিশ দুর্বৃত্তদের গ্রেফতার করে জেলে পাঠানোর আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়। অবশেষে মূর্তি ভাঙার মাস্টারমাইন্ড হরিশ শর্মাসহ ৪ অভিযুক্তকে গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে ওই ঘটনার কিনারা করতে সমর্থ হয়েছে পুলিশ।#
পার্সটুডে/এমএএইচ/জিএআর/৯