ইরানে কোনো সন্ত্রাসীর দায়মুক্তি নেই, সে জার্মানির সমর্থনপুষ্ট হোক আর নাই হোক: আরাকচি
ইরানি বংশোদ্ভূত জার্মান নাগরিক ও একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর রিংলিডার জামশিদ শারমাহদের মৃত্যুদণ্ড এবং এ বিষয়ে জার্মানির প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়্যেদ আব্বাস আরাকচি বলেছেন, ইরানে কোনো সন্ত্রাসীর দায়মুক্তি নেই, জার্মানির সমর্থন থাকলেই সন্ত্রাসী দায়মুক্তি পেতে পারে না। তিনি আরও বলেন, কোনো ব্যক্তির একটি জার্মান পাসপোর্ট থাকলেই সে দায়মুক্তি বা আইনের ঊর্ধ্বে থাকার ক্ষমতা পেয়ে যায় না।
আমেরিকা-ভিত্তিক ইরানবিরোধী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী তোন্দারের রিংলিডার শারমাহদের মৃত্যুদণ্ড সোমবার কার্যকর করা হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে জার্মানি মঙ্গলবার তেহরান থেকে নিজের রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করে এবং বার্লিনে নিযুক্ত ইরানি চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্সকে নিজের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলবে করে।
আব্বাস আরাকচি গতকাল (মঙ্গলবার) নিজের এক্স পেজে দেয়া এক পোস্টে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে লিখেছেন, বার্লিন মানবাধিকার রক্ষা করার যে দাবি করে তা নিয়ে জার্মানির জনগণই এখন হাসিঠাট্টা করে। তিনি বলেন, জার্মানি সমর্থন জানালেও ইরানে কোনো সন্ত্রাসী দায়মুক্তি পায় না।
ইরানে রাজতন্ত্র ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে তোন্দার নামক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী তৈরি করে ইরানে বেশ কয়েকটি নাশকতামূলক তৎপরতা চালিয়েছিল এটি'র রিংলিডার জামশিদ শারমাহদ। তাকে গত বছর মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল ইরানের একটি আদালত। তেহরানের প্রসিকিউটর-জেনারেলের দপ্তর থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে ইরানের শত শত মানুষকে হতাহত করার অপরাধে সোমবার সকালে শারমাহদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
জামশিদ শারমাহদ জার্মানির নাগরিকত্ব গ্রহণ করলেও বিগত বহু বছর যাবত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছিল। তার নির্দেশ ও পরিকল্পনায় ইরানে বিগত বছরগুলো বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়।
এসব হামলার মধ্যে ২০০৮ সালে ইরানের দক্ষিণাঞ্চলীয় শিরাজ নগরীর একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে চালানো হামলাটি ছিল অন্যতম। ওই অনুষ্ঠানে তোন্দার সন্ত্রাসীদের হামলায় পাঁচ নারী ও এক শিশুসহ ১৪ জন নিহত ও শতাধিক ব্যক্তি আহত হন।
ইরানের গোয়েন্দা মন্ত্রণালয় ২০২০ সালের আগস্ট মাসে জামশিদ শারমাহদকে আটক করার কথা ঘোষণা করে। তাকে ইরানের বাইরে থেকে আটক করে ইরানে নিয়ে আসা হয়। ৬৮ বছর বয়সি এই সন্ত্রাসী নেতার বিরুদ্ধে ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিতে গোয়েন্দাবৃত্তির কাজে আমেরিকাকে সহযোগিতা করার অভিযোগও প্রমাণিত হয়েছে।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জার্মানি সম্পর্কে আরও বলেছেন, তার দেশের জনগণ আজও ভুলে যায়নি জার্মানি কীভাবে ইরাকের আগ্রাসী শাসক সাদ্দামকে রাসায়নিক অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করেছিল, যে অস্ত্র দিয়ে হাজার হাজার ইরানিকে হত্যা করা হয়েছে। আরাকচি বলেন, এই মুহূর্তেও জার্মানি গাজার নিরীহ নারী ও শিশুদের হত্যা করার জন্য বিধ্বংসী সব অস্ত্র দিয়ে ইসরাইলকে সহযোগিতা করছে। #
পার্সটুডে/এসএ/৩০
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।