সংসদে মহিলা সংরক্ষণ বিল পাস; বিলের বিরুদ্ধে ভোট দিল ওয়াইসি'র দল
ভারতীয় সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভায় মহিলা সংরক্ষণ বিল পাস হয়েছে। গতকাল (বুধবার) সন্ধ্যায় গোপন ভোটাভুটিতে কেন্দ্রীয় সরকারের আনা বিলটির পক্ষে ৪৫৪ জন এমপি ভোট দিয়েছেন।
বিলে সংশোধন চেয়ে বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন মাত্র ২ জন। বিপুল গরিষ্ঠতায় বিল পাসের জন্য রাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী লোকসভার এমপিদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
সর্বভারতীয় মজলিশ-ই-ইত্তেহাদুল মুসলেমিন (মিম) প্রধান ব্যারিস্টার আসাদউদ্দিন ওয়াইসি এমপি এবং তার দলের ইমতিয়াজ জলিল এমপি লোকসভায় মহিলা সংরক্ষণ বিলের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন। এই দুই সংসদ সদস্য মহিলা সংরক্ষণ বিলের(নারী শক্তি বন্দন অধিনিয়ম) বিপক্ষে ছিলেন।
কসভায় বিলটি পাস হওয়ার পরে ওয়াইসি গণমাধ্যমকে বলেন, বিলের বিরোধিতা করার কারণ হল ‘ওবিসি’দের (অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি) জন্য কোনও সংরক্ষণ নেই। যারা আমাদের জনসংখ্যার ৫০ শতাংশের বেশি লোকসভায় তাদের অংশ মাত্র ২২ শতাংশ। আমরা মুসলিম মহিলাদের জন্য একটি সংশোধনীও দিয়েছিলাম, কারণ তাদেরও প্রতিনিধিত্ব করা উচিত। তারা যেন লোকসভা ও রাজ্য বিধানসভায় সুযোগ পায়। তারা প্রতিনিধিত্ব না পেলে কী লাভ? ভারতে জনসংখ্যার ৭ শতাংশ মুসলিম মহিলা এবং লোকসভায় তাদের প্রতিনিধিত্ব মাত্র ০.৭ শতাংশ। তিনি বলেন, আমরা বিলের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছি যাতে তারা জানতে পারে যে দু’জন এমপি ছিলেন যারা ওবিসি এবং মুসলিম নারীদের অন্তর্ভুক্তির জন্য লড়াই করেছিল বলেও মন্তব্য করেন ‘মিম’ প্রধান ব্যারিস্টার আসাদউদ্দিন ওয়াইসি এমপি।
গতকাল (বুধবার) আট ঘণ্টা আলোচনার পর সন্ধ্যায় লোকসভায় পাস হয় মহিলা সংরক্ষণ বিল। এই বিলে সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভা ও রাজ্য বিধানসভাগুলোতে মহিলাদের জন্য ৩৩ শতাংশ সংরক্ষণের বিধান রাখা হয়েছে। এটি হল ১২৮তম সংবিধান সংশোধনী বিল।
এ সম্পর্কে আজ (বৃহস্পতিবার) পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কোলকাতার সুরেন্দ্রনাথ উইমেন কলেজের বিশিষ্ট অধ্যাপিকা ড. আফরোজা খাতুন রেডিও তেহরানকে বলেন, ‘আমরা সকলেই জানি যে দল এটা করছে তাদের অভিপ্রায় কী। এখন সামনে নির্বাচন থাকায় তারা ইউনিফর্ম সিভিল কোড (ইউসিসি), মহিলা সংরক্ষণ বিল ইত্যাদিকে সামনে ঝুলিয়ে দিচ্ছে। আসলে কিছুই হয়নি। কবে আসন পুনর্বিন্যাস হবে, সংখ্যা বাড়বে তখন মহিলাদের সংরক্ষণ হবে। দ্বিতীয়ত, যারা পিছিয়ে থাকে তাদের অবশ্যই সংরক্ষণ দরকার।’
মুসলিম মহিলাদের সংরক্ষণ প্রসঙ্গে অধ্যাপিকা ড. আফরোজা খাতুন বলেন, মুসলিম মহিলা সংসদে গেলেই যে সম্প্রদায়ের মুখ হয়ে কথা বলবেন, সব সময় তেমনটা নয়। আবার বলবেন না ভেবে নিয়ে তাদের জন্য আমরা সংরক্ষণ চাইবো না তাও নয়। সংরক্ষণ পেলে আমরা নিশ্চয়ই কেউ না কেউ তার সম্প্রদায়ের সেখানে সে প্রতিনিধিত্ব করবে। প্রত্যেকটা সম্প্রদায়ের নিজস্ব কথা আছে, সমস্যা আছে, নিজেদের ভাষা আছে, সেটার জন্য তাদেরকে সেই জায়গাটা দেওয়া অবশ্যই দরকার বলেও সুরেন্দ্রনাথ কলেজের বিশিষ্ট অধ্যাপিকা ও সমাজকর্মী ড. আফরোজা খাতুন মন্তব্য করেন। #
পার্সটুডে/এমএএইচ/২১
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।