নভেম্বর ৩০, ২০২৩ ১৭:৪৫ Asia/Dhaka
  • ব্যারিস্টার আসাদউদ্দিন ওয়াইসি এমপি
    ব্যারিস্টার আসাদউদ্দিন ওয়াইসি এমপি

ভারতের তেলেঙ্গানা রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যা ৫ টা পর্যন্ত ৬৩.৯৪ শতাংশ ভোট পড়েছে। তেলেঙ্গানাসহ ৫ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণা হবে আগামী ৩ ডিসেম্বর।

১১৯ বিধানসভা আসন সমন্বিত তেলেঙ্গানায় ক্ষমতা লাভের জন্য ৬০ টি আসনের প্রয়োজন। তেলেঙ্গানার প্রায় ২৯টি আসনে মুসলিম ভোটারদের হার ১৫ শতাংশের বেশি। অন্যদিকে, হায়দরাবাদের সাতটি আসনে মুসলিম জনসংখ্যা ৫০ শতাংশের কাছাকাছি এবং এই আসনগুলো রয়েছে ব্যারিস্টার আসাদউদ্দিন ওয়াইসি এমপি’র দল মজলিশ-ই-ইত্তেহাদুল মুসলেমিন বা ‘মিম’-এর দখলে। এবারের নির্বাচনে  অবশ্য ‘মিম’ দল মোট ৯ টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। অন্য আসনগুলোতে তারা ক্ষমতাসীন ‘বিআরএস’কে সমর্থন করেছে। সব মিলিয়ে ৪৫টি আসনে মুসলিম ভোটারদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। এভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠের সংখ্যা স্পর্শ করতে মুসলিম ভোটারদের সমর্থন প্রয়োজন।

কংগ্রেস, বিআরএস এবং ‘মিম’, মুসলিম ভোট পেতে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।  এবারের নির্বাচনে তেলেঙ্গানায় ক্ষমতাসীন ‘বিআরএস’ মুসলিমদের জন্য বিশেষ সুবিধা দেওয়ার কথা বলেছে। অন্যদিকে, বিরোধী কংগ্রেস দলও মুসলিমদের জন্য একাধিক ঘোষণা করেছে। তেলেঙ্গানার বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী ও ‘বিআরএস’ প্রধান কে চন্দ্রশেখর রাও (কেসিআর) মুসলিমদের জন্য একটি পৃথক আইটি পার্ক তৈরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এর বিরোধিতা করেছে বিজেপি এবং কংগ্রেস।

কেসিআর বলেছেন, তার সরকার আবার ক্ষমতায় এলে তিনি হায়দরাবাদের কাছে পাহাড়ী শরীফে মুসলমানদের জন্য একটি পৃথক আইটি পার্ক তৈরি করবেন। কংগ্রেসকে টার্গেট করে তিনি তাদের বিরুদ্ধে মুসলিমদেরকে শুধুমাত্র একটি ভোট ব্যাংক হিসাবে বিবেচনা করা এবং তাদের উন্নয়নের জন্য কিছুই না করার অভিযোগ করেছেন। বিআরএস প্রধানের দাবি- তার সরকার ১০ বছরে সংখ্যালঘুদের উন্নয়নের জন্য ১২ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করেছে, যেখানে কংগ্রেস তার ১০ বছরের শাসনামলে মাত্র ২ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করেছে। কেসিআর মুসলিমদের জন্য বিভিন্ন কল্যাণমূলক প্রকল্প নিয়ে এসেছেন। শাদি মুবারক যোজনার অধীনে, একটি দরিদ্র মুসলিম পরিবার বিয়ের খরচের জন্য ১ লাখ টাকা সহায়তা পায়। কেসিআর শুধুমাত্র মুসলমানদের জন্য ২৯৬টি আবাসিক স্কুল ও কলেজ খুলেছে। ২০১৪ সালে কেসিআর রাজ্যে মুসলমানদের জন্য ১২ শতাংশ সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ২০১৭ সালে তার সরকার মুসলমানদের জন্য সংরক্ষণ বাড়ানোর জন্য একটি বিলও পাস করে কিন্তু তা বাস্তবায়ন করা যায়নি। বর্তমানে (শিক্ষা ও চাকরিতে) মুসলমানদের ৪ শতাংশ সংরক্ষণ রয়েছে।

মুসলমানদের আকৃষ্ট করার জন্য, কেসিআর আগেই একজন মুসলিম নেতা মাহমুদ আলীকে তার সরকারে উপমুখ্যমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ দিয়েছেন। মাহমুদ আলী বলেছেন, ২০১৪ সাল থেকে তেলেঙ্গানায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বা দাঙ্গার কোনো ঘটনা ঘটেনি। ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে তেলেঙ্গানা বিধানসভায় ৮ জন সংখ্যালঘু বিধায়ক ছিলেন। দু’বারই মজলিশ-ই-ইত্তেহাদুল মুসলেমিন (মিম) থেকে ৭ জন এবং বিআরএস থেকে ১ জন বিধায়ক নির্বাচিত হন।

অন্যদিকে, সম্প্রতি তেলেঙ্গানার হুজুরাবাদে একটি নির্বাচনী সমাবেশে বক্তব্য রাখার সময়ে হিন্দুত্ববাদী বিজেপির সিনিয়র নেতা ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, ‘ওয়াইসির ভয়ে তিনি (মুখ্যমন্ত্রী কেসিআর) সংখ্যালঘুদের চার শতাংশ সংরক্ষণ দিয়েছেন এবং আমরা চার শতাংশ মুসলিম সংরক্ষণ সমাপ্ত করে দেবো। এই সুবিধা দেওয়া হবে ওবিসি, এসসি এবং এসটি সম্প্রদায়কে। কেসিআর ক্ষমতায় ফিরুক কেউ চায় না বলেও দাবি করেছেন বিজেপি নেতা অমিত শাহ। #  

পার্সটুডে/এমএএইচ/এমবিএ/৩০    

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ