কেন্দ্রীয় সরকার বাংলার মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে: অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়
পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেসের জাতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এমপি বাংলার মানুষের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সরকার যুদ্ধ ঘোষণা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন।
তিনি আজ (সোমবার) বিকেলে দিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখার সময়ে ওই মন্তব্য করেন। বিভিন্ন খাতে বাংলার বকেয়া পাওনা অর্থ আদায়ের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে দিল্লিতে ধর্না-অবস্থান-মিছিল করছে তৃণমূল। আজ দুপুর থেকে শুরু হয়েছে ২/৩ অক্টোবর দিল্লির ওই কর্মসূচি। তৃণমূলের অভিযোগ- কেন্দ্রীয় সরকার ধারবাহিকভাবে বাংলার প্রতি বঞ্চনা করে যাচ্ছে এবং বেআইনিভাবে বাংলার মানুষের প্রাপ্য টাকা আটকে রেখেছে। সেজন্য অবিলম্বে কেন্দ্রীয় সরকারকে বাংলার পাওনা টাকা দিতে হবে। আজ দিল্লিতে ওই ইস্যুতে এক প্রতিবাদ মিছিলে ‘মোদী হটাও দেশ বাঁচাও’, ‘বিজেপি হটাও দেশ বাঁচাও’ ইত্যাদি শ্লোগান দিয়েছেন তৃণমূল নেতা-কর্মী-সমর্থকরা।
তৃণমূল নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আজ বিকেলে দিল্লিতে কেন্দ্রীয় সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ‘২০২১ থেকে ২০২৩ সাল প্রায় দু’বছর হলো ২৪ মাসে ১০ পয়সাও বাংলার টাকা ছাড়েনি! আমরা এই দিল্লির মাটিতে দাঁড়িয়ে আজকে ২ অক্টোবর গান্ধী জয়ন্তীর দিনে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে যাচ্ছি আপনার মাটিতে দাঁড়িয়ে যে, আগামী দিনে জোরদার লড়াই হবে প্রস্তুত থাকুন।
মাঠ আপনার, ময়দান আপনার, রেফারি আপনার কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস আপনার মাটিতে দাঁড়িয়ে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে যাচ্ছে যে, আগামীদিন আপনার ক্ষমতা কত, আর মানুষের ক্ষমতা কত! গণতন্ত্রে শেষ কথা কোনো শাসক বলে না, শেষ কথা বলে সাধারণ জনগণ। এটা আগামীদিনে মানুষ প্রমাণ করবে। এদের গায়ে জ্বালা, এরা বাংলার মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। প্রতিশোধ নিতে চায়। প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনীতি করে বাংলার মানুষকে ভাতে মারতে চায়। কিন্তু বাংলার মানুষ ছাড়বে না।’বাংলায় বারবার বিজেপি পরাজিত হয় বলে কেন্দ্রীয় সরকার কেবল বাংলার টাকা বন্ধ করে রেখেছে, কিন্তু বাংলার মানুষ আত্মসমর্পণ করবে না বলেও মন্তব্য করেন তৃণমূল নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এমপি।
এদিকে, আজ দিল্লিতে রাজঘাট চত্বরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখার সময়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা দিল্লি পুলিশ বার বার বাঁশি বাজিয়ে এলাকা খালি করে দিতে বলে। একইসঙ্গে তৃণমূলের অন্য নেতা-কর্মীরা কার্যত পুলিশের তাড়া খেয়ে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হন। চরম বিশৃঙ্খলার মধ্যে এক পর্যায়ে সংবাদ সম্মেলন বন্ধ করে চলে যান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে, তৃণমূলের রাজ্যসভার (সংসদের উচ্চকক্ষ) এমপি শান্তনু সেন এমপির দামি মোবাইল ফোন খোয়া গেছে। আশেপাশে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তিনি সেটি পাননি। পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী সুজিত বসু হারিয়েছেন তার জুতো। তিনি জুতো খুলে ধর্না-অবস্থানে বসেছিলেন। পরে তিনি সেই জুতো আর খুঁজে পাননি। মন্ত্রীর অভিযোগ- দিল্লি পুলিশ তার পা মাড়িয়ে দিয়েছে। সব মিলিয়ে এসব ইস্যুতে কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকার ও রাজ্যে ক্ষমতাসীন তৃণমূল সরকারের মধ্যে দ্বন্দ্ব প্রকট হয়ে উঠেছে।#
পার্সটুডে/এমএএইচ/জিএআর/ ২