রাম মন্দির নির্মাণের জন্য মুসলিমদের এগিয়ে আসতে হবে: গিরিরাজ সিং
(last modified Sun, 02 Dec 2018 11:47:56 GMT )
ডিসেম্বর ০২, ২০১৮ ১৭:৪৭ Asia/Dhaka

ভারতের উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণের জন্য মুসলিমদের এগিয়ে আসা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বিজেপি’র সিনিয়র নেতা গিরিরাজ সিং। গতকাল (শনিবার) বিহারের গয়াতে আয়োজিত সাধু-সন্তদের এক সমাবেশে ভাষণ দেয়ার সময় তিনি এসংক্রান্ত মন্তব্য করেন।

গিরিরাজ সিং বলেন, ‘অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণের জন্য মুসলিমদের এগিয়ে আসা উচিত।’ তাঁর দাবি, ‘ধর্মের ভিত্তিতে ভারত বিভাজন হওয়ার পরে পাকিস্তানে হয় জোর করে হিন্দুদের মুসলিম করা হয়েছে, নয়তো তাঁরা সেখান থেকে পালিয়ে গেছেন। পাকিস্তানে বেছে বেছে মন্দির ধ্বংস করা হয়েছে। পাকিস্তানে হিন্দুদের দুর্দশা সত্ত্বেও ভারতে থাকা মুসলিমদেরকে নিজেদের বুকের মধ্যে রাখা হয়েছে।’ 

রাম মন্দির নির্মাণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘মুসলিম ভাইদের এ নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণের জন্য যদি তাঁরা এগিয়ে না আসেন তাহলে হিন্দুদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যাবে এবং এমনটি হলে তা দেশের জন্য ভালো হবে না।’ 

বাবরী মসজিদ ধ্বংসের দৃশ্য

গিরিরাজ সিং বলেন, ‘ভারতে মুসলিম তিন থেকে তেত্রিশ শতাংশে পৌঁছেছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও হিন্দুদের মন্দির ভারতের স্বাধীনতার ৭২ বছর পরেও অযোধ্যা, মথুরা ও কাশীতে নির্মাণ করা যায়নি। এদেশের দুর্ভাগ্য যে একশ’ কোটি হিন্দু জনসংখ্যা অধ্যুষিত দেশে একটি মন্দির নির্মাণের জন্য নেতাদের এবং আদালতের মুখাপেক্ষী হতে হচ্ছে!’

তিনি কার্যত হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘এখনও যদি অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণ না হয় তাহলে একশ’ কোটি হিন্দুদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেলে দেশের জন্য তার ফল ভালো হবে না।’

উপস্থিত সাধুদের উদ্দেশ্য গিরিরাজ সিং বলেন, ‘এখন ‘ওম শান্তি, ওম শান্তি বলার দিন শেষ হয়ে গেছে। এখন ওম ক্রান্তি (বিপ্লব) ওম ক্রান্তি বলার সময় এসে গেছে।’  

বাবরী মসজিদ-রাম জন্মভূমি বিতর্ক মামলা সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন রয়েছে। আগামী জানুয়ারিতে ওই মামলার শুনানি হওয়ার কথা আছে।

অধ্যাপক আব্দুল মাতিন

এ প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের কুচবিহার পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক আব্দুল মাতিন আজ (রোববার) রেডিও তেহরানকে বলেন, ‘এটি বিচারাধীন বিষয় হওয়ায় সুপ্রিম কোর্টকে তা আমলে নেয়া উচিত। আমার মনে হয় সুপ্রিম কোর্টের মাননীয় বিচারপতিরা এ ধরণের  মন্তব্যগুলোকে আমলে নেবেন। দ্বিতীয়ত, এটা নতুন কোনও বিষয় নয়। এখন হয়তো গিরিরাজ সিং বলছেন, তিনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। কিন্তু এর একটা দীর্ঘ ইতিহাস আছে এরা যেটা চাচ্ছে, ভারতীয় সাংবিধানিক গণতন্ত্রকে সরিয়ে দিয়ে এমন একটা সংখ্যাগরিষ্ঠের গণতন্ত্রের রূপ যেখানে বিশেষকরে সংখ্যালঘু মুসলিম বা অন্যান্য যারা সাংস্কৃতিকভাবে আলাদা। আগে যেমন মুসলিম ভোট ব্যাঙ্কের ধারণা ছিল, সেই ধারণা এখন আর নেই। ওঁরা চাচ্ছে গণতন্ত্রে সংখ্যালঘুদের যেন কোনও ভূমিকাই না থাকে। এক ধরণের এথনিক ডেমোক্রেসির দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে যেখানে মুসলিমদের ভোটেরও আর প্রয়োজন হবে না। এক্ষেত্রে শুধু বিজেপি নয়। বিজেপি, কংগ্রেস এবং তথাকথিত সেক্যুলার দলগুলো তারাও খানিকটা সাংস্কৃতিকভাবে একই রোল প্লে করে। আমি আলাদাভাবে বিজেপিকে শুধু দোষারোপ করি না। এটা একটা সাংস্কৃতিক লড়াই, আমাদেরকে এর বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিকভাবে লড়তে হবে। এই লড়াইয়ে দলিত, আদিবাসী, মুসলিম এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে শামিল করতে হবে।’#

পার্সটুডে/এমএএইচ/এআর/২

খবরসহ আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সব লেখা ফেসবুকে পেতে এখানে ক্লিক করুন এবং নোটিফিকেশনের জন্য লাইক দিন

ট্যাগ