জুলাই ০২, ২০২৪ ১৪:২৬ Asia/Dhaka
  • নিউ ইয়র্কে ঠুনকো অজুহাতে এশীয় কিশোরদের হত্যা করছে পুলিশ; শাস্তির বালাই নেই

পার্সটুডে- যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে এশীয় বংশোদ্ভূত ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরকে গুলি করে হত্যা করেছে পুলিশ। নিয়াহ মাওবে নামের ওই কিশোরের হাতে একটি খেলনা বন্দুক ছিল। বলা হচ্ছে ঐ কিশোরের অপরাধ হলো- সে পুলিশের দিকে খেলনা অস্ত্রটি তাক করেছিল। 

পার্সটুডে জানিয়েছে, এশীয় বংশোদ্ভূত নিয়াহ মাওবে-কে হত্যার একটি ভিডিও বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এতে দেখা গেছে, নিউইয়র্ক পুলিশের একজন সদস্য ঐ কিশোরতে গুলি করে হত্যা করছেন। হত্যার আগে কিশোর নিয়াহ মাওবে-কে মাটিতে ফেলে মারধর করা হয় এবং এরপর তাকে বুকে গুলি করা হয়। যে পুলিশ গুলি চালিয়েছেন, তার নাম প্যাট্রিক হুসনে। ঘটনার পর শাস্তি না দিয়ে ঘাতক পুলিশ ও তার দুই সহযোগীকে প্রশাসনিক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। এই সময় তিনি বেতনও পাবেন।

স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, নিয়াহ মাওবে-কে গুলি করে হত্যার ঘটনাটি ঘটেছে স্থানীয় সময় শুক্রবার রাত ১০টার পর ম্যানহাটান থেকে প্রায় ২৪০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত ইউটিকা শহরে। সেখানে আগের দিন একটি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছিল। পুলিশ দাবি করছে, আগের দিনের ডাকাতির ঘটনায় সন্দেহভাজন কিশোরের যে বর্ণনা, তাদের কাছে ছিল তার সঙ্গে নিহত কিশোরের মিল পাওয়া যায়। তার সঙ্গে অন্য আরেকজনও ছিল। পরে তাদের কাছে অস্ত্র আছে কি না নিশ্চিত হতে দুজনকে তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। 

যুক্তরাষ্ট্রে সাধারণ মানুষের মধ্যে যেমন বন্দুক সহিংসতা বেড়েছে তেমনি পুলিশের পক্ষ থেকে সহিংস আচরণের মাত্রাও অনেক বেড়ে গেছে। আফ্রিকান ও এশীয় বংশোদ্ভূতদের ক্ষেত্রে তারা কোনো ধরণের ছাড় দিচ্ছে না, সুযোগ পেলেই নানা অজুহাতে বিদেশি বংশোদ্ভূতদের হত্যা করছে।

গত মার্চে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তরুণ উইন রোজারিও-কে তার বাসায় গুলি করে হত্যা করে।  উইনের মা বলেছেন, ‘আমার ছেলে পুলিশের দিকে তেড়ে যায়নি। আমাকে জড়িয়ে ধরে শুধু বলছিল ডোন্ট টাচ মি। এটুকুই শুধু বলেছে। পুলিশ ঢুকেই গুলি করেছে। আমার সামনেই আমার ছেলেকে গুলি করে মেরে ফেলেছে তারা।' পুলিশের দৃষ্টিতে, উইন রোজারিও'র অপরাধ হলো, তার হাতে কাঁচি ছিল।

বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার প্রশান্ত ভূষণ বড়ুয়া মার্কিন মানবাধিকার প্রসঙ্গে বলেছেন, এর আগে আমরা দেখেছি জর্জ ফ্লয়েডকে কীভাবে হত্যা করা হয়েছে। মানবাধিকার সর্বজনীন। এর কোনো রং থাকতে পারে না। মানবাধিকারে আফ্রিকা, ইউরোপ বা বাংলাদেশ হতে পারে না। পৃথিবীর যেখানেই মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথা উঠে যুক্তরাষ্ট্র সেখানে হস্তক্ষেপ করে। অথচ মার্কিন পুলিশের হাতে একের পর এক মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। আমরা অনুরোধ করছি মানবাধিকার নিয়ে ব্যবসা করবেন না, রাজনীতি করবেন না।

তিনি আরও বলেন, 'সারা বিশ্ব মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথা উঠলে তারা (যুক্তরাষ্ট্র) ঝাঁপিয়ে পড়ে।  কিন্তু নিজ দেশের বেলায় কথা বলেন না, দেখেও না দেখার ভান করেন। আমরা বিশ্বাস করি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা সিলেক্টিভ হতে পারে না।'

মার্কিন সমাজে বন্দুক সহিংসতার মতো নানা সহিংসতার পেছনে মানুষের ক্রমবর্ধমান বিদ্বেষী মনোভাব ও একাকীত্বের মতো বিষয়গুলোকে দায়ী করেন অনেক বিশেষজ্ঞ।  ব্রাউন ইউনিভার্সিটির 'দ্য কস্টস অফ ওয়ার প্রজেক্ট' থেকে এটা স্পষ্ট, যুদ্ধের জন্য আট ট্রিলিয়ন ডলারেরও বেশি ব্যয় করা হয়েছে, যা আমেরিকার জনগণের জীবনমানের উন্নয়ন এবং মানুষের একাকীত্ব ও বিচ্ছিন্নতার অনুভূতি কমাতে ব্যয় করলে বড় ধরনের ইতিবাচক ফল পাওয়া সম্ভব হতো।

কিন্তু আমেরিকা যুদ্ধের পেছনে লেগে আছে। দখলদার ইসরাইলের মতো যুদ্ধবাজদের কিন্তু আমেরিকা যুদ্ধের পেছনে লেগে আছে। দখলদার ইসরাইলের মতো যুদ্ধবাজদের পেছনে অর্থ ও অস্ত্র ঢালছে।#

পার্সটুডে/এসএ/২

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে  লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ