ভারতের রহস্যময় গ্রাম কোদিনহি : যেখানে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি যমজ সন্তান জন্ম নিচ্ছে
https://parstoday.ir/bn/news/india-i70100-ভারতের_রহস্যময়_গ্রাম_কোদিনহি_যেখানে_বিশ্বের_সবচেয়ে_বেশি_যমজ_সন্তান_জন্ম_নিচ্ছে
ভারতের কেরালা রাজ্যের মাল্লাপুরম জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত কোদিনহি গ্রামে যমজ সন্তানের সংখ্যা বাড়ছে। তবে এ গ্রামটিতে কেনও এ ভাবে যমজ সন্তান জন্ম নিচ্ছে সে রহস্য আজও ভেদ করা যায় নি বলে জানিয়েছে ব্রিটেনের জনপ্রিয় বিজ্ঞান সাময়িকী নিউ সায়েন্টিস।
(last modified 2025-07-29T12:16:04+00:00 )
মে ০৪, ২০১৯ ১৮:১৬ Asia/Dhaka
  • কোদিনহি গ্রামের যমজদের কয়েকজন
    কোদিনহি গ্রামের যমজদের কয়েকজন

ভারতের কেরালা রাজ্যের মাল্লাপুরম জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত কোদিনহি গ্রামে যমজ সন্তানের সংখ্যা বাড়ছে। তবে এ গ্রামটিতে কেনও এ ভাবে যমজ সন্তান জন্ম নিচ্ছে সে রহস্য আজও ভেদ করা যায় নি বলে জানিয়েছে ব্রিটেনের জনপ্রিয় বিজ্ঞান সাময়িকী নিউ সায়েন্টিস।

 কোদিনহি গ্রামের একটি ঢোকার রাস্তায় দৃষ্টি আকর্ষণীয় বিজ্ঞপ্তি

আজ(শনিবার) প্রকাশিত এ সাময়িকীর একটি নিবন্ধে বলা হয়েছে, ১১ হাজার অধিবাসীর গ্রামটিতে এক হাজার যমজ রয়েছে  আর এ সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।

কালিকট থেকে ৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং মাল্লাপুরম থেকে ৩০ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত গ্রামটি। দক্ষিণ ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. লরেনা মাদরিগান বলেন, গ্রামটিকে পৃথিবীর বাইরের অঞ্চল বলে মনে হচ্ছে। ভারতে সাধারণ ভাবে প্রতি একশ জনের মধ্যে একটি যমজ সন্তান জন্মগ্রহণ করে। সে হিসেবে কোদিনহি গ্রামকে বহির্জাগতিক বলে মনে হওয়ায় অবাক হওয়ার কিছু নেই।

২০০৯ সালে প্রথম গ্রামটি বিশ্বের নজরে আসে। কিন্তু এ সত্ত্বেও আজও গ্রামটিতে অধিক হারে যমজ সন্তান জন্ম নেয়ার কোনও ব্যাখ্যা খুঁজে পাওয়া যায় নি। গ্রামটিতে যমজ সন্তান জন্ম নেয়ার পেছনে কোনও জেনেটিক বা পরিবেশগত কারণ রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখার জন্য গ্রামটি সফর করেছেন লরেনা মাদরিগান এবং তার গবেষণা দল।

মাদরিগানের নেতৃত্বাধীন গবেষক দলটি যে সব পরিবারে যমজ সন্তান জন্ম নিয়েছে তাদের সঙ্গে আলাপ করেছেন। তাদের পরিবার বৃক্ষ বা ফ্যামিলি ট্রি তৈরি করেছেন। এ ভাবে গ্রামের ১৮০০ পরিবারের তথ্য সেই ১৮৬০'এর দশক অবধি সংগ্রহ করেছেন তারা। কিন্তু তারপরও গ্রামটিতে যমজ সন্তান হওয়ার কোনও যুক্তিভিত্তিক কারণ খুঁজে পায় নি গবেষক দলটি।

অবশ্য, তাদের এ সফর বৃথা গেছে সে কথাও পুরোপুরি বলার জো নেই। এ গ্রামে যমজ সন্তানের জন্ম হওয়া নিয়ে প্রচলিত অনেকগুলো বক্তব্যের কোনও ভিত্তি খুঁজে পান নি তারা।  আন্ত-পরিবার বিবাহকে এ ভাবে যমজ হওয়ার পেছনে বড় কারণ বলে একটি কথা প্রচলিত ছিল। তার কোনও সত্যতা পান নি গবেষক দল।

এ ছাড়া, অতীতে কোনও মহামারীর প্রকোপ দেখা দিয়েছিল গ্রামটিতে। তা থেকে বংশরক্ষার জন্য এ ভাবে যমজ সন্তান জন্মগ্রহণ করার প্রবণতা তৈরি হয়েছে বলেও একটি কথা প্রচলিত আছে। অতীতের সংবাদ মাধ্যমে এ ধরণের কথা উঠেছিল। গবেষক দলটি সে কথারও কোনও সত্যতা খুঁজে পান নি।

ড. লরেনা মাদরিগান

গ্রামবাসীরা যে সব স্থানে বসবাস করে তার সঙ্গে যমজ সন্তান জন্মগ্রহণের একটি যোগসাজশ আছে বলেও কেউ কেউ মনে করেন। কিন্তু এ ধারণারও কোনও ভিত্তি খুঁজে পাওয়া যায় নি।

গবেষক দলটি দেখতে পেয়েছেন যে ১৯৬০ সালে থেকে এ গ্রামে যমজ সন্তান জন্মগ্রহণের প্রবণতা প্রথম দেখা দেয়। এরপর থেকে এ প্রবণতা ক্রমে বাড়ছেই। এ গবেষক দলটি তাদের গবেষণার ফলাফল ওহিওর ক্লিভল্যান্ডে অনুষ্ঠিত আমেরিকার এসোসিয়েশন অব ফিজিক্যাল অ্যানথ্রপলজির সম্মেলনে উপস্থাপন করেছেন।

অবশ্য, লরেনা মাদরিগান মনে করেন, অতীতে এ গ্রামের কোনও কোনও অধিবাসী হয়ত বিশেষ কোনও রাসায়নিক উপাদানের সংস্পর্শে এসেছিলেন। এতে তাদের ডিএনএ'তে রদবদল ঘটেছে এবং এই পরিবর্তিত ডিএনএ সন্তানদের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে। গবেষক দলটি গ্রাম থেকে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করেছে। এ ধারণার সত্যিই কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে কিনা তা ভবিষ্যতে তা অনুসন্ধান করে দেখবে।

পার্সটুডে/মূসা রেজা/৪