সিপিএমের ইদের শুভেচ্ছার পোস্টে উল্লেখ নেই ঈদেরই! নেপথ্যে কি হিন্দু ভোটের সমীকরণ?
(last modified Thu, 11 Apr 2024 11:29:07 GMT )
এপ্রিল ১১, ২০২৪ ১৭:২৯ Asia/Dhaka
  • সিপিএমের ইদের শুভেচ্ছার পোস্টে উল্লেখ নেই ঈদেরই! নেপথ্যে কি হিন্দু ভোটের সমীকরণ?

ঈদের শুভেচ্ছা। অথচ উল্লেখ নেই ‘ঈদ’ কথাটারই। ফেসবুক পোস্টে ঈদের সকালে শুধু ‘উৎসবের শুভেচ্ছা’ জানাল সিপিএম। বাম নেতানেত্রীরা নিজেদের ফেসবুক পেজে আলাদা আলাদাভাবে শুভেচ্ছা জানালেও দলগতভাবে যে পোস্ট করা হয়েছে, তাতে উল্লেখ নেই ঈদের। সেটা কি সচেতন ভাবে? ভোটের অঙ্ক কষে? আলোচনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।

বুধবার রাতে দলের ফেসবুক পোস্টে ইদ উপলক্ষে রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের একটি শুভেচ্ছাবার্তা পোস্ট করা হয়। তবে সেটা ছিল মূলত সেলিমের বার্তা। বৃহস্পতিবার সকালে যে বার্তা দেওয়া হয়েছে, সেই পোস্টারে শুধু লেখা ‘উৎসবের শুভেচ্ছা’। নিচে ছোট করে উর্দুতে লেখা হয়েছে, ‘হক রুটিরুজি, জনতাই পুঁজি’। যা এ বারের ভোটে সিপিএমের স্লোগান। সচেতনভাবে ঈদ কথাটা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা হয়েছে।
তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়  বলেন, ধর্ম যার যার উৎসব সবার। বস্তুত মমতা সব ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। বামেদের ক্ষেত্রে উলটো। অন্তত প্রকাশ্যে ধর্মের ছোঁয়াচ এড়িয়ে চলারই চেষ্টা করেন কমরেডকুলের শিরোমণিরা। সেটাই দাবি দলের শীর্ষনেতা শমীক ভট্টাচার্যের। তিনি বলছেন, আমরা উৎসবকে উৎসব হিসাবেই দেখি। কোন ধর্মের উৎসব, কোন উৎসব উল্লেখ করার দরকার নেই। ব্যক্তিগত ভাবে কোনও নেতা যদি পোস্ট করেন, তাঁরা সেটা তাঁদের মতো করেই করে থাকেন।”

রাজনৈতিক মহল বলছে এর নেপথ্যে লোকসভার আগে হিন্দু ভোটের সমীকরণ কাজ করছে। সেই ২০১১ সালের পর থেকেই রাজ্যে ক্রমহ্রাসমান বাম ভোট। ঠিক সমহারে বাড়ছে বিজেপি। বামের ভোট রামে যাওয়ার যে প্রবণতা সেটাকে সম্ভবত এবার বদলাতে চাইছেন কমরেডরা। আসলে বামেদের ‘মুসলিমপ্রীতি’ নিয়ে প্রশ্ন দীর্ঘদিনের। ২০২১ সালে আইএসএফকে সঙ্গে নিয়ে জোট, তার পর ভরা ব্রিগেডের মঞ্চে আব্বাস সিদ্দিকির সঙ্গে বাম নেতাদের এক মঞ্চে ভাষণ দেওয়া, সেই অভিযোগ আরও জোরাল করেছে। বাম নেতাদের অনেকেই এখন স্বীকার করেন, একুশের নির্বাচনের আগে আইএসএফ সখ্য ভুল ছিল। যা পার্টির হিন্দু ভোটব্যাঙ্কে ধস নামিয়েছে। লোকসভার আগে সেই ভোট ফেরাতে মরিয়া সিপিএম। সম্ভবত সেকারণেই এবার ‘মুসলিম’ ছোঁয়াচ এড়িয়ে যেতে চাইছে আলিমুদ্দিন। বরং হিন্দু ভোটারদের মন পেতে শায়রা হালিমের মতো প্রার্থীদের কৃষ্ণের ছবি-সহ কার্ড বিলি করতে হচ্ছে।  যদিও প্রকাশ্যে কোনও নেতাই এই নীতি মানতে নারাজ। 

স্বাভাবিকভাবেই এ নিয়ে কটাক্ষ ছুটে এসেছে বিরোধী শিবির থেকে। তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলছেন, “এই প্যাঁচ সিপিএমের পক্ষেই সম্ভব। এগুলো রিতা ছাড়া কিছু নয়। পুজোর সময়ে বুক স্টল দেবে অথচ পুজো বলবে না। ঈদের দিন শুভেচ্ছা জানাবে, অথচ  ঈদ বলবে না। মানুষ কিন্তু সোজা কথা সোজা করতে পড়তেই পছন্দ করেন।”#

 

পার্সটুডে/এমবিএ/১১

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।