জুলাই ০১, ২০২৪ ১১:১১ Asia/Dhaka
  •  ইরানের চাবাহার বন্দর, এশিয়ার প্রাণকেন্দ্রে যেতে ভারতের সংযোগ-মহাসড়ক

পার্সটুডে- ইরানের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় চাবাহার বন্দর ব্যবহার করার লক্ষ্যে ভারত ইরানের সঙ্গে স্বাক্ষরিত একটি চুক্তি নিয়ে নতুন করে এগিয়ে যাওয়ার যে উদ্যোগ নিয়েছে তাতে বোঝা যায়, বৃহৎ এই দেশটি ইরানের সঙ্গে সাক্ষরিত চুক্তিটির মাধ্যমে এশিয়ার প্রাণকেন্দ্রে প্রবেশ করতে চায়।

ওমান সাগরের তীরে অবস্থিত ইরানের চাবাহার বন্দর ইরান ও ভারতের মধ্যে সহযোগিতার নতুন দ্বার উন্মোচন করতে যাচ্ছে। পার্সটুডের রিপোর্ট অনুসারে, সাগরের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগবিহীন মধ্য এশিয়ার দেশগুলোতে আফগানিস্তান হয়ে পণ্য পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রে ইরানের চাবাহার বন্দর ভারতের জন্য একটি নজিরবিহীন সম্ভাবনা তৈরি করেছে। মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্যিক লেনদেন সম্প্রসারিত করার লক্ষ্যে ভারত ২০১৬ সালে ইরান ও আফগানিস্তানের সঙ্গে যে চুক্তি সই করেছিল তাকে একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ বলে ধরে নেয়া যায়।

পরবর্তীতে ওই চুক্তি বাস্তবায়নের বিষয়টি ভারতের পিছিয়ে যাওয়ার কারণে অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। তবে সেই ভারতই আবার চুক্তিটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে যদিও এটিকে বাস্তবায়নের আগে হালনাগাদ করে নিতে চায় নয়াদিল্লি। এ সম্পর্কে ইরানের বার্তা সংস্থা ‘একতেসাদ নিউজ’ জানাচ্ছে: চুক্তিতে ভারতের ব্যবহার উপযোগী করার জন্য চাবাহার বন্দর উন্নয়নের কাজ ভারতই নিজস্ব অর্থায়নে করে নিতে সম্মত হয়েছিল। তবে প্রাথমিক চুক্তিতে এ কাজে বাজেট ধরা হয়েছিল আট কোটি ৫০ লাখ ডলার, যা এবার ১২ কোটি ডলারে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। 

চাবাহার বন্দর যে শুধু মধ্য এশিয়ার দেশগুলোকে ভারতের সঙ্গে সংযুক্ত করবে তাই নয়, সেইসঙ্গে নর্থ-সাউথ করিডোরের মাধ্যমে রাশিয়ার সঙ্গেও ভারতের পণ্য পরিবহনের তুলনামূলক সংক্ষিপ্ত যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হবে। 

নর্থ-সাউথ করিডোর ভারত, রাশিয়া ও ইরানের সঙ্গে আজারবাইজান, আর্মেনিয়া, কাজাখস্তান, কিরঘিজিস্তান, তাজিকিস্তান, তুরস্ক, ইউক্রেন, সিরিয়া, বেলারুশ এবং ওমানসহ অন্যান্য দেশের সহযোগিতার পথ প্রশস্ত করেছে।  এই বহুমুখী করিডোরটি হবে মূলত রেল ও সমুদ্র পথের পরিবহনকে সমন্বয় করার মাধ্যমে যা হবে চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ এবং চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোরের চেয়ে বেশি সাশ্রয়ী। 
পর্যবেক্ষকদের মতে, এই অংশীদারিত্বের কৌশলগত ভিত্তিগুলি  ভারত ও ইরানের পারস্পরিক ভূ-রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক স্বার্থের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত যা উভয় দেশের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। 

অনেক বিশ্লেষক মনে করেন যে, ইরান ও ভারতের মধ্যে সক্রিয় সহযোগিতা দু’দেশের সীমিত স্বার্থের ঊর্ধ্বে একটি দূরদর্শী পরিকল্পনা যা কেবল উভয় দেশকেই উপকৃত করবে না বরং আঞ্চলিক উন্নয়ন ও সহযোগিতার বৃহত্তর স্তরকে শক্তিশালী ভিত্তির ওপর দাঁড় করাবে। 

প্রকৃতপক্ষে, ইরানের চাবাহার বন্দর ইরান ও ভারতের জন্য একটি পথপ্রদর্শক নক্ষত্রের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে যা ভূ-রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে একটি আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করবে। অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, চাবাহার বন্দর এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক গতিশীলতাকে পাল্টে দিতে পারে।#

পার্সটুডে/এমএমআই/১

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ